ছবি : সংগৃহীত
বাগেরহাট: সুন্দরবনে লাগা আগুন থেমে থেমে জ্বলছে—কোথাও ধোঁয়ার কুণ্ডলী, আবার কোথাও আগুনের শিখা দেখা যাচ্ছে। আগুন কতটা এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে বা কীভাবে লেগেছে, সে বিষয়ে এখনো নিশ্চিত হতে পারেনি বনবিভাগ।
পানির উৎস দূরে থাকায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে বনবিভাগ ও ফায়ার সার্ভিসকে চরম বেগ পেতে হচ্ছে। আগুন যাতে নতুন এলাকায় ছড়িয়ে না পড়ে, সে জন্য বনবিভাগ ও স্থানীয় গ্রামবাসীরা ফায়ার লাইন কেটে দিয়েছে।
ফায়ার সার্ভিসের পাঁচটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছালেও, পানির উৎস দূরে থাকায় তারা এখনো পুরোপুরি কাজ শুরু করতে পারেনি। গত শনিবার দুপুরে সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের ধানসাগর স্টেশনের কলমতেজি টহল ফাঁড়ি এলাকায় আগুনের ধোঁয়া প্রথম দেখতে পায় বনবিভাগ।
বাগেরহাট ফায়ার সার্ভিস কার্যালয়ের উপ-সহকারী পরিচালক (ডিএডি) সাকরিয়া হায়দার বলেন, ‘বাগেরহাট, শরণখোলা ও মোরেলগঞ্জ নিয়ে মোট পাঁচটি ইউনিট সুন্দরবন সংলগ্ন ভোলা নদীর তীরে পৌঁছেছে। আজ রবিবার সকালে পাইপ লাইন বসিয়ে আগুনের স্থলে নেওয়ার কাজ শুরু করেছি। সুন্দরবনের যে এলাকায় আগুন লেগেছে সেখান থেকে মরা ভোলা নদীর দূরত্ব অন্তত তিন কিলোমিটার। এতো দূরত্বে পানি নিয়ে তা দিয়ে আগুন নেভাতে দারুন বেগ পেতে হচ্ছে।’
সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের বিভাগীয় বনকর্মকর্তা (ডিএফও) কাজী মোহাম্মদ নূরুল কমির বলেন, ‘শনিবার দুপুর একটা নাগাদ বনকর্মীরা চাঁদপাই রেঞ্জের কলমতেজি টহল ফাঁড়ি এলাকায় আগুনের ধোঁয়ার কুণ্ডলী দেখতে পায়। সেখানে আগুনের কুণ্ডলী দেখা যাচ্ছে। আগুনের বড় কোনো শিখা নেই, আছে শুধু ধোঁয়া। এখন আগুনের যে ধরণ দেখছি তাতে ভয়ের কিছু দেখছি না। আগুন লাগার স্থানটি সুন্দরবনের বেশ গহীনে। পানির উৎস সুন্দরবনের মরা ভোলা নদী। যার দূরত্ব অন্তত তিন কিলোমিটার। তিন কিলোমিটার দূর থেকে পানি সংগ্রহ করে আগুন নেভাতে হবে। সুন্দরবনে লাগা আগুন যাতে বিস্তৃতি লাভ করতে না পারে সেজন্য স্থানীয় শতাধিক গ্রামবাসীকে সাথে নিয়ে ফায়ার লাইন (নিচ থেকে মাটি কেটে বিচ্ছিন্ন করা) কেটে আগুন নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে। আগুন নেভাতে ফায়ার সার্ভিসের পাঁচটি ইউনিট পৌঁছেছে। আজ সকালে তারা ভোলা নদীতে পাইপ লাইন বসিয়ে পানি নেওয়ার কাজ শুরু করেছে।’
অসাবধনতাবশত সুন্দরবনে প্রবেশ করা জেলে, বাওয়ালী বা মৌয়ালদের ফেলে দেওয়া বিড়ি সিগারেটের আগুন থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়ে থাকতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। সুন্দরবনের আগুন লাগা এলাকায় লতাগুল্ম ও বলা জাতীয় গাছপালা রয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত বছর ৪ মে চাঁদপাই রেঞ্জের আমুরবুনিয়া এলাকায় আগুন লাগে। তাতে বনের পাঁচ একর এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
এসআই
আপনার মতামত লিখুন :