খুলনা: হত্যা, হামলা ও মারধরের চার মামলায় খুলনা-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুস সালাম মূর্শেদীর জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছেন আদালত। এরপর তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
রোববার (২২ ডিসেম্বর) খুলনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক এ আদেশ দেন। পৃথক দু’টি আদালতের বিচারক হলেন, সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৩ এর বিচারক তাকিয়া সুলতানা ও জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-২ এর বিচারক মোঃ আলতাফ মাহমুদ।
আসামিপক্ষের আইনজীবী ব্যরিস্টার তাহসিন আহমেদ জানান, সালাম মূর্শেদীকে ৪টি মামলায় শ্যোন অ্যারেস্ট দেখিয়ে আদালতে হাজির করা হয়। এসময় জামিনের আবেদন করা হলে আদালত তা নামঞ্জুর করেন। এরপর তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এর আগে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থায় দুপুর ১২টায় সালাম মূর্শেদীকে আদালতে হাজির করা হয়। জামিনের আবেদন শুনানি শেষে আবারও তাকে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থায় কারাগারে পাঠানো হয়।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০২২ সালের ২২ অক্টোবর সকাল সাড়ে ৯ টার দিকে ফুলতলা থানা বিএনপি’র যুগ্ম আহ্বায়ক কাজী আনোয়ার হোসেন বাবুর নেতৃত্বে প্রায় ২ হাজার নেতাকর্মী খুলনা ডাকবাংলা মোড়ে দলের বিভাগীয় সমাবেশে যোগদানের জন্য নদী পথে ট্রলারযোগে রওনা হয়। তাদের কিছু নেতাকর্মী চন্দনীমহল (কাটাবন) ঘাটে অবস্থান করছে এমন সংবাদ পান বিএনপি’র ওই নেতা। বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে ট্রলার ওই স্থানে পৌঁছানোর সাথে সাথে আওয়ামী সরকারের সন্ত্রাসীরা তাদের ওপর শর্টগান, কাটা রাইফেল, বন্দুক, পিস্তল, রামদা, চাইনিজ কুড়াল, রড, জি আই পাইপ, চা-পাতি, বোমা, লাঠিসোটা নিয়ে অতর্কিত হামলা চালায়। হামলার পর স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে।
এ মামলার বাদী বিএনপি নেতা কাজী আনোয়ার হোসেন বাবু মুঠোফোনে বলেন, সেদিন আমরা শান্তিপূর্ণ সমাবেশে যোগ দেওয়ার জন্য ট্রলারযোগে খুলনায় যাচ্ছিলাম। ওইদিন আসামিরা আমাদের ট্রলারে উঠে আমাদের ওপর অমানবিক অত্যাচার করে। আমাদের লক্ষ্য করে বৃষ্টির মতো পাথর নিক্ষেপ করে তারা। ইচ্ছামতো মারধর করে। আমাদের লক্ষ্য করে গুলি করতে থাকে। আমাদের অনেক নেতাকর্মী তাদের হামলা থেকে বাঁচতে নদীতে ঝাঁপ দেন। অনেককে মারধর করে নদীতে ফেলে দেয়া হয়।
তিনি আরও বলেন, পরিবেশ পরিস্থিতি অনুকূলে আসলে এবং সরকারের পতন হলে দিঘলিয়া থানায় ২০২৪ সালের ৪ অক্টোবর এ হামলার ঘটনায় মামলা দায়ের করেন তিনি। এ ঘটনায় তিনি সাবেক সংসদ সদস্য শেখ হেলালসহ ২১৪ জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় খুলনা ৪ আসনের সাবেক সংসদ সালাম মুশের্দী ৯ নং আসামি।
এদিকে, সালাম মূর্শেদীকে কারাগারে নিয়ে যাওয়ার পর আদালত প্রাঙ্গণে তার অনুসারি ও বিরোধীপক্ষের মাধ্যে বাকবিতন্ডা হয়।
প্রসঙ্গত, গত ১ অক্টোবর রাতে রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে সালাম মূর্শেদীকে গ্রেপ্তার করেছিল র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
এসএস
আপনার মতামত লিখুন :