ছবি : প্রতিনিধি
লালমনিরহাট: তীব্র শীতে কাহিল হয়ে পড়েছে লালমনিরহাটের জনজীবন। টানা ৪ দিন ধরে এ জেলায় কোথাও সূর্যের দেখা মিলছে না। চারিদিকে হিমেল হাওয়ার সঙ্গে বৃষ্টির মতো ঝড়ছে কুয়াশা। দাপটে শীত থেকে বাঁচতে গ্রামীন পর্যায়ের বিভিন্ন মানুষজন খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন।
শনিবার (২৫ জানুয়ারি) লালমনিরহাটে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১২ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। হিমালয়ের অনেকটা কাছাকাছি হওয়ায় এ জেলায় অন্যান্য জায়গার থেকে শীতের তীব্রতা একটু বেশি থাকে।
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, গতকয়েক দিন থেকে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সমানতালে ঝিরঝির বৃষ্টির মতো কুয়াশা ঝরছে। মহাসড়কে দিনের বেলা হেডলাইট জ্বালিয়ে যানবাহনগুলো ধীর গতিতে চলাচল করছে। গত কয়েকদিন থেকে ঠান্ডার দাপট বেড়ে যাওয়ায় হাসপাতাল গুলোতে নিউমোনিয়া, সর্দি, কাশি, ডায়রিয়াসহ শীতজনিত বিভিন্ন রোগ নিয়ে রোগীরা ভর্তি হচ্ছেন। সবচেয়ে বেশি শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন বয়োবৃদ্ধ ও শিশু রোগীরা। কনকনে ঠান্ডায় দুর্ভোগে পড়েছেন শ্রমিকসহ খেটে খাওয়া মানুষেরা। বিশেষ করে দাপুটে শীতে বেশি কষ্টে রয়েছেন তিস্তা তীরবর্তী এলাকার মানুষজন। জেলা এবং উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শীতার্ত মানুষের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে প্রয়োজনের তুলনায় সেগুলো অপ্রতুল বলছেন শীতার্ত মানুষেরা।
সদর উপজেলার তিস্তার তীর খুনিয়াগাছ এলাকার বৃদ্ধা মর্জিনা বেওয়া (৬৫) জানান, আমি বিধবা মানুষ, শীতের শুরু থেকে অনেকের কাছে ঘুরেও কিছু পাইনি। আমি বৃদ্ধ মানুষ হলেও আমার দিকে কেউ তাকায় না। শীতে আমার জীবন শেষ, আমাকে দেখার কেউ নেই। কালমাটি এলাকার কৃষক সুজন মিয়া বলেন, কয়েক দিন ধরেই সন্ধ্যার পর শীত একটু বেশি অনুভব হচ্ছে। রাত থেকে ভোর পর্যন্ত কুয়াশায় আচ্ছন্ন থাকছে পুরো এলাকা। গত ৪ দিন সূর্যের দেখা মিলছে না। কনকনে শীতে আমাদের কৃষিকাজে ব্যাহত হচ্ছে।
রংপুর আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মুস্তাফিজার রহমান জানান, শনিবার দুপুরে ১২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। আগামীতে তাপমাত্রা আরও কমে শীত বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আজ সারাদিনও সূর্যের দেখা না পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক এইচ এম রকিব হায়দার বলেন, ইতোমধ্যে জেলায় শীতার্ত মানুষের মাঝে কম্বল বিতরণ পরিচালিত হচ্ছে। তিস্তা চরাঞ্চলের শীতার্ত মানুষকে গুরুত্ব দিয়ে সেখানে তুলনামূলক বেশি শীতবস্ত্র বিতরণ কার্যক্রম চালানো হচ্ছে ।
এসআই
আপনার মতামত লিখুন :