শীতে হলুদ রাজ্যের মুগ্ধতায় গাঁদা ফুল

  • ময়মনসিংহ প্রতিনিধি | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: জানুয়ারি ১, ২০২৫, ০৪:৪৭ পিএম
শীতে হলুদ রাজ্যের মুগ্ধতায় গাঁদা ফুল

ছবি : প্রতিনিধি

ময়মনসিংহ: শীত মানেই গাঁদা ফুল। এই গাঁদা ফুলে গাছ কারো বাড়িতে থাকে না এমন খুজে পাওয়া দুস্কর। তাই সৌখিন মানুষের পছন্দের ফুলের তালিকায় সবসময় থাকে গাঁদা ফুল।

কবি, শিল্পী, সাহিত্যিক সহ অনেকেই লিখেছেন গাঁধা ফুলকে নিয়ে গান কবিতা ছড়া গল্প। তাইত জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম গান লিখেছেন, "হলুদ গাঁদার ফুল, রাঙা পলাশ ফুল/ এনে দে নইলে/ বাঁধবো না বাঁধবো না চুল”। 

শীতের সকালে প্রকৃতি যখন শীতের চাদর মুড়িয়ে থাকে তখন বাগানে উঁকি দেয় গাঁদা ফুল। হলুদ গাঁদা, কমলা গাঁদা, সোনালী গাঁদা, বেগুনি গাঁদা, গাঢ় লাল রঙের গাঁদা। গ্রামের বিভিন্ন বাড়ির উঠানে, এমনকি শহরে বাড়ির ছাদে বা বারান্দার টবে- এমন বাহারি রংয়ের গাঁদা চোখে পড়ে।

গাঁদা বা গন্ধা (গেন্ধা) একটি সুগন্ধী ফুল যা সর্বত্র সহজে হয়ে থাকে এবং গৃহসজ্জায় ব্যবহৃত হয়। গাঁদার ইংরেজি নাম Mariegold Flower. এটি Compositae পরিবারের একটি সদস্য। বৈজ্ঞানিক নাম Tagetes erecta। গাঁদা ফুল বিভিন্ন জাত ও রঙের হয়। এ ফুল সাধারণত উজ্জ্বল হলুদ ও কমলা হলুদ রঙের হয়ে থাকে। আমাদের দেশে চাইনিজ গাঁদা, রাজ গাঁদা, আফ্রিকান ও ফরাসি জাতের গাঁদা বেশি চাষ হয়। রঙ ভেদে গাঁদার জাত হচ্ছে- হলুদ, লাল, কমলা, গাঢ় খয়েরি, লাল হলুদের মিশ্রণ ইত্যাদি। আফ্রিকান জাতের গাঁদা গাছ সোজা ও লম্বা এবং ৩৫-১০০ সেন্টিমিটার (সেমি) লম্বা হয়।ফুল কমলা, হলুদ ও গাঢ় খয়েরি রঙের ছিটা দাগযুক্ত হয়। ফরাসি গাঁদা গাছ খাটো ও ঝোপালো। ১৫-৩০ সেমি লম্বা হয়। ফুল আকারে ছোট ও রঙ লাল। কমলা গাঁদার গাছ খুব শক্ত। ফুল গাঢ় কমলা। শাখা-প্রশাখা বেশি হওয়ায় ফুল বেশি ধরে। ফুলের আকার ৪ থেকে ৫ সেমি। অনেক দিন পর্যন্ত ফুল ধরে। প্রতি গাছে শতাধীক ফুল পাওয়া যায়।

গাঁধা ফুল বিবাহ, জন্মদিন, বিবাহবার্ষিকী, গৃহসজ্জা, বিজয় দিবস, স্বাধীনতা দিবস, শহীদ দিবস, পূজাসহ সব বিভিন্ন উৎসব-অনুষ্ঠান ও গৃহসজ্জায় এর ব্যাপক ব্যবহার ফুলটিকে ভিন্নমাত্রা দিয়েছে। এক সময় বাড়ির উঠান বা ছাদের উপরে টবের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল ফুলের উৎপাদন। কিন্তু বর্তমানে সৌখিন উৎপাদকের গন্ডি পেরিয়ে ফুলের ব্যাপক চাষাবাদ হচ্ছে। শুধু আবাদই নয় বাংলাদেশের ফুল এখন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রপ্তানিও হচ্ছে। ১৯৯০ এর দশক থেকে গাঁদা বাংলাদেশে বাণিজ্যিকভাবে চাষাবাদ শুরু হয়।

ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার  সালটিয়া ইউনিয়নের রৌহা গ্রামের মোস্তাফিজুর রহমান প্রায় তিন একর জমিতে গড়ে তুলেছে 'চির সবুজ ' নামে নার্সারী। এখানে রয়েছে বিভিন্ন জাতের গা্ধা ফুলের  চারা। বিভিন্ন জাতের গাঁদা ফুল রয়েছে   যেমন- ইনকা, গিনি গোল্ড, ইয়েলা সুপ্রিম, গোল্ডস্মিথ, ম্যান ইন দ্য মুন, মেরিয়েটা, হারমনি, লিজন অব অনার ইত্যাদি। এছাড়াও  দেশীয় সাদা গাঁদা, জাম্বো গাঁদা, হাইব্রিড ও রক্ত বা চাইনিজ গাঁদা ফুলের চারা ও ফুল পাওয়া যায়। চারা ও ফুল বিক্রি করে তিনি অনেক লাভবান। পার্শ্ববর্তী জেলা ও উপজেলা থেকে ক্রেতারা ফুল ও ফুলের চারা ক্রয় করে। শীতকালে ৫/৬ লক্ষ টাকার ফুল গাছ বিক্রি করে। 

এসআই

Link copied!