ঠাকুরগাঁওঃ না, এটি ভারতের জনপ্রিয় রিয়েলিটি শো বিগবসের কোন বিজ্ঞাপন নয়। কিংবা বিগবস খ্যাত বলিউডের ভাইজান সালমান খানেরও কোন বিজ্ঞাপন নয়। এটি আলোড়ন সৃষ্টিকারী ঠাকুরগাঁও জেলার হরিপুর উপজেলার ডাঙ্গীপাড়া ইউনিয়নের সীমন্তবর্তী তালতলা গ্রামের বাসিন্দা আফিল উদ্দীনের ১৭’শ কেজি ওজনের ষাড় বিগবসের একটি সংবাদ। বিগবস লম্বায় ১০ ফিট ও উচ্চতায় ৫ফিট ১০ ইঞ্চি, ওজন ১৭’শ কেজি।
নাম বিগবস, আকার আকৃতি-ওজনেও আসলেই সে বিগবস। গত বছর বিগবসের ওজন ছিল প্রায় সাড়ে ১৫’শ কেজি। দাম রাখা হয়েছিল ৩০ লাখ টাকা। বছর ব্যবধানে ওজন দাঁড়িয়েছে প্রায় ১৭’শ কেজি বা ৪৩ মণে। ওজনে বাড়লেও গরুটি আগের দামেই বিক্রি করবেন মালিক। সঙ্গে ১৬০ সিসির পালসার বা অ্যাপাচি আরটিআর মোটরসাইকেল উপহার হিসেবে দিবেন তিনি। আলোচিত বিগবসকে এক পলক দেখতে স্থানীয়রাসহ অনেক দূর-দুরান্ত থেকে ছুটে আসছেন শতশত মানুষ। এতে গত বছরের মতো এবারও আলোড়ন সৃষ্টি করেছে ষাড়টি ও তার লালন-পালনকারী মালিক আফিল উদ্দিন।
দীর্ঘ ছয় বছর ধরে বিদেশি জাতের একটি ষাড় শখের বসে লালন পালন করেছেন আফিল উদ্দীন। সে এখন বিশাল আকৃতির হয়ে দাড়িয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, ছয় বছর আগে মাত্র ৯০ দিন বয়স ও ২৭ কেজি ওজনের গরুটিকে কেনেন আফিল উদ্দিন। তখন থেকে প্রাকৃতিক খাবার ও ফলমূল খাওয়ায় ষাড়টিকে বিশাল আকৃতির করেছেন তিনি। গত বছর গরুটির দাম ২২ লাখ উঠলেও বিক্রি করেননি তিনি। এবার আশা করছেন এবার কাঙ্খিত দামে বিক্রি করতে পারবেন।
আফিল উদ্দিনের প্রতিবেশিরা জানান, নিজের সন্তানের মতো যত্ন করে গরুটিকে বড় করেছেন আফিল ও তার স্ত্রী। তাদের দেখে আমাদের এখানকার অনেকে এভাবে গরু লালন পালন করার পরিকল্পনা করছে।
আল আমীন নামে এক দর্শনার্থী বলেন, আগে এতো বড় গরু কখনও দেখিনি। এটি হয়তো পৃথিবীর সবচেয়ে বড় গরু বলে মনে হচ্ছে আমার কাছে। এবার ন্যায্য ও কাঙ্খিত মূল্যে গরুটি বিক্রি হবে প্রত্যাশা করছি।
আফিল উদ্দিন বলেন, গরুকে মোটাতাজা করার জন্য কোনো প্রকার ওষুধ ব্যবহার করা হয়নি। খেসারির ডাল, ভুষি, ছোলাবুট, মসুর ডাল ও খুদি খাওয়ানো হয়েছে। এছাড়াও ফল হিসেবে আপেল, কমলা, আঙ্গুর, কলা ও ডাব খাওয়ানো হয়। এতে সাড়া দিনে প্রায় ২ হাজার ৫০০ টাকার খাবার খাওয়ানো হয় বিগবসকে।
তিনি আরও বলেন, বিগবসকে কোরবানির আশায় এতো বড় করেছি। যাতে কোরবানির জন্য ক্রেতারা ক্রয় করতে পারেন সে জন্য এবার আর দাম বাড়াইনি। গত বছর ৩০ লাখ টাকাই দাম রেখেছিলাম ও ক্রেতাকে উপহার হিসেবে ১৬০ সিসির পালসার অথবা অ্যাপাচি আরটিআর মোটরসাইকেল দিতে চেয়েছিলাম। এবারও তাই দেবো।
জেলার প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, আমার জানামতে এমন বড় আকৃতির বা ওজনের দ্বিতীয় গরু জেলায় দ্বিতীয়টি নেই। আফিল উদ্দিন এই ষাড়টিকে খুব যত্নসহকারে মাংসের জন্য লালন-পালন করেছেন। গরুটিকে কোনো খারাপ মেডিসিন প্রয়োগ করা হয়নি ও গরুটিকে নিয়মিত পরিদর্শন করে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
সোনালীনিউজ/এম
আপনার মতামত লিখুন :