বেপরোয়া প্রাইভেট কারকে কেন্দ্র করে জনমনে নানা প্রশ্ন

  • যশোর প্রতিনিধি | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: মার্চ ২৮, ২০২৫, ১০:০৪ পিএম
বেপরোয়া প্রাইভেট কারকে কেন্দ্র করে জনমনে নানা প্রশ্ন

যশোর: শহরে বেপরোয়া এক প্রাইভেটকারে এক ঘন্টার ব্যবধানে চারটি দুর্ঘটনা ঘটেছে। চৌগাছা থেকে ছেড়ে আসা বেপরোয়া এক প্রাইভেটে বৃহস্পতিবার বিকালে যশোর সদরের পৃথক-পৃথক স্থানে এই ঘটনা ঘটে। 

ঢাকা মেট্রো-গ ১৯-৫১৫৬ প্রাইভেট কারটি চালক ছিলেন গাড়ির মালিক চৌগাছা পৌর এলাকার পশ্চিম কারিগর পাড়ার বাসিন্দা ও রায় টি স্টোলের মালিক রায়হান সোবাহান। 

গাড়ির ধাক্কায় এসময় দুইজন গুরুত্বর আহত ও দুই জন সাধারণ আঘাত পেয়েছেন। একজনকে যশোর সরকারি হাসপাতালে নেওয়া হলে অবস্থা আশংকাজনক হওয়াই তাকে ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে রেফাট করা হয়। এসময় ১৫ কি.মি. ধাওয়া করে চালককে আটক করতে সক্ষম হয় পুলিশ। কিন্তু এক ঘন্টার ব্যবধানে গাড়ির বেপরোয়া গতির এমন দুর্ঘটনায় জনমনে বেধেছে নানা প্রশ্ন।

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, প্রাইভেট যোগে চৌগাছা থেকে যশোরের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসে রায়হান সোবাহান ও সাইফুল ইসলাম সোহেল। আমবটতলা সংলগ্ন যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে থেকে বেপরোয়া গতিতে ধাক্কা দেয় আব্দুল মালেক নামের এক সাইকেল আরোহীর। এসময় দুর্ঘটনায় সাইকেল আরোহীর হাতের কব্জি থেকে ভেঙে গুরুত্বর আহত হন। 

এসময় গাড়িটি না থামিয়ে বেপরোয়াভাবে চলতে থাকে গাড়িটি। দুর্ঘটনার পাশে উপস্থিত থাকা সাঁজিয়ালি পুলিশ ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুর রউফ ও স্থানীয়রা মোটর সাইকেল যোগে ধাওয়া করেন। গাড়িটি শহরের খয়েরতলা এলাকায় পৌঁছালে সাইফুল চলন্ত গাড়ি থেকে ঝাঁপ দেন। 

এসময় পিছন থেকে আসা ট্রাকে সাইফুলের একটি হাত ও একটি পা ট্রাকের চাকায় পিষ্ট হয়ে যায়। চালক রায়হান গাড়ি না থামিয়ে হাশিমপুরের দিকে গাড়ি চালাতে থাকে। গাড়ির সামনের একটি চাকা খুলে পড়ে গেলেও তিন চাকায় চালাতে থাকে রায়হান। 

পরবর্তীতে সামনে থাকা এক মোটর সাইকেল আরোহীকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন ধানের খেতে ফেলে দেয় প্রাইভেট কারটি। তারপর ক্ষ্যান্ত না হয়ে কাশিমপুর বাজারে আরো এক যুবককে স্বজোরে আঘাত করে গাড়িটি। এসময় কাশিমপুর বাজারের স্থানীয়রা গাড়িটিকে থামান এবং পুলিশ আটক করতে সক্ষম হন।

স্থানীয়রা আরও বলেন, এমন কাজ কেউ সুস্থ মস্তিস্কে করতে পারে না। তার কাছে যদি অবৈধ কিছু নাই থাকবে তাহলে এতো বেপরোয়া ভাবে গাড়ি চালানোর কারণ কি? নিজের সহযোগী ট্রাকের নিচে পড়ার পরও তিনি দাড়ালেন না। তিন চাকায় গাড়ি চালানো ও এতোগুলো দুর্ঘটনার পরও তিনি না থামার কারণ তো রহস্যজনক।

পুলিশ জানায়, দুর্ঘটনার গাড়িটির গতি দেখে সন্দেহ হয়। ভেবেই নিয়েছিলাম গাড়িতে অবৈধ কিছু অথবা মাদক আছে। তাই গাড়িকে থামানোর চেষ্টা করি। গাড়ি থেকে একজনের ঝাঁপ দেওয়াই সন্দেহ আরও বাড়তে থাকে। কিন্তু গাড়িটির এতো গতি ছিলো যে আমরা পিছু করতে পারছিলাম না। খয়ের তলা থেকে গাড়িটি আমাদের নাগালের বাইরে চলে যায়। পরে জানতে পারি গাড়িটি কাশিমপুর।

এদিকে রায়হানকে পুলিশ হেফাজতে নিলেও রাত ১২ টার দিকে ভূক্তভোগীদের সাথে রায়হানের পরিবারের সমঝতার মাধ্যমে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ না করলে পুলিশ তাকে ছেড়ে দেয়।

এ বিষয়ে গাড়ির মালিক ও চালক রায়হান সোবাহান বলেন, আমি কি করবো বুঝতে পাছিলাম না, ভয়ে এমনটা করেছি। আমি ক্ষতিগ্রস্থদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করবো। আমি যেটা করেছি তাতে মানুষের অবৈধ কিছু আছে এমনটা সন্দেহ করাটাই স্বাভাবিক। কিন্তু আমার কাছে কিছু ছিলো না।

এ বিষয়ে কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল হাসনাত বলেন, আমরা গাড়ি জব্দ করেছি এবং ভূক্তভোগীদের সার্বিক সহযোগিতা করতে বলেছি। তারপরও কোনো অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করবো।  

এআর

Link copied!