রাজশাহীতে ঈদের বাজারে পোশাকের দাম চড়া, হিমশিম খাচ্ছেন ক্রেতারা

  • রাজশাহী ব্যুরো | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: মার্চ ২৪, ২০২৫, ০১:২০ পিএম
রাজশাহীতে ঈদের বাজারে পোশাকের দাম চড়া, হিমশিম খাচ্ছেন ক্রেতারা

ছবি : প্রতিনিধি

রাজশাহী: রাজশাহীর ঈদবাজারে এবার সবধরনের পোষাকের দাম বেশি হওয়ায় বাজেটের সঙ্গে তাল মেলাতে হিমশিম খাচ্ছেন ক্রেতারা। ইতিমধ্যে রাজশাহীতে জমে উঠেছে ঈদের বাজার। দোকানপাট আর শপিংমলগুলো সেজে উঠেছে বাহারি পোশাকে। কিন্তু কেনাকাটায় গিয়ে হিসাব মেলাতে পারছেন না ক্রেতারা। তাদের অভিযোগ, এবার সব ধরনের পোশাকেরই দাম বেশি। তাই বাজেটের সঙ্গে তাল মেলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের। তারপরও কেনাকাটা করছেন তারা। 

রাজশাহীতে ১০ রোজার পর থেকেই ফুটপাত থেকে শুরু করে অভিজাত বিপণিবিতান-সব জায়গাতেই ঈদের কেনাকাটার আমেজ ছড়িয়ে পড়েছে। দুদিন ধরে ক্রেতাদের ভিড় লক্ষ্যণীয়। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত মার্কেটগুলো খোলা থাকছে। সন্ধ্যার পর আলোর ঝলকানিতে প্রাণবন্ত হয়ে উঠছে বিপণিবিতানগুলো। ক্রেতাদেরও সবচেয়ে বেশি ভিড় দেখা যাচ্ছে সন্ধ্যার পর থেকে। ক্রেতা সামলাতে ব্যস্ত সময় পার করছেন দোকানীরাও।

নিম্নআয়ের মানুষেরা নগরের গণকপাড়া এলাকার বিভিন্ন মার্কেট, হড়গ্রাম নিউমার্কেট ও ফুটপাত থেকে ঈদের কেনাকাটা সারছেন। মধ্যবিত্তরা যাচ্ছেন নিউমার্কেট, আরডিএ মার্কেট ও থিম ওমর প্লাজাসহ বিভিন্ন শপিংমল ও শোরুমে। আর সামর্থ্যবানরা যাচ্ছেন রাজশাহীর বিভিন্ন সিল্কের শোরুমগুলোতে। ফুটপাত ও শপিংমলগুলোতে ১০ রোজার পর থেকে ঈদের কেনাকাটা শুরু হলেও সিল্কের শোরুমগুলো জমেছে রোজার শুরু থেকেই। বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা ও ধর্নাঢ্য ব্যক্তিরা স্বপরিবারে কেনাকাটায় রোজার শুরু থেকেই সিল্কের শোরুমগুলো জমিয়ে তুলেছেন।

নগরের সাহেববাজার, আরডিএ মার্কেট, নিউমার্কেট, হকার্স মার্কেট, গণকপাড়া, থিম ওমর প্লাজাসহ কয়েকটি বিপণিবিতান ঘুরে দেখা গেছে, সর্বত্রই ক্রেতার ভিড়। বিশেষ করে সাহেববাজারের আরডিএ মার্কেটে ভিড় সবচেয়ে বেশি। এই বাজারে মেয়েদের শাড়ি, থ্রি-পিস, বোরকা, জুতা-স্যান্ডেল, অলঙ্কার, কসমেটিকস সবকিছুই সহজলভ্য হওয়ায় নারী ক্রেতার উপস্থিতি বেশি।

অন্যদিকে ছেলেদের জন্য নিত্যনতুন ডিজাইনের পাঞ্জাবি, জিন্স ও টি-শার্টের দোকান থাকায় তরুণদের ভিড়ও চোখে পড়ার মতো। নগরের হকার্স মার্কেট ও সিট কাপড়ের দোকানেও বেশ ভিড় লক্ষ করা গেছে। সাহেববাজার আরডিএ মার্কেটে কথা হয় ক্রেতা সাদিয়ার সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমার শ্বশুর-শাশুড়ি আর ছেলে-মেয়েদের জন্য কেনাকাটা করতে এসেছি। থ্রি-পিসের দাম তো গতবারের তুলনায় দ্বিগুণ মনে হচ্ছে। গতবারের দেড় হাজার টাকার শাড়ি এবার আড়াই হাজার। সবকিছুর অস্বাভাবিক দাম। আমাদের কষ্ট।’

রাজশাহীর সপুরা সিল্কের শোরুমে গিয়ে দেখা গেছে, গতবছরও সেখানে দুই হাজার টাকার মধ্যে পাঞ্জাবি পাওয়া গেছে। এবার সাড়ে তিন হাজারের নিচে কোনো পাঞ্জাবি নেই। শাড়ি, থ্রি-পিসসহ অন্যান্য পোশাকের দামও বেড়েছে। ক্রেতা সাবিয়ার রহমান বলেন, ‘রাজশাহীতে আছি কয়েকবছর ধরে। আত্মীয়-স্বজন ও পরিবারের সদস্যরা ঈদের সময় আমার কাছে সিল্কের পোশাক প্রত্যাশা করেন। আমার কাছেও এ বছর দাম বেশি মনে হচ্ছে।’

রাজশাহী সিল্ক ফ্যাশানের ব্যবস্থাপক সেলিম রেজা বলেন, ‘সত্যি বলতে রাজশাহীতে আমরা চাহিদা অনুযায়ী সিল্কের সুতা পাই না। সুতা আমদানি করতে হয় চীন ও ভারত থেকে। আন্তর্জাতিক বাজারে ডলারের মূল্য বেড়ে যাওয়ায় সুতা আমদানিতে খরচ বেড়েছে। ফলে উৎপাদিত পোশাকের দামও অনেকটা বেড়েছে। স্থানীয়ভাবে সুতার চাহিদা মিটলে দাম সহনীয় থাকত।’

রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মাসুদুর রহমান রিংকু বলেন, ‘ব্যবসায়ীরা সারাবছর এই সময়টার জন্যই তাকিয়ে থাকেন। এবার রোজার শুরু থেকেই বাজারের পরিস্থিতি ভালো। ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ই স্বাচ্ছন্দ্যে কেনাবেচা করতে পারছেন।

এসআই

Link copied!