কুমিল্লা: এক বছর আগে ১৫ বছরের এক কিশোরীর মুঠোফোনের মাধ্যমে প্রবাসী যুবকের সাথে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে ঐ কিশোরী শ্বশুর বাড়িতে অবস্থান করছিলেন। ১ বছর পর স্বামী বিদেশ থেকে এসে জানতে পারলেন তার স্ত্রী সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা। ঐ কিশোরী গৃহবধূকে ধর্ষণের অভিযোগে পুলিশ শ্বশুর ছেরু মিয়া (৫৫) কে গ্রেফতার করেছে। এমন ঘটনাটি ঘটেছে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের শ্রীপুর ইউনিয়নের বিডিআর বাড়িতে।
তথ্যটি শনিবার দুপুরে নিশ্চিত করেছেন, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ হিলাল উদ্দিন আহাম্মেদ। ছেরু মিয়া ঐ গ্রামের সিদ্দিক মিয়ার ছেলে। এ ঘটনায় কিশোরী গৃহবধূ বাদী হয়ে ধর্ষণের অভিযোগে থানায় মামলা দায়ের করে।
মামলায় কিশোরী গৃহবধু উল্লেখ করেন, গত ১ বছর আগে অভিযুক্ত ছেরু মিয়ার ওমান প্রবাসী ছেলের সাথে মুঠোফোনের মাধ্যমে তার বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে তিনি স্বামীর অবর্তমানে শশুর বাড়িতে অবস্থান করছেন। এরই মধ্যে ছেলের সুন্দরী স্ত্রীর প্রতি কুনজর পড়ে বাবা ছেরু মিয়ার। বিভিন্ন সময় পুত্রবধূকে বিভিন্ন প্রসাধনী, খাবার দাবার এবং মূল্যবান জিনিস উপহার দিতো।
এমনকি তাকে স্বর্ণ গহনাসহ জমি লিখে দেওয়ার প্রলোভন দেখাতো। যৌন উত্তেজক মূলক কথাবার্ত বলতো কুপ্রস্তাব ও দিতো। তার শশুর ছেরু মিয়ার সাথে ঐ কিশোরী গৃহবধুর ভালোবাসা তৈরি করার জন্য প্ররোচিত করতো। শশুরের এহন কার্যকালাপের বিষয়টি পুত্রবধু আত্মীয়-স্বজনকে জানাবে বললে ছেরু মিয়া পুত্রবধূর কাছে ক্ষমা চান।
গত বছরের ১৮ আগষ্ট ছেরু মিয়ার স্ত্রী আলেয়া বেগম তার বাবার বাড়িতে গেলে এ সুযোগে ভোরবেলা ঘুমিয়ে থাকা কিশোরী গৃহবধুকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেন শশুড় ছেরু মিয়া। ধর্ষণের ঘটনাটি পুত্রবধু প্রকাশ করলে তাকে প্রাণনাশসহ নানা ধরনের হুমকি ধমকি দেয়।
মামলায় ওই গৃহবধু আরো উল্লেখ করেন, গত ৩ মাস আগে তার প্রবাসী স্বামী দেশে আসেন। ১ থেকে দেড় মাস আগে ঐ গৃহবধূ শারীরিক অসুস্থতা বোধ করে। তখন বুঝতে পারেন তিনি অন্তঃসত্ত্বা। চলতি বছরের ১৮ মার্চ স্বামীকে নিয়ে তিনি একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে ডাক্তার দেখাতে গিয়ে জানতে পারেন গৃহবধু ৭ মাসের অন্তঃসত্ত্বা।
চৌদ্দগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্তকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ হিলাল উদ্দিন আহাম্মদ বলেন, ১৫ বছরের কিশোরী গৃহবধু শশুড় কর্তৃক ধর্ষণের স্বীকার হয়ে ৭ মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়েছে। এ ঘটনায় ওই কিশোরী শশুড় ছেরু মিয়াকে আসামী করে শুক্রবার রাতে থানায় মামলা দায়ের করলে পুলিশ তাৎক্ষণিক অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত শশুড়কে গ্রেফতার করেছে। মেডিকেল পরীক্ষার জন্য গৃহবধুকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। আর অভিযুক্ত শশুরকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
এআর
আপনার মতামত লিখুন :