নেত্রকোনা : ‘প্রেমের স্বীকৃতি’ চেয়ে প্রেমিকের বাড়িতে অনশন করার সময়ে শরীরে পেট্রল ঢেলে আগুন দেওয়া তরুণী মারা গেছেন। নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার মোছা. হাবিবা আক্তারের সঙ্গে এই ঘটনাটি ঘটে। তিনি উপজেলার চেংজানা গ্রামের বাসিন্দা।
ঘটনার ১০ দিন পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার (২ অক্টোবর) সকালে তার মৃত্যু হয়। তিনি ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটটে ভর্তি ছিলেন।
কেন্দুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী শাহ নেওয়াজ বলেন, ‘নিহতের বড় ভাই মো. মঞ্জিল হক আজ বেলা ১১টার দিকে তার বোনের মৃত্যুর বিষয়টি অবগত করেছেন। ঢাকায় নিহতের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হবে। নিহতের ভাইয়ের করা মামলাটি তদন্তাধীন।’
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, সান্দিকোনা ইউনিয়নের পাইমাস্কা গ্রামের দুলাল মিয়ার ছেলে জামাল মিয়ার সঙ্গে হাবিবা আক্তারের বিয়ে হয়। বিয়ের কিছুদিনের মধ্যে কলহ দেখা দিলে বিষয়টি মামলা-মোকদ্দমা পর্যন্ত গড়ায়। মামলা হওয়ার পর দেশের বাইরে চলে যান জামাল মিয়া। এ মামলায় হাবিবাকে সহায়তা করেন আটিগ্রাম গ্রামের দেলোয়ার ওরফে দিলু মিয়া। মামলায় সহায়তার জেরে দিলুর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে হাবিবার।
দিলু মিয়া পাঁচ সন্তানের জনক। গত কোরবানির ঈদের পর থেকে একটি হত্যা মামলার আসামি হিসেবে পলাতক ছিলেন তিনি। কয়েকদিন আগে হাইকোর্ট থেকে আগাম জামিন নিয়ে বাড়িতে এসেছেন। তার বাড়ি ফেরার খবর পেয়ে গত ২২ সেপ্টেম্বর ওই নারী দুপুরে দিলু মিয়ার বাড়িতে যান।
আরও পড়ুন - মাদকের পার্টি থেকে আটক শাহরুখপুত্র
পরদিন ২৩ সেপ্টেম্বর সেখানে নিজের শরীরে পেট্রল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন হাবিবা। পরে বাড়ির লোকজন আগুন নিভিয়ে তাকে কেন্দুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে সেখান থেকে ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়।
এদিকে, দগ্ধের ঘটনার পর ২৬ সেপ্টেম্বর উপজেলার আটিগ্রামের মো. দিলু মিয়াকে (৪০) প্রধান ও আরও চারজনকে আসামি করে ধর্ষণ ও হত্যার চেষ্টা অভিযোগ এনে নিহতের বড় ভাই বাদী হয়ে মামলা করেন।
ওই মামলার অন্য আসামিরা হলেন- একই উপজেলার পাইসামকা গ্রামে কামাল মিয়া (৩২), দুলাল মিয়া (৫৫), স্বপন মিয়া (৪৫) ও তাজু মিয়া (৪৫)।
আরও পড়ুন - ফ্রি ফায়ার পাবজি রেখে দাড়িয়াবান্ধায় ফিরেছে তরুণরা
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, স্ত্রী-সন্তান থাকা সত্ত্বেও কৌশলে ওই নারীর ফোন নম্বর সংগ্রহের পরে তাকে বিয়ের আশ্বাস দিয়ে প্রেমের সম্পর্ক স্থাপন করেন প্রধান আসামি দিলু। এর ধারাবাহিকতায় গত ছয় মাসের মধ্যে তাকে একাধিকবার ধর্ষণ করেন তিনি। একপর্যায়ে ওই নারীর সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন দিলু।
অভিযোগে আরও বলা হয়, অন্যান্য অভিযুক্তদের সহায়তায় ওই নারীকে হত্যার উদ্দেশ্যে বোতলে করে আনা পেট্রল তার শরীরে ঢেলে দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেন অভিযুক্ত কামাল। এতে হাবিবার মুখমণ্ডলসহ শরীরের বিভিন্ন স্থান আগুনে ঝলসে যায়।
সোনালীনিউজ/এসএন
আপনার মতামত লিখুন :