চাঁদাবাজির অডিও ফাঁস, কৃষকদল নেতা বহিষ্কার 

  • লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৪, ২০২৪, ১০:২৪ পিএম
চাঁদাবাজির অডিও ফাঁস, কৃষকদল নেতা বহিষ্কার 

লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুরে হত্যা ও অস্ত্র মামলা থেকে নাম বাদ দেওয়ার কথা বলে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতার কাছে ২ লাখ টাকা চাঁদা চাওয়ার অডিও ফাঁসের ঘটনায় কৃষক দল নেতা জসিম চৌধুরীকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এর আগে অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে শোকজ করে রায়পুর উপজেলা কৃষক দল। কিন্তু শোকজের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় তাকে বহিষ্কার করা হয়েছে। 

জসিমের বাড়ি রায়পুর উপজেলার বামনীর কলাকোপা গ্রামে। আর লিটনের বাড়ি সদর উপজেলার উত্তর হামছাদীর চৌধুরী বাজার এলাকায়। 

শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রায়পুর উপজেলা কৃষক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক জাকির হোসেন আরিফ স্বাক্ষরিত এক চিঠির মাধ্যমে বহিষ্কারের বিষয়টি জানানো হয়। 

বহিষ্কারাদেশে উল্লেখ করা হয়, চলমান পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থি অপরাধমূলক কাজে জড়িত থাকার কারণে বামনী ইউনিয়ন কৃষক দলের সদস্য সচিব মো. জসিম চৌধুরীকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। উপজেলা কৃষক দলের আহ্বায়ক ও সদস্য সচিব এ বহিষ্কারাদেশ অনুমোদন করেছেন।

জানা গেছে, জহির উদ্দিন লিটন নামে এক স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতাকে কল করে হত্যা ও অস্ত্র মামলা থেকে নাম বাদ দিতে কৃষক দল নেতা জসিম ২ লাখ টাকা চাঁদা চান। লিটন জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের কৃষি বিষয়ক সম্পাদক। তাদের কথোপকথনের অডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। এরপর বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) জসিমকে কারণ দর্শানোর (শোকজ) নোটিশ দেয় উপজেলা কৃষক দল। এতে দুই দিনের মধ্যে জসিমকে জবাব দিতে বলা হয়। জসিম জবাব দিলেও তা সন্তোষজনক না হওয়ায় উপজেলা কৃষক দল তাকে বহিষ্কার করে। 

জসিম ও লিটনের কথোপকথনের কয়েকটি অডিও রেকর্ড এই প্রতিবেদকের হাতে রয়েছে। এতে লিটনের উদ্দেশে জসিমকে বলতে শোনা যায়, সবুজ ভূঁইয়া বাদী হয়ে হত্যা ও অস্ত্র মামলা জমা দিয়েছে। তবে পুরো ডিলিংস, ব্যাকআপ দেবে লক্ষ্মীপুরের নেতারা। মামলা সাবমিট করা হয়েছে, সকাল পর্যন্ত সময় আছে। ওই মামলায় সালাহ উদ্দিন টিপু ১ নম্বর আসামি, আপনি ২৮ নম্বরে আছেন। টেনশন করিয়েন না। আপনার নাম আমি স্পেশালি বলছি, সে (বাদী) বলছে কম নেই। ২ এর নিচে কম নেই, আড়াই বলছে আমাকে। এটাই শেষ কথা। আর কোনো রাস্তা খোলা পাবেন না।

জসিমকে বলতে শোনা যায়, ‘সমস্যাটা হয়ে গেল যে অস্ত্র মামলা টু মার্ডার মামলা। আমি এডার জন্য ভয় পাই গেছি। যদি এই মামলা একবার ইস্যু হয়ে দাঁড়ায়। তাহলে দুই, চার, দশ ও পনেরো বছরেও কিছু হবে না। আপনি আমার জমি একটু বিক্রি করে দেন, আপনি আমার ভাই। জমি বিক্রির টাকা দিয়ে সারেন। সকাল ৮টা পর্যন্ত সময় আছে।’ 

তবে কৃষক দল নেতা জসিম চৌধুরী দাবি করেন, অডিওটি এডিট করা। তিনি দলের নেতাদের বিষয়টি জানিয়েছেন। তিনি লিটনের কাছে চাঁদা চাননি। শোকজের চিঠি পেয়ে তিনি জবাবও দিয়েছেন। 

স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা জহির উদ্দিন লিটন বলেন, ‘আমি কোনো অপকর্ম করিনি। জসিম কল করে হত্যা ও অস্ত্র মামলা থেকে নাম বাদ দেওয়ার অজুহাত দেখিয়ে আমার কাছে ২ লাখ টাকা দাবি করেছে। একপর্যায়ে সে বলেছে, প্রয়োজনে তার জমি বিক্রি করে আমি টাকা নিয়ে তাকে দিতাম।’

রায়পুর উপজেলা কৃষক দলের আহ্বায়ক কাউসার মোল্লা বলেন, চাঁদা চাওয়ার ঘটনার অডিও রেকর্ডিং শুনে জসিমকে শোকজ করা হয়। কিন্তু তিনি শোকজের সন্তোষজনক জবাব দেননি। তাই তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। 

এসএস

Link copied!