পাবনা: এক সপ্তাহের ব্যবধানে ঈশ্বরদীর হাট-বাজারে দেশি পেঁয়াজের দাম বেড়েছে কেজিতে ৩০ থেকে ৪০ টাকা। ব্যবসায়ীরা জানান, আমদানি করা পেঁয়াজের পর্যাপ্ত সরবরাহ আছে। এই পেঁয়াজের দামও তুলনামূলকভাবে কম। কিন্তু মানুষ দেশি পেঁয়াজ কিনতে বেশি আগ্রহী। এতে করে আমদানি করা পেঁয়াজ ও দেশি পেঁয়াজের দামের মধ্যে পার্থক্য তৈরি হয়েছে।
স্থানীয় বাজারগুলোতে এক সপ্তাহ আগেও পেঁয়াজের দাম ছিল কিছুটা কম। প্রতিকেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ১১০-১২০ টাকা দরে। আর ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৮০-৯০ টাকা কেজি দরে। কিন্তু বর্তমানে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১৫০-১৬০ টাকা আর ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১১০-১২০ টাকা কেজি।
ব্যবসায়ীরা জানান, কৃষকরা নিজেদের জেলাতে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি করেন। ব্যবসায়ীরা সেই পেঁয়াজ কিনে আনেন ঈশ্বরদীর বিভিন্ন হাট-বাজারে। জেলা পর্যায়েই দেশি পেঁয়াজের সংকট তৈরি হয়েছে। এ কারণে দাম বেড়েছে।
ঈশ্বরদী পৌর এলাকার স্কুলপাড়া থেকে রাজিব হোসেন বাজারে এসেছিলেন সবজি কিনতে। তিনি জানান, গত সপ্তাহেও তিনি ১২০ টাকা দরে দুই কেজি দেশি পেঁয়াজ কিনেছিলেন। এক সপ্তাহের ব্যবধানে আজ এই পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকা থেকে ১৬০ টাকা দরে। ভারত থেকে আমদানি করা প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম গত সপ্তাহেও ছিল ৯০ টাকা। আজ এই পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা দরে। এভাবে দাম বাড়তে থাকলে সংসার চালানোই কঠিন হয়ে যাবে বলে মন্তব্য করেন রাজিব হোসেন।
ঈশ্বরদী বাজারের পেঁয়াজ ব্যবসায়ী আবুল কাশেম জানান, তিনি সাধারণত পাবনার বনগ্রাম ও আতাইকুলা বাজার থেকে স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত দেশি পেঁয়াজ নিয়ে আসেন।
তিনি বলেন, গত এক সপ্তাহে জেলার স্থানীয় বাজারে দেশি পেঁয়াজ কম পাওয়া যাচ্ছে। এ কারণে দেশি পেঁয়াজের পাইকাড়ি বাজার পাবনার বনগ্রাম ও আতাইকুলা বাজারেই পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ২০-৩০ টাকা বেশি দামে। মঙ্গলবার তিনি মানভেদে এই পেঁয়াজ ক্রয় করেছেন প্রতি কেজি ১৩২ টাকা থেকে ১৪২ টাকায়। অথচ এক সপ্তাহ আগে তিনি একই জাতের পেঁয়াজ ক্রয় করেছিলেন ১০৭ টাকা থেকে ১১৭ টাকা দরে।
বিক্রেতারা জানান, বাজারে দেশি পেঁয়াজের সরবরাহ কমেছে। মৌসুম শেষে কৃষকের ঘরে এখন পেঁয়াজের মজুত কম। আবার অতিবৃষ্টির কারণে নতুন পেঁয়াজ বপনে দেরি হচ্ছে। অন্যদিকে আমদানি করা পেঁয়াজের দামও কিছুটা বাড়তি। এসব কারণে বাজারে এখন পেঁয়াজের দাম বেশি। তারা বলেন, মাত্র তিন দিনের ব্যবধানে পাইকারি বাজারে মঙ্গলবার দেশি পেঁয়াজের দাম প্রতি মণে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা বেড়েছে। এর অন্যতম কারণ, কৃষকের ঘরে এখন খাওয়ার পেঁয়াজ একেবারেই কম। যে পেঁয়াজ রয়েছে, তার বেশির ভাগই বেছন বা বীজ পেঁয়াজ।
ঈশ্বরদী উপজেলার অতিরিক্ত কৃষি অফিসার মাহমুদা মোতমাইন্না বলেন, অনেক পেঁয়াজচাষীরা বেছন বা বীজ হিসেবে মুড়িকাটা পেঁয়াজ লাগাচ্ছে। যার কারণে বাজারে দেশি পেঁয়াজের সরবরাহ একটু কম। মুড়িকাটা পেঁয়াজ বাজারে আসলে দাম কমতে পারে।
এসএস
আপনার মতামত লিখুন :