ফরিদপুর: ফরিদপুরের ভাঙ্গায় অবস্থিত লালন আনন্দধামে গভীর রাতে আগুন দিয়েছে একদল দুর্বৃত্ত। এসময় ভাঙচুর করা হয় ঈশ্বর চন্দ্র বিদ্যা সাগরের ভাস্কর্য। রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) দিবাগত গভীর রাতে এই ভাঙচুর ও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এদিকে আজ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন পুলিশ সদস্যরা। এই ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) উপজেলার কাউলিবেড়া ইউনিয়নের মোটরা এলাকায় অবস্থিত লালন আনন্দধামে গিয়ে দেখা যায়, লালন আনন্দধাম ভাঙচুর চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়েছে। এসময় আনন্দধামে থাকা লালন সাই এর ছবি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রহমানের ছবি আগুন দেওয়া হয়। এছাড়াও ভস্মীভূত হয় বেশ কিছু মূল্যবান গ্রন্থ, জার্নাল এছাড়াও ভাঙচুর করা হয় ঈশ্বর চন্দ্র বিদ্যা সাগরের ভাস্কর্য। অগ্নিকাণ্ডে ভস্মীভূত হয় হয়েছে হারমনিয়াম, একতারা, দোতারা, বায়া, জুড়ি, গিটার সহ বেশ কিছু বাদ্যযন্ত্র।
এই বিষয়ে আনন্দধামের প্রতিষ্ঠাতা কবি জাহিদ হাসান জানান, আমি সকাল বেলা লালন আনন্দধামে গিয়ে দেখি ধামে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। আমার ধারানা গত রাতের কোন এক সময় একদল দুর্বৃত্ত আনন্দধামের দেওয়াল টপকে ভাঙচুর ও আগুন লাগিয়েছে। এরপর বিষয়টি আমি প্রশাসনকে অবগত করি। সন্ধ্যায় অভিযোগ দিতে বলেছেন ভাঙ্গা থানার ওসি।
এই বিষয়ে লালন আনন্দধামের সভাপতি দীনেশচন্দ্র রায় জানান, আমি সকালে কবি জাহিদের মাধ্যমে জানতে পারি যে লালন আনন্দধামে একদল দুর্বৃত্ত ভাঙচুর চালিয়ে আগুন দিয়েছে। সম্ভবত গতকাল গভীর রাতে যখন বিদ্যুৎ ছিল না তখন একদল দুর্বৃত্ত আনন্দধামের দেওয়াল টপকে ভিতরে ঢুকে লালন সাই ও বঙ্গবন্ধুর ছবি ভাঙচুর করে। মূল্যবান গ্রন্থ, জার্নাল ও বাদ্যযন্ত্র পুড়িয়ে দেয়। এছাড়াও ভেঙ্গে ফেলা হয় ঈশ্বর চন্দ্র বিদ্যা সাগরের ভাস্কর্য। আমরা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। দোষীদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই।
প্রসঙ্গত লালন আনন্দধাম কবি জাহিদ হাসান ২০১৩ সালে প্রতিষ্ঠা করেন। এরপর থেকেই ভাঙ্গা উপজেলার একমাত্র সাংস্কৃতিক চর্চার তীর্থস্থান হয়ে উঠে এই লালন আনন্দধাম। এছাড়াও বিভিন্ন সামাজিক কর্মকান্ডে যেমন ফ্রি মেডিকেল ক্যাম, দারিদ্র শিক্ষার্থীদের মধ্যে মেধা বৃত্তি, শীতবস্ত্র বিতরণ সহ বিভিন্ন কবি সাহিত্যিকদের স্মরণে বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে থাকে লালন আনন্দধাম। কয়েকদিন আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের আবনায়ে দারূস সুন্নাহ কাউলিবেড়া গ্রুপে এইচ.এম ইমরান হোসেন নামের একটি আইডি থেকে লালন আনন্দধাম নিয়ে উস্কানিমূলক পোস্ট করা হয়।
এই বিষয়ে ভাঙ্গা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোকসেদুর রহমান জানান, আমি ঘটনাটি জানতে পেরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। এই বিষয়ে কোন অভিযোগ পাইনি, অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এসএস
আপনার মতামত লিখুন :