মেহেরপুর : মেহেরপুরে চেক জালিয়াতির মামলায় সাবেক জনপ্রশাসন মন্ত্রী ফরহাদ হোসেনের ছোট ভাই সরফরাজ হোসেন মৃদুলকে এক বছরের কারাদণ্ড ও সাড়ে তিন কোটি টাকা জরিমানা করেছে আদালত।
রোববার (২৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে মেহেরপুর জেলা যুগ্ম জজ (দ্বিতীয়) আদালতের বিচারক হুমায়ুন কবির আসামির উপস্থিতিতে এ আদেশ দেন বলে জানান রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি (পিপি) সাইফুল ইসলাম সাহেব।
দণ্ড পাওয়া সরফরাজ মেহেরপুর জেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক এবং সাবেক মন্ত্রী ফরহাদ হোসেনের ছোট ভাই।
মামলার বাদী দেবাশীষ বাগচি বলেন, পারিবারিকভাবে বহু বছর ধরে ঠিকাদারি ব্যবসার সঙ্গে জড়িত তিনি। সেই ধারাবাহিকতায় ২০১৫ সালে সরফরাজের প্রস্তাব পেয়ে তার সঙ্গে যৌথভাবে ঠিকাদারি শুরু করেন দেবাশীষ।
২০১৫ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত গণপূর্ত, জনস্বাস্থ্য, শিক্ষা প্রকৌশলী, এলজিইডিসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রায় ৩০ থেকে ৩৫টি নির্মাণকাজ যৌথভাবে করেন তারা; যার আনুমানিক মূল্য শত কোটি টাকা বলে জানান তিনি।
দেবাশীষ বাগচি বলেন, ২০২১ সালের প্রথম দিকে যৌথ ঠিকাদারি ব্যবসার পরিসমাপ্তি ঘটান সরফরাজ। এতে তার কাছে আমার মূলধন ও লভ্যাংশসহ আনুমানিক দুই কোটি ৫০ লাখ টাকার বেশি পাওনা হয়। তবে তিনি এক কোটি ৮০ লাখ টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে একটি লিখিত মীমাংসা করেন।
পরে ২০২৩ সালের ১৬ জুলাই আমাকে ঢাকায় গিয়ে চেকগ্রহণের জন্য যেতে বলেন সরফরাজ। ঢাকার মোহাম্মদপুর আদাবরে তার বাসার সামনে গেলে একটি কফি শপে বসে আমাকে রূপালি ব্যাংক মেহেরপুর শাখার এক কোটি ৮০ লাখ টাকার একটি চেক প্রদান করেন তিনি।
২৪ জুলাই টাকা উত্তোলনের জন্য অগ্রণী ব্যাংকে গিয়ে ওই চেক জমা করি। এক সপ্তাহ পর চেক ডিজ অনার দেখিয়ে ব্যাংক থেকে আমাকে সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়। যেখানে লেখা আছে, ২০২১ সালের ৪ এপ্রিল ওই অ্যাকাউন্ট বন্ধ করা হয়েছে।
পরে এ ঘটনায় মেহেরপুরের মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে একটি মামলা করেন দেবাশীষ বাগচি।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সাইফুল ইসলাম বলেন, চেক জালিয়াতি প্রমাণিত হওয়ায় আসামিকে এক বছরের কারাদণ্ডের পাশাপাশি সাড়ে তিন কোটি ৬০ লাখ টাকা জরিমানা করেছে আদালত।
আসামিপক্ষের আইনজীবী খন্দকার আব্দুল মতিন বলেন, চেক জালিয়াতি মামলায় খালাস না হওয়ায় আদালত এই রায় দিয়েছে।
মেহেরপুর জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি মারুফ আহমেদ বিজন বলেন, সাবেক মন্ত্রীর ভাই হওয়ায় প্রাপ্য টাকা না দিয়ে মামলা থেকে খালাস হওয়ার সব চেষ্টা করেছিল আসামি।
কিন্তু প্রথম ‘ডেভিল’ হিসাবে মেহেরপুর আদালতে প্রমাণিত হওয়ায় সাবেক মন্ত্রীর ভাইয়ের এই সাজা সঠিক বিচার বলে মনে করেন বাদীপক্ষের এই আইনজীবী।
এমটিআই
আপনার মতামত লিখুন :