সুন্দরবনে ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে মৃত হরিণের সংখ্যা বেড়ে ১৩৪

  • খুলনা ব্যুরো  | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: জুন ৩, ২০২৪, ০৫:৪২ পিএম
সুন্দরবনে ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে মৃত হরিণের সংখ্যা বেড়ে ১৩৪

ছবি : প্রতিনিধি

খুলনা: ঘূর্ণিঝড় রেমালের আঘাতে সুন্দরবনের বিভিন্ন স্থান থেকে মৃত প্রাণীর সংখ্যা বেড়ে সোমবার (৩ জুন) সকাল পর্যন্ত ১৩৪টি হরিণের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছে বন বিভাগ।

বন বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, ৪টি শূকরসহ ১৩৮টি বন্য প্রাণীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়া জীবিত ১৮টি হরিণ ও একটি অজগর সাপ উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বনে অবমুক্ত করা হয়েছে।

খুলনা অঞ্চলের বন সংরক্ষক মিহির কুমার দো বলেন, সোমবার সকাল পর্যন্ত উদ্ধার হওয়া মৃত বন্য প্রাণীগুলো মূলত সুন্দরবনের কটকা, কচিখালী, দুবলা, নীলকমল, আলোরকোল, ডিমের চর, পক্ষীর চর, জ্ঞানপাড়া, শেলার চর এবং বিভিন্ন নদী ও খালে ভাসমান অবস্থায় পাওয়া গেছে। মৃত প্রাণীগুলো মাটিচাপা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ভেসে আসা হরিণ ও অজগরকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বনে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

সুন্দরবনের কাশিয়াবাদ ফরেস্ট স্টেশন কর্মকর্তা নির্মল কুমার মন্ডল বলেন, ‘চাকরিজীবনে সুন্দরবনে বেশ কয়েকটি ঝড়-জলোচ্ছ্বাস দেখেছি। কিন্তু এত বেশি পানি আগে কখনো দেখিনি। স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে অন্তত ৫ থেকে ৭ ফুট পানি বেশি হয়েছিল আমার এলাকায়। সাগর উপকূলে দুবলা, কটকা ও কচিখালী এলাকায় পানি আরও কয়েক ফুট বেশি হয়েছিল। ৩৬ ঘণ্টা পর বন থেকে পানি নেমেছে। পানি নামার গতি এবং তীব্র জলোচ্ছ্বাসে সাধারণ প্রাণী ভেসে যাওয়া স্বাভাবিক।

সুন্দরবনের বন বিভাগের একাধিক কর্মচারী বলেন, ঘূর্ণিঝড় রেমালে ২৬ মে সকাল থেকে সুন্দরবন প্লাবিত হয়েছে। কোথাও ৮-১০ ফুট, কোথাও কোথাও তারও বেশি জোয়ারের পানিতে ডুবেছে সুন্দরবনের অধিকাংশ জায়গা। ঘূর্ণিঝড় রেমালে অনেক পাখি মারা গেছে। ঝড়ের পর আগের মতো পাখির দেখা মিলছে না, পাখির কিচিরমিচির শব্দও শোনা যাচ্ছে না।

সুন্দরবন খুলনা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক এ জেড এম হাছানুর রহমান বলেন, প্রবল ঘূর্ণিঝড় রেমালের তাণ্ডবে লন্ডভন্ড হয়েছে সুন্দরবনের প্রাণ-প্রকৃতি। মৃত বন্য প্রাণীর সংখ্যাও বাড়ছে। বনের মধ্যে পুকুরগুলোর পানি লবণাক্ত হওয়ায় বেঁচে থাকা বন্য প্রাণীরাও প্রাণযোগ্য পানি না পেয়ে বিপাকে রয়েছেন। এখন সুন্দরবনের পুকুরের লবণাক্ততা দূর করাই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। 

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফরেস্ট্রি ও উড টেকনোলজি বিভাগের অধ্যাপক ওয়াসিউল ইসলাম বলেন, যদি সুন্দরবনকে বিরক্ত না করে তাকে তার মতো থাকতে দেওয়া যায়, তাহলে সে নিজে নিজেই তার প্রাকৃতিক বাস্তুতন্ত্রের ভেতর দিয়ে আগের অবস্থানে ফিরে যাবে। যুগ যুগ ধরে এ রকম ঝড়-জলোচ্ছ্বাসে নিজে নিজেই সে সুস্থ হয়ে উঠেছে।

এসআই

Link copied!