কমলাপুর রেলস্টেশনে পর্নো ভিডিও প্রচার, জড়িতদের খোঁজার নির্দেশ

  • আদালত প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: জানুয়ারি ৬, ২০২৫, ০৯:৪৭ এএম
কমলাপুর রেলস্টেশনে পর্নো ভিডিও প্রচার, জড়িতদের খোঁজার নির্দেশ

ঢাকা: কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের মনিটরে সম্প্রতি পর্নো ভিডিও প্রচারকে ‘দুঃখজনক, আপত্তিকর ও গভীর উদ্বেগের’ বলে মন্তব্য করেছেন আদালত। একইসঙ্গে ৩০ দিনের মধ্যে অনুসন্ধান করে জড়িত ব্যক্তিদের পূর্ণাঙ্গ নাম-ঠিকানাসহ প্রতিবেদন দাখিলের জন্য বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তাকে (ডিসিও) নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

রোববার (৫ জানুয়ারি) ঢাকার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. তাজুল ইসলাম সোহাগ স্বতোপ্রণোদিত হয়ে এ আদেশ দেন।

সংশ্লিষ্ট আদালতের স্টেনোগ্রাফার জালিজ মাহমুদ বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন ফৌজদারি কার্যবিধির ১৯০ (১)সি ধারায় স্বতোপ্রণোদিতভাবে আমলে নিয়ে আদালত একটি ‘মিস মামলা’ রেকর্ড করেন। একইসঙ্গে প্রকাশিত ও প্রচারিত সংবাদের সরেজমিনে অনুসন্ধান করে এই আদেশ প্রাপ্তির ৩০ দিনের মধ্যে জড়িত ব্যক্তিদের পূর্ণাঙ্গ নাম-ঠিকানাসহ প্রতিবেদন দাখিলের জন্য বাংলাদেশ রেলওয়ের ঢাকা বিভাগের বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তাকে (ডিসিও) নির্দেশ প্রদান করেন। অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তাকে সার্বিক সহায়তা প্রদানের জন্য ঢাকা রেলওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ ও ঢাকা রেলওয়ে জেলাসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আগামী ৬ ফেব্রুয়ারি তারিখ ধার্য করেছেন আদালত।

আদালত তার আদেশে বলেন, ‘কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় রেলস্টেশন ও রেলওয়ে জংশন। এটি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ও ঐতিহ্যবাহী রেলস্টেশন। এই স্টেশনটি প্রতিনিয়ত লাখো মানুষের পদচারণায় মুখরিত থাকে, দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা মানুষ রাজধানীসহ বিভিন্ন গন্তব্যস্থলে পৌঁছায়, কোমলমতি শিশুসহ আবাল-বৃদ্ধ-বনিতা নির্বিশেষে সবাই সাময়িকের জন্য এ স্টেশনে অবস্থান করে থাকেন। স্টেশনের বিভিন্ন জায়গায় বেশ বড় আকারে ডিজিটাল ডিসপ্লে বা বোর্ড রয়েছে যেটিতে বিভিন্ন আন্তঃনগর ও লোকাল ট্রেনের সময়সূচি প্রকাশ ও বাণিজ্যিক প্রচারণা চালানো হয়। উক্ত বাণিজ্যিক প্রচারণা নিয়ন্ত্রণ ও পর্যবেক্ষণ করার জন্য একজন বাণিজ্যিক কর্মকর্তা ওই বিভাগে নিযুক্ত থাকেন।

কমলাপুর রেলস্টেশনের মতো স্পর্শকাতর জায়গায় পর্নো ভিডিও প্রচারিত হওয়াটা অত্যন্ত দুঃখজনক, আপত্তিকর ও গভীর উদ্বেগের উল্লেখ করে আদালত বলেন, ওই বিষয়টি রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের অব্যবস্থাপনাসহ ব্যর্থতা প্রকাশ করে। এতে আমাদের সামাজিক প্রেক্ষাপটসহ দেশে-বিদেশে অবস্থানরত ও বসবাসরত বিভিন্ন মানুষের নিকট ভুল বার্তা প্রেরণ করে। তারপরও অদ্যাবধি রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ কোনও আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ কিংবা কোনও ফলপ্রসূ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে বলে দেখা যায়নি।

আদালত আরও বলেন, এটি স্পষ্ট যে, কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে অপরাধের শামিল অপ্রীতিকর ও আপত্তিকর যে ঘটনা ঘটেছে সেটি একটি অপরাধ এবং উক্ত অপরাধে জড়িত অপরাধীকে আইনের আওতায় আনা আবশ্যক মর্মে গোচরীভূত হয়। কিন্তু অদ্যাবধি রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কোনও অপরাধীকে শনাক্ত করতে পারেননি বা উক্ত ঘটনার রহস্য উদঘাটন করতে পারেননি। যার ফলে উক্ত বিষয়ে পুঙ্খানুপুঙ্খু অনুসন্ধান হওয়া আবশ্যক।

এদিকে আইন অনুযায়ী, একজন ম্যাজিস্ট্রেট কোনও পুলিশ অফিসার ছাড়া অন্য কোথাও থেকে প্রাপ্ত তথ্য অথবা নিজস্ব জ্ঞান অথবা সন্দেহের ভিত্তিতে যে কোনও অপরাধ আমলে নিতে পারেন। ফলে, সার্বিক বিবেচনায় দ্য কোড অব ক্রিমিনাল প্রসিডিউর, ১৮৯৮ এর সেকশন ১৯০ (১) (সি) অনুযায়ী, বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রকাশিত ও প্রচারিত সংবাদটি আমলযোগ্য অপরাধের সংবাদ হিসেবে বিচারিক বিবেচনায় গ্রহণ করা হলো। মিডিয়ায় প্রকাশিত ও প্রচারিত সংবাদের সত্যতা নিরূপণের জন্য অনুসন্ধান হওয়া আবশ্যক মর্মে প্রতীয়মান হয়।

এম

Link copied!