সাতক্ষীরা : দেশের দক্ষিণের জেলা সাতক্ষীরায় এবার ৫৮১টি মণ্ডপে উদযাপিত হচ্ছে শারদীয় দুর্গোৎসব। তবে এর ভেতরে টাইটানিক জাহাজের আদলে তৈরি পূজামণ্ডপ নজর কাড়ছে সকলের। দেবহাটা উপজেলার দক্ষিণ পারুলিয়া জেলে পাড়ায় ভিন্নধর্মী এই মণ্ডপে ভিড় করছেন ভক্ত-দর্শনার্থীরা।
দর্শনার্থী স্কুল শিক্ষক দেবাশিস বসু বলেন, ‘জেলার মধ্যে এটি একমাত্র ব্যতিক্রমী পূজা মণ্ডপ। এখানে ১০৮ বছর আগের ইতিহাসের টাইটানিক জাহাজের আদলে প্যান্ডেল ও মণ্ডপ গড়ে তোলা হয়েছে। সে কারণে পরিবার নিয়ে চলে আসছি দেখতে। বাচ্চারা খুবই মজা করছে। বর্ণাঢ্য আলোকসজ্জা দর্শনার্থীদের নজর কেড়েছে।’
জেলিয়াপাড়া মন্দির কমিটির সভাপতি কার্তিক মিস্ত্রি বলেন, ‘করোনা মহামারির কারণে গেল বছর আমরা পূজায় বড় কোনো আয়োজন করতে পারিনি। এ বছর ভক্তদের নজর কাড়তে এই ব্যতিক্রম আয়োজন করা হয়েছে। প্রতিদিন এখানে প্রচুর ভক্ত ও দর্শনার্থীদের আগমন হচ্ছে।’
দেবহাটা উপজেলার দক্ষিণ পারুলিয়া জেলিয়াপাড়া সার্বজনীন মন্দির কমিটির সাধারণ সম্পাদক দিলিপ সরকার বলেন, ‘আমাদের এখানে প্রতি বছর নতুন আঙ্গিকে দুর্গাপূজা হয়ে থাকে। তারই ধারাবাহিকতায় এবার টাইটানিক জাহাজের আদলে নির্মিত হয়েছে মণ্ডপ। এটি তৈরি করতে প্রায় এক মাস সময় লেগেছে।’
আরও পড়ুন - একই উঠানে হচ্ছে নামাজ এবং পূজো
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের প্রতিবছরই ব্যতিক্রম কিছু করার চেষ্টা থাকে। এ বছরও প্রচুর মানুষ আমাদের পূজার আয়োজনে শামিল হয়েছেন। জেলা শহর থেকে মাত্র ২৫ কিলোমিটার দূরে হওয়ায় অনেকেই সহজেই চলে আসতে পারছেন। শুধু শহরের মানুষ নয় খুলনা, যশোরসহ আশপাশের আরও বিভিন্ন এলাকার মানুষ এটি দেখতে আসছেন। করোনা মহামারির কথা মাথায় রেখে মাস্ক ও হ্যান্ডস্যানিটাইজারের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার বিষয়ে গুরুত্বা আরোপ করা হয়েছে। প্যান্ডেল, ডিজিটাল প্রতিমা, বর্ণাঢ্য আলোকসজ্জার ব্যবস্থা করা হয়েছে।’
সাতক্ষীরা জেলা মন্দির কমিটির সভাপতি বিশ্বনাথ ঘোষ জানান, জেলায় এবার ৫৮১টি মণ্ডপে শান্তিপূর্ণভাবে পূজা উদযাপন হচ্ছে। প্রতিটি মন্দিরে প্রশাসনের পাশাপাশি প্রতিটি মণ্ডপে স্বেচ্ছাসেবকরা দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়াও গুরুত্বপূর্ণ মন্দিরগুলোর তালিকা করে সেখানে বাড়তি নিরাপত্তার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
আরও পড়ুন - মৃত্যুঞ্জয়ের তরমুজ থেকে গুড় তৈরি
দুর্গাপূজায় নিরাপত্তার বিষয়ে সাতক্ষীরা পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান জানান, পূজা উপলক্ষে যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা রোধে সবাই প্রস্তুত রয়েছে। সনাতন ধর্মাবলম্বী মানুষ যেন নির্বিঘ্নে তাদের উৎসব পালন করতে পারে সে বিষয়ে সব প্রস্তুতি রয়েছে। এছাড়া দেশের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে র্যাব ও গোয়েন্দা সংস্থাও সার্বক্ষণিক নিরাপত্তায় দায়িত্বে নিয়োজিত আছে বলেও জানান তিনি।
সোনালীনিউজ/এসএন
আপনার মতামত লিখুন :