ঝিনাইদহ: ঝিনাইদহের বিভিন্ন উপজেলায় মানহীন ৬৫টি বেসরকারী হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডয়াগনোষ্টিক সেন্টার বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ইতিমধ্যে মহেশপুর উপজেলায় বেশ কিছু ক্লিনিক বন্ধ করা হয়েছে। খুব দ্রুত জেলা শহরসহ সারা জেলায় অভিযান চালানো হবে বলে সংশ্লিষ্ট সুত্রগুলো জানিয়েছেন।
এ জন্য জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ও জেলা পুলিশকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। সিভিল সার্জন ও স্বাস্থ্য বিভাগের এ যাবৎকালের সবচেয়ে সাহসী পদক্ষেপে বিভিন্ন মহল থেকে সাধুবাদ জানানো হয়েছে। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ ঝিনাইদহের এ সব বেসরকারী হাসপাতাল ও ডায়াগনোষ্টিক সেন্টার অসহায় মানুষের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলে আসছে। অনেকে ক্লিনিক ব্যবসা করে রাতারাতি আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হয়েছেন। কতিপয় চিকিৎসক মানহীন এ সব ক্লিনিকে অপারেশ করে মানুষ হত্যায় মেতে উঠেছিল। বিশেষ করে মহেশপুর এলাকার ক্লিনিকগুলোতে অহরহ এহেন অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছিল।
সিভিল সার্জন দপ্তর থেকে জানা গেছে, গত ৮ ডিসেম্বর এ সংক্রান্ত একটি চিঠি (যারা স্মারক নং সিএসঝি/শা-১/২০২০/২৪৮৬) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে দেওয়া হয়েছে। সেখানে বেসরকারী হাসপাতাল ও ডায়াগনোষ্টিক সেন্টারের তালিকা রয়েছে।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, এস ক্লিনিকের মান একেবারেই তলানীতে। স্বাস্থ্যবিধির বালাই নেই। নেই চিকিৎসার সুষ্ঠ পরিবেশ। ক্লিনিকগুলোতে সর্বক্ষন ডাক্তার ও নার্স থাকেন না। সিভিল সার্জন অফিস থেকে তদন্ত করতে গিয়ে এসব অসংগতি ধরা পড়ে।
বন্ধের তালিকায় যেসব বেসরকারী হাসপাতাল রয়েছে তার মধ্যে জেলা শহরের হামদহ এলাকার ঝিনাইদহ নার্সিং হোম, প্রাইম হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনোষ্টিক সেন্টার, হাবিবা ক্লিনিক, ল্যাব এইড হাসপাতাল, সৃজনী হাসপাতাল, ডাকবাংলা নারায়নপুর ত্রীমোহনীর ইসলামী প্রাইভেট হাসপাতাল, বৈডাঙ্গা প্রাইভেট হাসপাতাল, হরিণাকুন্ডুর আলহেরা ক্লিনিক, আনোয়ারা প্রাইভেট হাসপাতাল, ভাই ভাই প্রাইভেট হাসপাতাল, কালীগঞ্জের মডার্ন সার্জিক্যাল প্রাইভেট ক্লিনিক, সুমন প্রাইভেট হাসপাতাল, ন্যাশনাল প্রাইভেট হাসপাতাল, নিউ ইবনে সিনা প্রাইভেট হাসপাতাল, সেবা প্রাইভেট হাসপাতাল, মহেশপুর উপজেলার গ্রামীন প্রাইভেট হাসপাতাল, পাতিবিলা মহেশপুর প্রাইভেট হাসপাতাল, ফাতেমা ক্লিনিক, সীমা ক্লিনিক, সুমন ক্লিনিক, ভৈরবা বাজারের মোমেনা প্রাইভেট হাসপাতাল, জিন্নানগরের নিউ মডার্ন ক্লিনিক, জিন্নানগর ক্লিনিক, নেপার মোড়ের পিয়ারলেস প্রাইভেট হাসপাতাল, বাকোসপোতা বাজারের মা ও শিশু প্রাইভেট হাসপাতাল, একই বাজারের একতা ক্লিনিক, গুড়দাহ বাজারের মায়ের দোয়া প্রাইভেট হাসপাতাল, পদ্দপুকুর মোড়ের মহিউদ্দীন প্রাইভেট হাসপাতাল, কোটচাঁদপুরের সিটি প্রাইভেট হাসপাতাল, একতা প্রাইভেট হাসপাতাল, মাহবুবা জেনারেল হাসপাতাল, শৈলকুপার নুরজাহান প্রাইভেট হাসপাতাল, হাটফাজিলপুরের মুগ্ধ ডায়াগনোষ্টিক সেন্টার, ঝিনাইদহ শহরের শাপলা ডায়াগনোষ্টিক সেন্টার, হামদহ ন্যাশনাল ডায়াগনোষ্টিক সেন্টার, ডাক্তার সুজন ল্যাব স্ক্যান, জননী ডায়াগনোষ্টিক সেন্টার, বিশ্বাস ডায়াগনোষ্টিক সেন্টার, আরাপপুরের ছন্দা ডায়াগনোষ্টিক সেন্টার, আমেনা মেমোরিয়াল ডায়াগনোষ্টিক সেন্টার, ডাকবাংলা বাজারের ইসলামী প্রাইভেট হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনোষ্টিক সেন্টার, শৈলকুপার নিউ পপুলাল ডায়াগনোষ্টিক সেন্টার, শহীদা ডায়াগনোষ্টিক সেন্টার, কেয়ার ডায়াগনোষ্টিক সেন্টার, কবিরপুরের স্বপ্না ডায়াগনোষ্টিক সেন্টার, রাব্বি ডায়াগনোষ্টিক সেন্টার, লাঙ্গলবাঁধের পদ্মা ডায়াগনোষ্টিক সেন্টার, আলসেফা ডায়াগনোষ্টিক সেন্টার, শান্তনুর ডায়াগনোষ্টিক সেন্টার, হাটফাজিলপুরের আপন ডায়াগনোষ্টিক সেন্টার, কবিরপুরের সিটি ডায়াগনোষ্টিক সেন্টার, হরিণাকুন্ডুর আনোয়ারা ডায়াগনোষ্টিক সেন্টার, নিপুর ডায়াগনোষ্টিক সেন্টার, কালীগঞ্জের ক্যানোলা ডায়াগনোষ্টিক সেন্টার, নোভা ডায়াগনোষ্টিক সেন্টার, প্রাইম ডায়াগনোষ্টিক সেন্টার, মধুগঞ্জ বাজারের উপমা প্যাথলজি, লং লাইফ ডায়াগনোষ্টিক সেন্টার, ল্যাব কেয়ার ডায়াগনোষ্টিক সেন্টার, ইকো ডায়াগনোষ্টিক সেন্টার, মহেশপুরের সনো ডায়াগনোষ্টিক সেন্টার, মাষ্টার ডায়াগনোষ্টিক সেন্টার, কোটচাঁদপুরের মেডিল্যাব মেডিকেল সার্ভিসেস ও ইউনিক ডায়াগনোষ্টিক সেন্টার।
এ ব্যাপারে ঝিনাইদহ সিভিল সার্জন ডাঃ সেলিনা বেগম জানান, সরকারের নির্দেশে এসব তালিকা করা হয়েছে। এখানে কোন স্বজনপ্রীতি বা পক্ষপাতিত্ব নেই। তিনি জানান, অচিরেই ম্যাজিষ্ট্রেট ও পুলিশের সমন্বয়ে অভিযান চালিয়ে তালিকা ভুক্ত এ সব ক্লিনিক বন্ধ করে দেওয়া হবে।
সোনালীনিউজ/এটি/এসআই
আপনার মতামত লিখুন :