পাবনা: সদর উপজেলার মালিগাছা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সৈয়দ মুনতাজ আলীর বিরুদ্ধে পাঁচজন ইউপি সদস্যকে মারধরসহ নানা অভিযোগ উঠেছে। শনিবার (৩১ আগস্ট) দুপুরে পাবনা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীরা।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন, ইউপি চেয়ারম্যানের ক্যাডার বাহিনীর মারধরে আহত ৭নং ওয়ার্ড সদস্য নাহিদ শেখের বোন রিনা খাতুন।
লিখিত বক্তব্যে তিনি অভিযোগ করেন, ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বাররা গত ৯ মাস ধরে সম্মানী ভাতা পান না। চেয়ারম্যান সৈয়দ মুনতাজ আলীকে বললে তিনি নানা তালবাহানা করেন। গত বুধবার (২৮ আগস্ট) এ নিয়ে পরিষদে সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সেখানে ইউপি চেয়ারম্যানের সাথে সদস্যদের কথা কাটাকাটি হয়। সভা শেষে বের হওয়ার সময় চেয়ারম্যান মুনতাজ আলীর নির্দেশে তার ক্যাডার বাহিনী ৫ জন ইউপি সদস্যকে বেধড়ক মারপিট করে। তাদের মধ্যে ৭নং ওয়ার্ডের মেম্বার নাহিদ শেখকে গুরুত্ব আহত অবস্থায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
লিখিত বক্তব্যে আরো অভিযোগ করা হয়, চেয়ারম্যান মুনতাজ আলীর বাবা ছিলেন সড়ক ও জনপথ বিভাগের একজন শ্রমিক। ইউনিয়ন পরিষদের গলিতে মুনতাজ আলীর একটি ব্রয়লারের দোকান ছিল। অথচ ২০১০ সালের পর থেকে তিনি এখন শত কোটি টাকার মালিক।
বিগত বছরগুলোতে আওয়ামী লীগ নেতাদের ছত্রছায়ায় এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছেন। বিভিন্ন প্রকল্পের নামে হরিলুট করে গড়ে তুলেছেন অঢেল সম্পদ। টেবুনিয়া বাজারে পাঁচতলা বিশিষ্ট একটি মার্কেট, চারমাইল বাজারের পাশে মার্কেটসহ ১৪ বিঘা জমি, বাড়ির আশেপাশে ৫টি পুকুর, নারিশ পোল্ট্রি ফিডের ডিলার শিপ কেড়ে নেয়া সহ নানাভাবে সম্পদের মালিক তিনি।
২০২২ সালের ইউপি নির্বােচনে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর তার স্বরুপ বেরিয়ে আসে। তার কথার অবাধ্য হলেই শুরু হয় নির্যাতন।
তিনি তিনটা গাড়ি ব্যবহার করেন, যার দাম এক কোটি টাকা। গত ১৪ বছরে কিভাবে এত সম্পদের মালিক হলেন সৈয়দ মুনতাজ আলী-সেটি খতিয়ে দেখা দরকার। এমন পরিস্থিতিতে চেয়ারম্যানের অবৈধ কর্মকাণ্ড ও ইউপি সদস্য নাহিদ শেখ কে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলার বিচার দাবি করেন ভুক্তভোগী পরিবার ও ইউপি সদস্যরা।
সংবাদ সম্মেলনে ৮ নং ওয়ার্ডের মেম্বার মাসুদ রানা, ১ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য মুনছুর আলী, ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আনজারুল ইসলাম, আহত ৭ নং ওয়ার্ড সদস্য নাহিদ শেখের বোন রিনা খাতুনসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত মালিগাছা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সৈয়দ মুনতাজ আলী মুঠোফোনে সাংবাদিকদের বলেন, ’আমার নামে মামলা হয়েছে জানি। তবে ইউপি সদস্যদের ওপর হামলার বিষয়ে আমি কিছুই জানিনা। ওরা পরিষদ থেকে চলে যাওয়ার পরে রাস্তায় কে বলা কারা হামলা করেছে আমার জানা নেই। আর তারা আমার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ তুলেছে তার কোনো ভিত্তি নেই।’
এ বিষয়ে পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রওশন আলী বলেন, মালিগাছা ইউনিয়নের টেবুনিয়ায় ইউপি সদস্যদের উপর হামলার ঘটনায় আহত নাহিদের বাবা জিন্নাত শেখ বাদি হয়ে গত ২৯ আগস্ট সদর থানায় মামলা করেছেন। ইউপি চেয়ারম্যান সৈয়দ মুনতাজ আলীকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। আসামীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
এআর
আপনার মতামত লিখুন :