ঢাকা: মামলার আসামি ধরতে যাওয়ার সময় কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে পদ্মা নদীতে পুলিশের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় পুলিশের দুজন সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) নিখোঁজ রয়েছে। আহত হয়েছেন আরেক উপপরিদর্শক (এসআই) ও দুই ইউপি সদস্য।
রোববার (২৭ অক্টোবর) দিবাগত রাত ৩টার দিকে উপজেলার শিলাইদহ ইউনিয়নের স্রীখোল এলাকার পদ্মা নদীতে এ ঘটনা ঘটে। নিখোঁজ দুই পুলিশ সদস্যকে উদ্ধারে কাজ শুরু করেছে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল।
নিখোঁজ হওয়া দুজন সহকারী উপপরিদর্শক হলেন- সদরুল হাসান (৪০) ও মুকুল হোসেন (৪০)। তারা কুমারখালী থানায় কর্মরত ছিলেন।
এ ঘটনায় আহতরা হলেন- কুমারখালী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. নজরুল ইসলাম, কয়া ইউনিয়ন পরিষদের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. ছলিম ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আনোয়ার হোসেন টিটন।
স্থানীয় বাসিন্দা ও জেলেরা জানায়, নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে কিছু অসাধু জেলে নদীতে মাছ ধরছিল। গভীর রাতে দুই মেম্বর ও ৬ পুলিশ পদ্মা নদীর বেড় কালোয়া এলাকায় নেমে অভিযানের কথা বলে কয়েকজন জেলের কাছ থেকে ইলিশ মাছ নিয়ে নদীর অন্য প্রান্তে চলে যায়। পরে শিলাইদহের শ্রীখোল এলাকায় দুর্বৃত্তরা পুলিশ ও মেম্বারের ওপর হামলা চালায়।
এজাহার শেখ নামে এক জেলে বলেন, ‘রাতে পদ্মায় ইলিশ ধরছিলাম। সেসময় ছলিম ও টিটন মেম্বারসহ ৬ জন পুলিশ এসে আমার কাছে থাকা মাছ নিয়ে চলে যায়।’
তার ভাষ্য, মাছ নেওয়ার পরে পুলিশ ফের তাকে মাছ ধরার অনুমতি দিয়ে চলে যায়।
তবে জেলেদের অভিযোগ অস্বীকার করে কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল বলেন, ‘একটি মামলার গ্রেপ্তারি পরোয়ানা তামিল করতে নদীর ওপারের ইউনিয়ন চর সাদিপুর যাচ্ছিলেন পুলিশের একটি দল। এসময় দুটি নৌকা এসে পুলিশের নৌকাটির লোকজনের সাথে খারাপ ব্যবহার করেন। এসময় একটি নৌকার সাথে সংঘর্ষে পুলিশের নৌকাটি ডুবে গেলে এ ঘটনা ঘটে। এর সাথে দায়ীদের গ্রেপ্তারে কাজ করছে পুলিশ।’
জানা গেছে, রাতে খবর পেয়ে আহত পুলিশদের উদ্ধার করেন বেড় কালোয়া এলাকার জেলেদের নেতা ইয়ারুল ইসলাম। তিনি জানান, রাত আনুমানিক ৩টার দিকে স্থানীয় জেলেরা প্রথমে তাকে ফোন দিয়ে জানায় নদীতে ঝামেলা হচ্ছে। ছলিম ও টিটন মেম্বর এবং পুলিশ এসে জেলেদের কাছ থেকে তেল ও মাছ লুটপাট করে নিয়ে গেছে। সে খবর শুনেও তিনি ঘুমিয়ে পড়েছিলেন। এরপর ভোর ৫টার দিকে এএসআই সবদুল তাকে ফোনে বলেন, ‘ভাই আমরা বিপদে আছি সাহায্য করেন। তখন একটি নৌকায় করে এসআই নজরুলসহ ৩ পুলিশ এবং দুই মেম্বরকে উদ্ধার করা হয়।’
কুমারখালী ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন সাব অফিসার ফিরোজ হোসেন বলেন, ‘খবর পেয়ে আমরা স্থানীয়দের সহযোগিতায় উদ্ধার অভিযান শুরু করি। পরে খুলনা থেকে ডুবুরি দল এসে উদ্ধার কাজে যোগ দেয়।’
উদ্ধার কাজে তদারকি করা কুষ্টিয়া জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পলাশ কান্তি নাথ বলেন, ‘আমরা উদ্ধার কাজ জোরেশোরে চালিয়ে যাচ্ছি। অপরদিকে এ ঘটনার তদন্ত কাজও শুরু হয়েছে। ঘটনায় দায়ীদের গ্রেপ্তারের জন্য কাজ করছে পুলিশ।’
এসএস
আপনার মতামত লিখুন :