রাজশাহী: দেশে বোতলজাত সয়াবিন বিক্রি নিয়ে চলছে অনিয়ম। সিন্ডিকেট হচ্ছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। এর প্রভাব পড়েছে রাজশাহীর বাজারেও। দোকানে অন্যান্য পণ্য থাকলেও নেই বোতলজাত সয়াবিন তেল।
সারা দেশের বাজারে চলমান সংকটের মধ্যেই গত ৯ ডিসেম্বর সয়াবিন তেলের দাম বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে সরকার। বোতলজাত ও খোলা সয়াবিন তেলের দাম প্রতি লিটারে বাড়ানো হয়েছে ৮ টাকা।
সরকার দাম বাড়ানোর আগ থেকেই রাজধানীর বাজার থেকো উধাও হয়ে যায় বোতলজাত সয়াবিন তেল। সেই প্রভাব পড়েছে রাজশাহীর বাজারেও। এখানেও উধাও হয়ে গেছে সয়াবিন তেল। এতে বিপাকে পড়েছেন সাধারণ মানুষ।
শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) সরেজমিনে রাজশাহীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে বোতলজাত সয়াবিন তেলের সন্ধান পাওয়া যায়নি।
খুচরা ও পাইকারি ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, গত এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে ভোজ্যতেল পরিশোধন কোম্পানিগুলো বোতলজাত সয়াবিন তেল সরবরাহ করছে না। দাম বাড়ার ঘোষণার পর থেকে আগে যেগুলো ছিলো সেগুলো বিক্রি হয়ে যাওয়ায় আর বিক্রি করতে পারছেন না তারা।
রাজশাহী নগরীর মুদি ব্যবসায়ী শরীফ উদ্দিন জানান, বাজারে বোতলজাত তেল মোটেই নেই। ফলে আমরা বিক্রি করতে পারছি না। ক্রেতারা হয়রানি হচ্ছেন।
কারণ হিসেবে তিনি বলেন, দাম বাড়ার সাথে সাথে তেল সরবরাহ কোম্পানিগুলো আমাদের তেল দিচ্ছে না। কোম্পানিগুলো বলছেন দাম বাড়ার পর যে তেলের কন্টেনার সেগুলো পাওয়া যায়নি তাই তেল দিতে পারছেন না। আগামী রোববার বা সোমবার হতে পাওয়া যেতে পারে।
অপরদিকে বাজারে খোলা সয়াবিন তেল ১৭০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। ব্যবসায়ীদের কেনা পড়ে ১৬৮ টাকা লিটার। ফলে সরকার নির্ধারিত যে দাম সেই দামে বাজারে তেল পাওয়া যাচ্ছে না।
এদিকে শুক্রবার রাজশাহী মহানগরীর বিভিন্ন কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, শীতের মৌসুমি সকল রকম সবজির দাম কমেছে। সেই সাথে বাজারে সরবরাহ বেড়েছে অনেক বেশী। ফলে বিভিন্ন রকমের সবজি কেজিতে ১০-৩০ টাকা কমে গেছে। শিম ৫০-৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। বেগুন ৮০ টাকা থেকে কমে ৫০ টাকায়, ফুলকপি ও পাতা কপি ৩০-৪০ টাকা পিস বিক্রি হচ্ছে। নতুন আলু ১০০-১২০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়া লাল ডিম ৪৪ ও সাদা ডিম ৪২ টাকা হালি দরে বিক্রি হচ্ছে। সকল ধরনের চালের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
ব্রয়লার মুরগি ১৭০ টাকা কেজি, সোনালি ২৮০-৩০০ ও দেশি মুরগি ৪৮০-৪৯০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। গরুর মাংস ৭০০ টাকা এবং খাসির মাংস ১০৫০-১১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। পেঁয়াজ ৯০-১১০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।
বড় ইলিশ ২২০০, মাঝাড়ি ইলিশ ১৪০০ টাকা এবং ছোট আকারের ৬০০-৮০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়াও দেশি প্রজাতির ছোট মাছ ও নদীর মাছের দাম একই রকম আছে বলে জানিয়েছেন মৎস ব্যবসায়ীরা।
ক্রেতারা বলছেন, বাজারে বোতলজাত তেল উধাও হয়ে যাওয়া দুঃখ জনক। শীতকালীন মৌসুমী সবজির দাম কমলেও কাঙ্খিত দামে আসেনি। এক ক্রেতা বলেন, আমি এক কেজি পেঁপে কিনলাম ৫৫ টাকায়। আগে এমন দাম হতো না। এর দাম সর্বোচ্চ ১৫-২০ টাকা হলে ভালো হতো।
ক্রেতা সাধারণের চাওয়া সরকার বাজারে সঠিক তদারকি করলে কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব তবে কোন কিছুই সেগুলো হচ্ছে না। ফলে জনগণকে খেতে হবে হবে তাই সবকিছু সহ্য করে অধিক দামেই পণ্য কিনে পরিবার চালাতে হচ্ছে।
এসএস
আপনার মতামত লিখুন :