ট্রাইব্যুনালে কাঁদলেন ওসি মাজহার, বললেন ‘আমি ছাত্রদের পক্ষে ছিলাম, আমাকে বাঁচান’

  • আদালত প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: নভেম্বর ২০, ২০২৪, ০৫:২৩ পিএম
ট্রাইব্যুনালে কাঁদলেন ওসি মাজহার, বললেন ‘আমি ছাত্রদের পক্ষে ছিলাম, আমাকে বাঁচান’

ঢাকা : আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শুনানির সময় কান্নায় ভেঙে পড়েন গুলশান থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাজহারুল ইসলাম। এ সময় বিচারপতিদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে তিনি বলেন, আজ তার এখানে দাঁড়িয়ে থাকার কথা ছিল না। তিনি নির্দোষ, তাকে যেন বাঁচানো হয়।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বুধবার (২০ নভেম্বর) শুনানির সময় চিফ প্রসিকিউটর মো. তাজুল ইসলাম গুলশান থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাজহারুল ইসলামসহ আরও কয়েকজনের বিরুদ্ধে অভিযোগগুলো ট্রাইব্যুনালের সামনে উপস্থাপন করেন।

শুনানিতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম সাভারের গণহত্যার ঘটনার বর্ণনা দিচ্ছিলেন। এসময় সেখানে শতাধিক ব্যক্তিকে হত্যা, আহত ও আশুলিয়া থানায় লাশ পোড়ানোর ঘটনায় তিনজনের নাম উল্লেখ করেন।

চিফ প্রসিকিউটর সাভারের ঘটনায় ঢাকা জেলার সাবেক পুলিশ সুপার মো. আব্দুল্লাহ আল কাফি, ঢাকার সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সাভার সার্কেল) মো. শাহিদুর ইসলাম এবং সাবেক ওসি মাজহারুল ইসলামের নাম উল্লেখ করেন।

এ সময় কাঠগড়া থেকে দাঁড়িয়ে চিৎকার দিয়ে ওঠেন মাজহারুল ইসলাম। তিনি কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ‘আমি কখনো সাভারে দায়িত্ব পালন করিনি। আমি ছাত্রদের পক্ষে ছিলাম।’ তখন আদালত বলেন, ‘আমরা দেখব। সম্পৃক্ততা না থাকলে ন্যায় বিচার পাবেন।’ চিফ প্রসিকিউটর পরে বলেন, ‘আমার ভুল হয়েছে। মাজহারুল ইসলাম সাভারে ছিলেন না। তিনি গুলশান থানার ওসি ছিলেন।’

এরপর তিনি গুলশান এলাকায় হত্যা, নির্যাতনের বর্ণনা দেন। তাজুল ইসলাম বলেন, মাজহারুল ইসলাম গুলশানে দায়িত্ব পালনের সময় আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে হত্যার নির্দেশ দেন। তবে গুলশানের হত্যাযজ্ঞের বর্ণনা দেওয়ার সময় নিশ্চুপ ছিলেন মাজহারুল ইসলাম।

পরে জুলাই-আগস্টের গণহত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় সাবেক পুলিশ প্রধান ও ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) সাবেক মহাপরিচালকসহ আট কর্মকর্তার বিরুদ্ধে এক মাসের মধ্যে তদন্ত শেষ করতে নির্দেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। একইসঙ্গে তাদের ট্রাইব্যুনালের মামলায় কারাগারে রাখতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এই মামলার পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ১৯ ডিসেম্বর দিন ধার্য করা হয়। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এই আদেশ দেন।

এদিন সকালে জুলাই-আগস্টের গণহত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় সাবেক পুলিশ প্রধান ও ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) সাবেক মহাপরিচালকসহ আট কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। তার আগে প্রিজন ভ্যানে করে ৮ কর্মকর্তাকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।

গত ২৭ অক্টোবর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল প্রসিকিউশনের আবেদন মঞ্জুর করে এই ৮ কর্মকর্তাকে হাজির করতে নির্দেশ দেন।

এমটিআই

Link copied!