জুতার মালা পরানো সেই বীর মুক্তিযোদ্ধার বাড়িতে এবার সন্ত্রাসী হামলা

  • কুমিল্লা প্রতিনিধি | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: এপ্রিল ৫, ২০২৫, ১১:৫৮ এএম
জুতার মালা পরানো সেই বীর মুক্তিযোদ্ধার বাড়িতে এবার সন্ত্রাসী হামলা

কুমিল্লা : কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে গলায় জুতার মালা পরিয়ে লাঞ্ছনার শিকার হওয়া বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হাই ওরফে কানুর বাড়িতে এবার সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করার অভিযোগ উঠেছে। যারা গলায় জুতার মালা পরিয়ে তাকে লাঞ্ছিত করেছেন, তাদের নির্দেশেই এ হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ বীর মুক্তিযোদ্ধার স্বজনদের।

বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) দিবাগত রাত ১টার দিকে উপজেলার বাতিসা ইউপির লুদিয়ারা গ্রামে আবদুল হাইয়ের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে রাতেই পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছালে হামলাকারী ব্যক্তিরা পালিয়ে যান।

এ বিষয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধার ছেলে ও বাতিসা ইউপির যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা ভূঁইয়া বলেন, ঘটনার প্রায় সাড়ে তিন মাস হয়েছে। আমার বাবাকে যারা গলায় জুতার মালা পরিয়ে লাঞ্ছিত ও মারধর করেছেন। তাদের বিরুদ্ধে মামলা হলেও ঘটনার মূল হোতাসহ আসামিরা এখনো গ্রেপ্তার হননি। আসামিরা এলাকায় প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। উল্টো আসামিরা বিভিন্নভাবে আমাদের হয়রানি করাসহ মামলা তুলে নেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছেন। মামলা তুলে না নেওয়ার জেরে গতকাল রাতে এ হামলার ঘটনা ঘটেছে।

তিনি আরও বলেন, তার বাবাকে জুতার মালা পরানোর মামলার প্রধান আসামি আবুল হাশেম মজুমদার, স্থানীয় সালাউদ্দিন, আতিক, রাসেল, পেয়ার আহমেদ, আবদুল কাইয়ুম, আরিফুর রহমানসহ কয়েকজন সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় নেতৃত্ব ও ইন্ধন দিয়েছেন। গলায় জুতার মালা পরিয়ে লাঞ্ছনার পর থেকে তার বাবা ফেনীতে অবস্থান করেন। প্রশাসনের আশ্বাসে তিনি পরিবারের সবাইকে নিয়ে বাড়িতে আসেন ঈদ করতে।

এর মধ্যে বৃহস্পতিবার রাতের ৩০-৪০ জনের একটি সন্ত্রাসী গ্রুপ রামদা, চায়নিজ কুড়ালসহ বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আমাদের বাড়িঘরে হামলা ভাঙচুর করে। এসময় তারা আমাদের বাড়ির গেট, ঘরের দরজা-জানালায় কুপিয়েছে।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত আবুল হাশেম মজুমদারের মুঠোফোন বন্ধ থাকায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

চৌদ্দগ্রাম থানার ওসি হিলাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাই কানুর বাড়িতে যায়। এ সময় কয়েকটি মোটরসাইকেলে আসা দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় মামলা হয়নি। ওই মুক্তিযোদ্ধার পরিবারের নিরাপত্তায় বাড়িতে পাহারায় রয়েছে পুলিশ।

এর আগে ২২ ডিসেম্বর আব্দুল হাই কানুকে স্থানীয় জামায়াত সমর্থক আবুল হাসেম ও অহিদুর রহমানের নেতৃত্বে গলায় জুতার মালা পরিয়ে হেনস্তা করা হয়। ঘটনার শুরুতে জামায়াত কর্মীদের সংশ্লিষ্টতা নেই বলে দল থেকে দাবি করলেও পরদিন উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি বেলাল হোসাইন স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে ঘটনায় নেতৃত্ব দেওয়া জামায়াত কর্মী আবুল হাশেম ও অহিদুর রহমানকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়।

এ ঘটনায় বহিষ্কার হওয়া দুই জামায়াত কর্মীসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন আবদুল হাই। বর্তমানে সব আসামি জামিনে মুক্ত। এদিকে আবদুল হাই কানুর বিরুদ্ধে এলাকায় অভিযোগ আছে, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালীন দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক থাকার সুবাদে তিনি ও তার ছেলে এলাকায় প্রভাব বিস্তার করেন। বিভিন্ন সময়ে তাদের দ্বারা হয়রানির শিকার হয়েছেন বিরোধী দলের নেতাকর্মী।

এমটিআই

Link copied!