কুড়িগ্রামে গ্রীষ্মকালীন বেবী তরমুজের বাম্পার ফলন 

  • জাহাঙ্গীর আলম, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: জুন ১, ২০২৪, ০৭:১৯ পিএম
কুড়িগ্রামে গ্রীষ্মকালীন বেবী তরমুজের বাম্পার ফলন 

কুড়িগ্রাম: কুড়িগ্রামে পলিথিন দিয়ে পরীক্ষামূলকভাবে উঁচু জমিতে গ্রীষ্মকালীন বেবী তরমুজের বাম্পার ফলন হয়েছে। মাত্র দুই মাসের মধ্যে ২০ হাজার টাকা খরচ করে ৫০-৬০ হাজার টাকা আয় করতে পেরে খুশি তরমুজ চাষি।

জেলার রাজারহাট উপজেলার ছিনাই ইউনিয়নের রামকাজ্জি এলাকার কৃষক লাল মিয়ার স্ত্রী আনোয়ারা বেগম নিজেই এই তরমুজ চাষ করে সাঁড়া ফেলে দিয়েছেন। স্বামীর অনুপস্থিতে আনোয়ারা বেগম তার ১২ শতক জমিতে এবার ব্লাক ডায়মন্ড কালারের বেবী তরমুজ চাষ করে সাড়া ফেলে দিয়েছেন।

আনোয়ারা বেগম বলেন, স্থানীয় বেসরকারি সংগঠন আরডিআরএস বাংলাদেশ থেকে তিনি জানতে পারেন স্বল্প সময়ে মালচিং পদ্ধতিতে সুস্বাদু তরমুজ চাষে তারা আর্থিকভাবে সহযোগিতা করছেন। তাদের কাছে প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ নিয়ে এই প্রথম এলাকায় বেবী তরমুজ চাষে উদ্বুদ্ধ হই। জমি তৈরি, সার ও বীজ কেনায় আরডিআরএস থেকে তিনি ৫ হাজার টাকা সহায়তা পান। এরপর ফেন্সিং তৈরি করতে তার নিজের খরচ হয় প্রায় ১৫ হাজার টাকা। সবমিলিয়ে ২৫ হাজার টাকা খরচ করে তিনি তরমুজ চাষ করে সাফল্যের মুখ দেখছেন। প্রায় দুই মাসের মধ্যে প্রায় পাঁচশো’র ওপর তরমুজ গাছ বেড়ে উঠছে।

কৃষক লাল মিয়া বলেন, আমার স্ত্রী তরমুজ চাষে সহযোগিতা করেছে। আমি বাইরে ছিলাম। বাড়িতে এসে কালো সোনা রঙের তরমুজ বৃদ্ধি হতে দেখে খুব আনন্দ পেয়েছি। পাইকারদের সঙ্গে কথা হয়েছে তারা ৩৫-৪০ টাকা কেজি দরে তরমুজ কিনতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। আমার জমিতে প্রায় ৫০০-৬০০ তরমুজ আছে। ৪-৫ কেজি করে ওজন হবে। আমি ৫০-৬০ হাজার টাকা বিক্রি করতে পারবো। এতে খরচ মিটিয়ে ৩৫-৪০ হাজার টাকার মতো আয় হবে। পলিথিন দিয়ে বেবী তরমুজ চাষে সাফল্য পাওয়ায় অনেকে শুধু দেখতে আসেননি, তারা চাষের কায়দা কানুনও জানতে এসেছেন। যাতে নিজেরাও চাষ করতে পারেন।

আনোয়ারা বেগমের প্রতিবেশী সুমি বেগম বলেন, আমাদের এলাকায় মানুষ সবসময় সবজি চাষ করেন। কখনো কাউকে তরমুজ চাষ করতে দেখিনি। আনোয়ারা আপা তরমুজ চাষ করেছে শুনে দেখতে এসেছি। এসে অবাক হয়ে গেছি। সত্যি সত্যি আপা অসাধ্য সাধন করেছে।

আরডিআরএস রংপুর বিভাগের টিম লিডার বিদ্যুৎ কুমার সাহা জানান, স্মার্ট লাইভলিহুড কৃষি ব্যবস্থাপনা সম্প্রসারণে পল্লীকর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশনের আর্থিক সহায়তায় কুড়িগ্রাম জেলায় গত বছর থেকে মালচিং পদ্ধতিতে তরমুজ চাষ করা হচ্ছে। যা কৃষকদের মাঝে ব্যাপক সাড়া পড়েছে। খেতেও খুব সুস্বাদু। রংটাও আকর্ষণীয়। বর্তমানে কৃষকদের মাঝে চাষে আগ্রহ বাড়ছে।

এ বিষয়ে রাজারহাট উপজেলা কৃষি অফিসার মোছা. সাইফুন্নাহার সাথী বলেন, বর্তমানে উচ্চমূল্য ফসলের মধ্যে তরমুজ একটি অন্যতম ফসল। তরমুজ মূলত চরাঞ্চলের ফসল। কুড়িগ্রামে প্রায় সাড়ে ৪০০ চরাঞ্চল রয়েছে। চরগুলোতেও এই ফসলটি আমরা সম্প্রসারণ করতে পারি। কৃষকদের চাষাবাদ প্রযুক্তি সম্পর্কে ধারণা প্রদান করা হলে ব্যাপকভাবে এর সম্প্রসারণ ঘটাতে পারি।

আইএ

Link copied!