ছাত্রলীগ কর্মী থেকে ছাত্রদলের সভাপতি

  • জেলা প্রতিনিধি | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: মার্চ ২৫, ২০২৫, ১০:০৯ এএম
ছাত্রলীগ কর্মী থেকে ছাত্রদলের সভাপতি

রাজশাহী: ছাত্রলীগের নূর ইসলাম নামে এক কর্মীকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) ছাত্রদলের সভাপতি করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। নতুন সভাপতির এখন ছাত্রত্বও নেই। ২০২৩ সালেই তিনি এমবিবিএস শেষ করেছেন। এখন প্রাইভেট হাসপাতালে মেডিকেল অফিসার হিসেবে কর্মরত তিনি। তাকে সভাপতি করায় ছাত্রদলের নেতাদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। 

রোববার (২৩ মার্চ) ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছিরের স্বাক্ষরে রামেক ছাত্রদলের ১১ সদস্য বিশিষ্ট আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়। এতে সভাপতি করা হয় রামেকের সাবেক শিক্ষার্থী নুর ইসলামকে। আগামী ৩০ দিনের মধ্যে আংশিক কমিটিকে পূর্ণাঙ্গ কমিটির তালিকা অনুমোদনের জন্য কেন্দ্রে জমা দিতে বলা হয়েছে। কমিটি ঘোষণার পর ছাত্রলীগের বিভিন্ন কর্মসূচিতে নুর ইসলামের অংশ নেওয়ার ছবি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

একাধিক ছবিতে ছাত্রলীগ নেতাদের সঙ্গে নুরকে সাবেক সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের মেয়ে ও ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি আনিকা ফারিহা জামান অর্ণাকে ফুল দিতে দেখা যাচ্ছে। অর্ণার সঙ্গে একই ছবিতে তাকে বঙ্গবন্ধু ম্যুরালে শ্রদ্ধা নিবেদন, রামেক ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মোমিনুল ইসলামের সঙ্গে শোক দিবসে খাবার বিতরণ, মিছিলে অংশগ্রহণ, শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন, শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামানের কবর জিয়ারত করতেও দেখা গেছে। আরেক ছবিতে আওয়ামীপন্থী চিকিৎসকদের সংগঠন স্বাচিপের নেতা (বর্তমানে পলাতক) ডা. নওশাদ আলীর সঙ্গে কেক কাটতে দেখা গেছে নুরকে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ছাত্রলীগে নুর ইসলামের পদ ছিল না। তবে তিনি ছাত্রলীগের কর্মী ছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি পাবনা। মেডিক্যাল কলেজের ছাত্র থাকা অবস্থায় তিনি নুরুন্নবী হলে থাকতেন। ওই হলে তাকে ছাত্রলীগের ‘দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা’ ধরা হতো। ওই সময় ছাত্রলীগের প্রতিটি কর্মসূচিতেই অংশ নিতেন। 

জানতে চাইলে রামেক ছাত্রদলের সভাপতি নুর ইসলাম বলেন, ‘প্রথম বর্ষে থাকা অবস্থায় জোর করে ছাত্রলীগের কিছু প্রোগ্রামে আমাকে নেওয়া হয়েছিল। আমি কোনোদিনই ছাত্রলীগ করতাম না। আমি জুলাই আন্দোলনে রামেক থেকে নেতৃত্ব দিয়েছি। দলকে সুসংগঠিত করেছি। তাই কেন্দ্র আমাকে রামেক ছাত্রদলের সভাপতি করেছে।’

তিনি জানান, এর আগে ছাত্রদলের কোনও পদে ছিলেন না। সরাসরি রামেক ছাত্রদলের সভাপতি হয়েছেন। 

এবিষয়ে রাজশাহী মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি আকবর আলী জ্যাকি বলেন, ‘মেডিক্যাল কলেজ ছাত্রদল মহানগরের অধীনে না। তারা আমাদের প্রোগ্রামেও আসে না। আমি নুর ইসলামকে আগে সেভাবে চিনতাম না। ৫ আগস্টের পর থেকে চিনি, সে আমাদের কর্মী হয়েছিল।’

ছাত্রলীগ নেতাদের সঙ্গে নুর ইসলামের থাকা ছবির ব্যাপারে জানতে চাইলে নগর ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক খন্দকার মাকসুদুর রহমান সৌরভ বলেন, ‘কমিটি করা হয়েছে কেন্দ্র থেকে। কয়েকজন দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় নেতা তদন্ত করেছেন। তারপর কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক কমিটি দিয়েছেন। তাই এ ব্যাপারে আমার কোনও মন্তব্য নেই।’

রামেকসহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের কমিটি করার আগে যাচাই-বাছাইয়ের দায়িত্বে ছিলেন কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি মাকসুদুর রহমান সুমিতসহ কয়েকজন। সুমিতের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, তার বাবা অসুস্থ। তিনি হাসপাতালে আছেন। এখন কথা বলতে পারবেন না।

ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, ‘কমিটি দেওয়ার পর ছাত্রলীগ নেতাদের সঙ্গে নুরের ছবিগুলো আমরাও পেয়েছি। রাতেই আমরা তদন্ত করে দেখেছি। তাকে জোর করে ছাত্রলীগের কয়েকটা প্রোগ্রামে নেওয়া হয়েছিল। পরে দীর্ঘদিন ধরেই সে আমাদের সঙ্গে ছিল।’

এম

Link copied!