নাটোর: নাটোরের সিংড়ায় এক অটোরিকশা চালককে বেদম পিটিয়েছেন পুলিশের এএসআই মো. সেলিম রেজা। ২ মিনিট ৫০ সেকেন্ডের এমনই একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) রাত ১১টার দিকে সিংড়া উপজেলা পরিষদ রোড এলাকার দেশ ফার্নিচার দোকানের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তা সিংড়া থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মো. সেলিম রেজা।
ভুক্তভোগী রিকশা চালকের নাম মো. হারুন আলী। তিনি সিংড়া পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাইশা গ্রামের বাসিন্দা।
ভিডিওতে দেখা যায়, রিকশা নিয়ে চালক হারুন আলী দমদমা থেকে সিংড়া বাসষ্ট্যান্ডে যাচ্ছিলেন। এ সময় চালক উপজেলা পরিষদ রোড় এলাকার দেশ ফার্নিচার দোকানের সামনে পৌঁছালে এসআই মো. সেলিম রেজা রিকশা থামায়। এরপর এএসআই, এক পুলিশ কনস্টেবলসহ তিনজন তার রিকশায় উঠেন। এবং তাদের সিংড়া বাসষ্ট্যান্ডে নিয়ে যেতে বলেন। এ সময় চালক এএসআইকে বলেন, স্যার মিটারের তার সংযোগ লুজ হয়ে গেছে, গাড়ি যাচ্ছে না। অনেক কষ্টে আমি হাত দিয়ে তার ধরে এ পর্যন্ত এসেছি। এরপর ভিডিওতে এএসআইকে বলতে শোনা যায়, আরে বেটা আমি তোরে বলছি তুই যা, একে বারে কান ফাটাই ফেলব যা যা। এ সময় অকথ্য ভাষায় চালককে গালিগালাজ করতে থাকেন। এক পর্যায় এএসআই ক্ষুদ্ধ হয়ে তার হাতে থাকা টস লাইট দিয়ে চালকের মাথায় মারধর করতে থাকেন। পরে আবারও দ্বিতীয় দফায় চালকে মারধর করতে দেখা গেছে। এ সময় চালকের কান্নায় আশপাশের লোকজন জড়ো হলে তাদের ধমক ও গালি দিয়ে সরিয়ে দেন এসআই। এরপর চালক ওই এএসআইসহ তিনজনকে রিকশায় নিয়ে চলে যান।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী অটোরিকশা চালক মো. হারুন আলী বলেন, রাতে দমদমায় আমার রিকশার মিটারের তার ছিঁড়ে যায়। আমি এক হাত দিয়ে তার চেপে অনেক কষ্টে বাসষ্ট্যান্ডে যাচ্ছিলাম। এ সময় কোর্ট মাঠ পার হলে দুই পুলিশসহ তিনজন রিকশা থামায়। তারা আমাকে বলে, তোকে সিগন্যাল দিলাম, তুই দাঁড়ালি না কেন। আমি বললাম, আমি বুঝতে পারিনি স্যার। আমার গাড়ির মিটারের একটি তার ছিঁড়ে গেছে তাই মেরামত করতে সিংড়া বাসষ্ট্যান্ডে যাচ্ছিলাম। এ সময় তিনজন আমার রিকশায় চড়ে বলে চল থানায়। এরপর আমাকে ওই এএসআই পুলিশ অনেক মারধর করতে থাকেন। পরে আমার নষ্ট গাড়িতে তিনজন উঠে জোর করে আমাকে দিয়ে টেনে সিংড়া বাসষ্ট্যান্ডে নিয়ে যায়। আমরা গবিব মানুষ বলে কি আমাদের কোনো ইচ্ছা নেই।
এ বিষয়ে এএসআই মো. সেলিম রেজা পাল্টা প্রশ্ন করেন, আমি কেন রিকশা চালককে মারধর করব?
সিংড়া থানার ওসি মো. আবুল কালাম বলেন, এ বিষয়টি আমি জানি না। কি হয়েছে, তা খতিয়ে দেখব।
এ বিষয়ে নাটোরের পুলিশ সুপার মো. তারিকুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি আমি জানি না। অভিযোগ না পেলেও তদন্ত করে আইনগতভাবে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এমএস
আপনার মতামত লিখুন :