বন্ধ হিলি স্থলবন্দরের ফোরলেন সড়কের কাজ, দুর্ভোগে পথচারীরা

  • হিলি প্রতিনিধি | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: জুলাই ২, ২০২৪, ০৯:২৯ পিএম
বন্ধ হিলি স্থলবন্দরের ফোরলেন সড়কের কাজ, দুর্ভোগে পথচারীরা

রংপুর: ভূমি অধিগ্রহণ জটিলতায় বন্ধ হয়ে আছে হিলি স্থলবন্দরের ফোরলেন সড়কের কাজ। প্রায় ৩৪ কোটি টাকা ব্যায়ে বন্দরের সোয়া দুই কিলোমিটার রাস্তার কাজ শুরু হয় ২০২২ সালে। দুই বছর অতিবাহিত হলেও শেষ হয়নি পুনাঙ্গ সড়কের কাজ। বর্তমানে এই সড়ক দিয়ে ভারতীয় পণ্যবাহী ট্রাকসহ দূরপাল্লার যানবাহন, অটোবাইক, রিকশাচালকদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। 

এতে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে চলাচল কারীদের। রোদ হলে ধুলা আর বৃষ্টি হলে কাদায় অতিষ্ঠ চলাচলকারীরা। এদিকে আগামী কয়েক মাসের মধ্যে ভূমি অধিগ্রহণ জটিলতা কাটিয়ে দ্রুত কাজ শুরু হবে বলে আশ্বাস দেন সড়ক ও জনপদ বিভাগের কর্মকর্তা।

কয়েকজন এলাকাবাসী বলেন, এটি হলো হিলি স্থলবন্দরের প্রধান সড়ক। সড়কটির বেহাল দশায় চলাচলে প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা। দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম স্থলবন্দর হিলি বন্দর। যেখান থেকে সরকার প্রতি বছর ৫০০ থেকে ৬০০ কোটি টাকা রাজস্ব পেয়ে থাকে। অথচ সেই রাস্তাটির বেহাল দশা। প্রতিনিয়ত ভোগান্তির মধ্যে চলাচল করতে হয় এলাকাবাসীদের। দুর্ভোগে পড়েছে বাইক, অটোবাইক, রিকশা, ভ্যানসহ সকল যানবাহন চলাচল কারীরা । নির্মানধিক রাস্তাায় কোথাও কোথাও হেটে চলা দায়। তৈরি হয়েছে নানা গর্ত,কোথায়ও আবার উঁচু নিচু এতে বন্দর ব্যবহারকারী ও পথচারীদের ভোগান্তি বেড়েছে।

সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ও নাগরীক কমিটির সচিব লিয়াকত আলী বলেন, সম্প্রতি ২০২২ সালের ৬ ডিসেম্বরে থেকে শুরু হয় জিরো পয়েন্ট-থেকে পানামা পোটের্র গেট পর্যন্ত ৮০০ মিটার ফোরলেনের কাজ । শুরু হয় এক পাশে ঢালাইযের কাজ। কিন্তু পানামাপোর্ট থেকে সিপি পর্যন্ত তিন লাইনের কাজ হলেও এখনো পড়ে আছে জিরোপয়েন্ট থেকে সিপি এবং ৪ মাথা থেকে মহিলা কলেজ পর্যন্ত সড়কটির কাজ।  এক দিকে ঢালাই আর আরেক দিকে হিয়ারিং রাস্তা। 

ঢালাই না করে যখনই বর্ষার পানিতে রাস্তা তলিয়ে বা খানাখন্ডে পরিণত হয় তখনই ভাঙ্গা ইট ফেলাই দেয় সেখানে। এই খানা খন্ডের কারণে এতে হাসপাতাল রোগী, কলেজ পড়য়া, স্কুলগামী শিক্ষার্থীসহ সকল পেশার মানুষরা পড়ে যায় বিরাম্বনার মধ্যে। এছাড়া প্রতিনিয়ত ভারত থেকে শত শত পন্যবাহী ট্রাক আসে এই রাস্তা দিয়ে। রোদ হলে হয় ধুলাবালি আর বর্ষা হলে হয় কাদার সৃষ্টি। এই ধুলাবালির কারনে প্রতিনিয়ত বাড়ছে শ্বাসকষ্ট,ইজমা ও হাপানী রোগির সংখ্যা।

নাগরিক কমিটির সদস্য জাহিদুল ইসলাম জাহিদ বলেন, প্রায় ৩ বছর ধরে রাস্তার কাজ শুরু হয়েছিল কিন্তু এখনো রাস্তার কাজ শেষ হয়নি। হিলি স্থবন্দরের বিবেচনায় সরকার এখানে ৪ লেন রাস্তার করার প্রদক্ষেপ নেয়। কিন্তু আসলে আমরা যেইটা দেখতেছি ৩ বছর হয়ে গেল কোথাও হয়তো ২০০গজ কোথাও আবার ৩০০শ এভাবে রাস্তার কাজ  করা হয়েছে। এতে কিন্তু এলাকাবাসীদের আরও বেশি ভুগান্তি বেড়েছে। 

তিনি বলেন, আমার আগের রাস্তাই ভালো ছিল। কি কারনে যে রহস্যজনক ভাবে রাস্তার এই কাজ বন্ধ হয়ে আছে ,ঠিকাদার রাস্তার কাজ বন্ধ রেখে উধাও হয়ে গেছে। আমরা খুব কষ্টে আছি,আমরা বারং বারংবার সরকারের কাছে দাবী জানাচ্ছি যে,আমাদের এই কাজগুলি দ্রুত করে দেওয়া হক।  

হাকিমপুর পৌরসভার মেয়র জামিল হোসেন চলন্ত বলেন, রাস্তার এই বেহাল দশার কারণে ব্যবসায়ীসহ পুরো হিলিবাসী অনেক কষ্টে রয়েছে।কাজ না হওয়ার কারণে স্থানীয়দের মাঝে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। তবে ডিসি অফিসে বার বার করে বলা হয়েছে, যারা সরকারি জায়গায় স্থাপন রেখেছে তাদেরকে নোটিস দিয়ে স্থাপনা উচ্ছেদ করা হোক কিন্তু তা এখনো করা হয়নি।

দিনাজপুর -৬ আসনের সংসদ সদস্য সিবলী সাদিক বলেন, রাস্তা করার জন্য যখন মাপযোগ করে নিয়ে যায় তখন কবরস্থান রাস্তার মধ্যে পরে যায়। কবরস্থানকে রক্ষা করার জন্য পুনরায় পুর্ব পাশে জায়গা নিয়ে পুনরায় টেন্ডার করা হয়। আর এই কারনে কাজটা বিলম্ব হচ্ছে। এছাড়া জমি অধিগ্রহনের একটা ব্যাপার ছিল। তাও বর্তমান শেষের পর্যায়ে। তবে বিদুৎতের খুটিগুলো অপসারণ হলেই অতি দ্রæত রাস্তাটির কাজ শুরু হবে বলে জানান তিনি।

দিনাজপুর সড়ক ও জনপদ উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী আমান উল্লাহ আমান বলেন, সড়কের ভূমি অধিগ্রহণসহ দাপ্তরিক বেশকিছু কাজে জটিলতা থাকায় কাজ বন্ধ রয়েছে সড়কটির। দ্রুত এ সমস্যার সমাধান কাটিয়ে রাস্তার কাজ শুরু করার আশ্বাস দেন তিনি। হিলি বন্দরের জিরো পয়েন্ট থেকে পানামা পোর্ট গেট পর্যন্ত ৮০০ মিটার সড়কের প্রকল্পের নির্মান ব্যয় ধরা হয়েছিল ৩৩ কোটি ৯০ লাখ টাকা।

এআর

Link copied!