প্রধানমন্ত্রীর কাছে ন্যায় বিচার চাইলেন এক মৃত পাইলটের মা

  • নিজস্ব প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৮, ২০২৩, ০৭:১৪ পিএম
প্রধানমন্ত্রীর কাছে ন্যায় বিচার চাইলেন এক মৃত পাইলটের মা

ঢাকা: বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মফিদুর রহমান, গালফ এয়ারের কান্ট্রি ম্যানেজার ইসা শাহ ও কো-পাইলট খালিল আবদুল রাজাকের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের আদালতে একটি রিট দায়ের হয়েছে।

সোমবার (১৮ সেপ্টেম্বর) হাইকোর্টে রিটটি করেন গালফ এয়ারের ক্যাপ্টেন মোহান্নাদ ইউসুফ হাসান আল হিন্দির মা মিসেস সামিহা।

ছেলের মৃত্যুর সঙ্গে সম্পৃক্ততা থাকায় সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে তিনি রিট পিটিশনটি করেন।
গালফ এয়ারের কর্মকর্তা ও ঢাকার ইউনাইটেড হাসপাতালকেও ছেলের মৃত্যুর জন্য দায়ী করেন ইউসুফ হাসান আল হিন্দির মা মিসেস সামিহা।

২০২২ সালের ১৪ ডিসেম্বর ইউনাইটেড হাসপাতালের চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান ইউসুফ হাসান আল হিন্দি। মিসেস সামিহার দাবি, ইউনাইটেড হাসপাতাল তার ছেলের চিকিৎসায় অবহেলা করেছিল।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সময়ে ইউসুফের তিনবার হার্টঅ্যাটক হয়। তা ছাড়া তাকে যখন ফ্লাইটের দায়িত্ব দেওয়া হয় তখন গালফ এয়ার ফেডারেল এভিয়েশন অথরিটির দেওয়া গাইডলাইন অনুসরণ করা হয়নি। ইউসুফের হার্টে ৯৯ শতাংশ ব্লকেজ ছিল।

মিসেস সামিহা বলেন, বাহরাইন ও গালফ এয়ার বাংলাদেশের ব্যবস্থার অপব্যবহার করে এবং ন্যায়বিচারকে বাধাগ্রস্ত করে আমার ছেলের মৃত্যুতে তাদের সম্পৃক্ততা মুছে ফেলার আপ্রাণ চেষ্টা করছে। আমার ছেলে গালফ এয়ারে ২৫ বছর ধরে কাজ করেছে। কেন গালফ এয়ার ইউনাইটেড হাসপাতালের ডাক্তারদের কারাগারে দিতে পারল না? তারা কি লুকাচ্ছে? তারা আমার আত্মাকে হত্যা করেছে।

তিনি বলেন, গালফ এয়ার এবং মুসলিম দেশ বাহরাইন আমার ছেলের কাছ থেকে আমার ইসলামিক উত্তরাধিকারকে জিম্মি করে তাদের ও চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে আমাদের আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া বিরত রাখতে বলপ্রয়োগ করছে, এটি লজ্জাজনক। আমার ছেলের যদি আধাঘণ্টা পরে হার্ট অ্যাটাক হয়ে যেত তবে এটি একটি ভিন্ন গল্প এবং ট্র্যাজেডি হতো। কিন্তু আল্লাহকে ধন্যবাদ, উড়োজাহাজটি ওড়ার সময় তিনি মারা যাননি। অনেক নিরীহ জীবন রক্ষা পেয়েছিল।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি ছেলের মৃত্যুর ঘটনায় ন্যায়বিচার নিশ্চিতের জন্য প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান মিসেস সামিহা। তিনি বলেন, আশা করি শেখ হাসিনার সরকার কোনো বৈষম্যমূলক আচরণ করবে না। ন্যায়বিচার লুকানোর জন্য গালফ এয়ার ও ডাক্তারদের সঙ্গে ষড়যন্ত্র না করার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি। যখন তারা আমার ছেলেকে হত্যা করেছিল, তিনি বাংলাদেশিদের সেবা করছিলেন; তিনি আপনাদের অতিথি ছিলেন।

এ বিষয়ে মিসেস সামিহার আইনজীবী ব্যারিস্টার সাকিব মাহবুব বলেন, আজ যে রিট আবেদনটি দায়ের হয়েছে তার মূল বিষয় বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানের গালফ এয়ারকে তদন্ত করার ব্যাপারে অবহেলা এবং অস্বীকৃতি।   বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ আইন অনুযায়ী কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশ থেকে যেসব এয়ারলাইন্স ফ্লাইট পরিচালনা করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষমতা রাখে। কিন্তু বিস্ময়করভাবে এর আগে হাইকোর্টে পাইলটের বোনের রিট পিটিশনে মহামান্য হাইকোর্টের আদেশ থাকা সত্ত্বেও বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ গালফ এয়ারের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের তদন্ত করতে অস্বীকৃতি জানায়। এর যুক্তি হিসেবে তারা বলেন, কোনো বিদেশি এয়ারলাইন্সের বিরুদ্ধে তাদের তদন্ত করার কোনো এখতিয়ার নেই। কেউ যদি বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ আইন, ২০১৭ দেখেন, সেখান থেকে স্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হবে, বাংলাদেশে যদি কোনো ঘটনা ঘটে সেক্ষেত্রে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়ার এখতিয়ার তাদের রয়েছে।

আইএ

Link copied!