আশুলিয়া: বেশ কিছুদিন ধরে উত্তরের হিমেল হাওয়া আর দিনভর ঘন কুয়াশায় আশুলিয়ায় ঝেকে বসেছে শীত। আর এ শীতের প্রকোপ থেকে একটু উষ্ণ পেতে সব শ্রেণীর মানুষের লক্ষ্য শীতের কাপড়ের দোকান। এরই মধ্যে আশুলিয়ার শীতের কাপড়ের দোকানগুলোতে শীতের পোশাক ক্রেতাদের উপচে পড়া ভীর লক্ষ করা গেছে। বিশেষ করে সাধারণ মানুষজন শীতের প্রকোপ থেকে বাঁচতে ফুটপাতের দোকানে ভীর জমাচ্ছেন শীতের কাপড় কিনতে।
তবে অল্প আয়ের ও খেটে খাওয়া মানুষের ফুটপাতের দোকানগুলো ভরসা হলেও ধনী-গরীব সব শ্রেণির লোকজন ঝুঁকছেন ফুটপাতের দোকানের দিকে। শুধু তাই নয় বিভিন্ন শপিং মলেও শীতের বাহারি কাপড়ে সাজানো হয়েছে। তবে শপিং মলের তুলনায় ফুটপাতের দোকান গুলোতেই মিলছে চাহিদা মত শীতের রকমারি পোশাক। তুলনামূলক দাম কম হওয়াতেই ফুটপাতেই ভীর করছেন ক্রেতারা।
সরেজমিনে আশুলিয়ার বিভিন্ন এলাকার ফুটপাত ঘুরে দেখা গেছে, আশুলিয়ার শ্রীপুর, জিরানী বাজার, বলিভদ্র বাজার, বাইপাইল, পল্লীবিদ্যুৎ ও জাগড়া এলাকার ফুটপাতগুলোতে প্রচুর পরিমাণে রং বেরংয়ের শীতের কাপড় দিয়ে পসরা সাজিয়েছেন দোকানীরা। অল্প আয়ের মানুষ থেকে শুরু করে সব শ্রেণির মানুষজন ঝুঁকছেন শীতের পোশাক কিনতে। মিলছে শিশু থেকে শুরু করে সব বয়সী নারী পুরুষের শীতের রকমারি পোশাক।
ফুটপাতের দোকানগুলোতে ২০ টাকা থেকে শুরু করে হাজার টাকা মূল্যের পোশাক রয়েছে। রয়েছে বিদেশ থেকে আমদানীকৃত পুরনো পোশাকও। সেই সাথে রয়েছে কম্বল ও পুরাতন কমফোর্টারের দোকান। ফুটপাতের দোকানগুলোতে নতুন কাপড়ের দাম তুলনামূলকভাবে কম হওয়ায় সহজেই ক্রেতারা এখানে আসে কাপড় কিনতে। ফুটপাতে দোকান বসানোর ফলে একদিকে যেমন অল্প আয়ের মানুষের উপকার হচ্ছে অন্যদিকে মহাসড়কের পাশের এ দোকানগুলোর কারণে সড়কে যানজটেরও সৃষ্টি হচ্ছে। আবার ঝুঁকিও রয়েছে। যেকোন সময় ঘটতে পারে দূর্ঘটনা। হতে পারে প্রাণহানির মত ঘটনা।
আশুলিয়ার বলিভদ্র বাজার ফুটপাতে পোশাক কিনতে এসেছেন শিমুলিয়ার আমছের আলী। তিনি শীতের জন্য গরম কাপড় কিনতে এসেছেন। তিনি জানান, এখানে অল্প দামে ভালো ভালো পোশাক কিনতে পাওয়া যায়। নিজের জন্য একটি হুডি কিনেছি মাত্র ২০০/টাকা দিয়ে। অথচ শপিংমলের কোন বড় দোকান থেকে এটি কিনতে গেলে প্রায় ৫০০ টাকার মত লেগে যেত। আমার ছোট মেয়ের জন্য ১১০ টাকা দিয়ে পায়জামা ও একটি জামা কিনেছি এবং একটি পুরাতন স্যুয়েটার কিনেছি মাত্র ৫০ টাকা দিয়ে।
আশুলিয়ার জিরানী বাজার এলাকায় ফুটপাত থেকে একটি ফুল হাতা গেঞ্জি কিনেছেন আব্দুল বারেক। তিনি জানান, এই গেঞ্জিটি বড় কোন দোকান থেকে কিনতে গেলে প্রায় থেকে ৫০০ টাকা লেগে যেত। কিন্তু এটি ফুটপাতের এই দোকান থেকে কিনেছি মাত্র ১২০ টাকা দিয়ে।
আশুলিয়ার অন্যান্য ফুটপাতের দোকানগুরো ঘুরে একই চিত্র দেখা গেছে। এছাড়া বেশ কয়েকজনের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ফুটপাতের দোকানগুলোতে শীতের গরম কাপড়গুলো অল্প দামে ক্রয় করা যায়। সেই সাথে অল্প আয়ের মানুষগুলোর জন্য ফুটপাতের কাপড় অল্প দামে ক্রয় করা যায় বলে তাদের জন্য উপকারী হয়েছে বলে দাবী বিভিন্ন জনের।
ফুটপাতে শীতের পোশাক বিক্রেতা আলী হায়দার, রহিম উদ্দিন, রাকিব, জাহাঙ্গীরসহ একাধিক বিক্রেতার সাথে কথা বলে জানা যায়, ফুটপাতের দোকানগুলো মূলত দুপুরের পর খুলে বসতে হয়। চলে রাত ১০টা পর্যন্ত। ফুটপাতে দোকানদারীতে খরচ খুবই কম। তবে বিক্রি অনেক বেশী। অল্প দামে লোকজন ভাল ভাল পোশাক পাচ্ছে বিধায় ফুটপাতের দোকানগুলোতে বেচা-বিক্রি অন্যান্য দোকানের থেকে বেশী। শীতের তীব্রতা বাড়ার সাথে সাথে তাদের বিক্রি আরো বেড়ে যাবে বলেও জানান তারা।
সোনালীনিউজ/এ আই/এসআই
আপনার মতামত লিখুন :