ডেঙ্গু জ্বরে কাতরাচ্ছে ছেলে, বাবার হাউমাউ কান্না

  • লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: জুলাই ৬, ২০২৩, ১১:২০ এএম
ডেঙ্গু জ্বরে কাতরাচ্ছে ছেলে, বাবার হাউমাউ কান্না

লক্ষ্মীপুর: ৬ষ্ঠ শ্রেণির পড়ুয়া মো. মারুফ (১৩) ৫ দিন ধরে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালের বেডে শুয়ে কাতরাচ্ছে। পাশে বসা বাবা সোলায়মান হাউমাউ করে কান্না করছে। মুঠোফোনে নিকটতম আত্মীয়ের সাথে কথা বলছে। আমার মারুফ ভালো নেই। তার অনেক পেটব্যথা। ডাক্তার বলছে মারুফকে ঢাকা নিতে। এখন আমি কি করবো? আমার দুই চোখের সামনে মারুফ খুব কষ্ট পেতেছে। আমার সহ্য হচ্ছে না, আল্লাহ তুমি আমার সন্তানকে সুস্থ করে দাও। 

বুধবার (৫ জুলাই) রাতে লক্ষ্মীপুর জেলা সদর হাসপাতালের ২য় তলা মেডিসিন বিভাগে গেলে দৃষ্টি পড়ে একটি কান্নার শব্দ। পাশে দাড়িয়ে মারুফের চিকিৎসা পত্র দেখছেন আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. আনোয়ার হোসেন। আর দ্রুত মারুফকে ঢাকা নেওয়ার জন্য পরামর্শ দিয়েছেন এ চিকিৎসক। 

কথা হলে হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার আনোয়ার হোসেন বলেন, হঠাৎ করে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বেড়ে গেছে। চলতি মাসে ১১ জন রোগী ভর্তি হয়েছে। বর্তমানে ৭ জন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। জুন মাসে ২৪ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি ছিলো। 

স্কুলছাত্র মারুফ কমলনগর উপজেলার দক্ষিণ-পশ্চিম চর জাঙ্গালিয়া এসএসসি উচ্চ বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণীর শিক্ষার্থী ও চর জাঙ্গালিয়া গ্রামের দিনমজুর সোলোয়মানের ছেলে।

মারুফের বাবা সোলায়মান বলেন, শনিবারে প্রচুর জ্বর নিয়ে ছেলেকে হাসপাতালে ভর্তি করি। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর চিকিৎসক মারুফের ডেঙ্গু জ্বর সনাক্ত করে। চিকিৎসা নেওয়ার পর থেকে মারুফ আস্তে-আস্তে সুস্থ হয়ে উঠে। হঠাৎ বুধবার দুপুর ১২টার পর থেকে পেটব্যথা বলে অনেক কান্না করছে। কিছুইতে তার কান্না থামছে না। অন্য রোগী ও তাদের স্বজনরা মারুফের কান্না শুনে নিরব হয়ে তাকিয়ে আছে। মনে হয় মারুফ সকলের আপনজন। 

একই ওয়ার্ডে ৩ দিন পূর্বে ডেঙ্গু জ্বর নিয়ে ভর্তি হন রায়পুর উপজেলার দক্ষিণ চরবংশি গ্রামের জাহের আলী বকশির ছেলে জয়নাল আবেদীন। সেই আগের চেয়ে একটু ভালো আছে। 

সদর উপজেলার নুরুল্লাপুর গ্রামের তামিম নামে ১০ম শ্রেণীর এক শিক্ষার্থী ও ডেঙ্গু জ্বর নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছেন।

শাহিনুর বেগম নামে এক নারী জানান, ৩ দিন আগে তার ছেলে শাওনকে নিয়ে সদর হাসপাতালে ডেঙ্গু জ্বর নিয়ে ভর্তি হন। বর্তমানে ছেলে অনেকটা ভালোর দিকে।

লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) আনোয়ার হোসেন সোনালীনিউজকে জানান, এখন ভরপুর বর্ষা। আমাদের ঘরবাড়ি ও অফিসগুলোর আঙ্গিনায়, যেসব স্থানে পানি জমে থাকে। সেগুলো দ্রুত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করতে হবে ও রাতের বেলা বিশেষ করে ঘুমানো আগে মশারী ভালোভাবে টানানো পরামর্শ দেন। তাহলে এডিস মশা কামড় থেকে রক্ষা মিলবে। 

সোনালীনিউজ/এম

Link copied!