নাফিজ সরাফাত পরিবারের বাড়ি, জমি ও ১৮ ফ্ল্যাট ক্রোকের আদেশ

  • নিজস্ব প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: জানুয়ারি ৭, ২০২৫, ০৫:০৪ পিএম
নাফিজ সরাফাত পরিবারের বাড়ি, জমি ও ১৮ ফ্ল্যাট ক্রোকের আদেশ

ঢাকা: ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় আর্থিক খাতে সুবিধা পাওয়া ব্যবসায়ী চৌধুরী নাফিজ সরাফত ও তার পরিবারের বাড়ি, জমি ও ১৮টি ফ্ল্যাট ক্রোকের আদেশ দিয়েছে আদালত।

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনে মঙ্গলবার মহানগর দায়রা জজ জাকির হোসেন গালিব এ আদেশ দেন।

দুদকের আদালত পরিদর্শক আমির হোসেন বলেন, নাফিজ সরাফাত পরিবারের যে সম্পদ ক্রোকের আদেশ হয়েছে তার মধ্যে নাফিজের নামে গুলশানে ২০ তলা একটি বাড়ি রয়েছে।

তার ফ্ল্যাট রয়েছে, গুলশানে একটি, ঢাকার ক্যান্টনমেন্ট বাজার এলাকায় চারটি, নিকুঞ্জ উত্তর আবাসিক এলাকায় একটি ও বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় একটি ফ্ল্যাটের ৫০ শতাংশ। প্লট রয়েছে নিকুঞ্জে দুইটি, গাজীপুরের কালিয়াকৈরে ১০ কাঠা করে দুইটি, রাজউকের পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে সাড়ে ৭ কাঠার একটি।

এছাড়া বাড্ডার কাঠালদিয়ায় আড়াই কাঠা, গাজীপুর সদরে ৮ দশমিক ২৫ শতাংশ, জোয়ার সাহারায় ৪ দশমিক ৯৫ শতাংশ জমি রয়েছে তার।

নাফিজের স্ত্রী আঞ্জুমান আরা সাহিদের নামে রয়েছে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় সাড়ে সাত কাঠা জমির ওপর চারতলা বাড়ি, পান্থপথে একটি, গুলশান লিংক রোডে একটি, মিরপুর ডিওএইচএস এ একটি, শাহজাদপুরে একটি ও বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় একটি ফ্ল্যাটের ৫০ শতাংশ।

এছাড়া তার নামে নিকুঞ্জে তিন কাঠা জমি, বাড্ডার কাঠালদিয়ায় আড়াই কাঠা নাল (আবাদি) জমি ও গাজীপুর সদরে ৮ দশমিক ২৫ শতাংশ চালা (উঁচু) জমি রয়েছে।

ছেলে চৌধুরী রাহিব সাফওয়ান সরাফাতের নামে থাকা বনানীর তিনটি ও বারিধারার চারটি ফ্ল্যাট জব্দের আদেশ দিয়েছেন আদালত।

পদ্মা ব্যাংক লিমিটেডের (সাবেক ফারমার্স ব্যাংক) সাবেক চেয়ারম্যান নাফিজ সরাফত সম্পদ ব্যবস্থাপনা কোম্পানি রেইস অ্যাসেট ম্যানেজেমেন্ট পিএলসির মালিকানাতেও যুক্ত। তার বিরুদ্ধে ব্যাংক দখল ও শেয়ারবাজার থেকে অর্থ লোপাটের অভিযোগ রয়েছে।

দুদকের অনুসন্ধান দলের প্রধান সংস্থার উপপরিচালক মাসুদুর রহমান বিতর্কিত ব্যবসায়ী নাফিজ সরাফাত ও তার পরিবারের এসব স্থাবর সম্পদ ক্রোকের আবেদন করেন।

দুদকের পক্ষে শুনানি করেন মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর। পরে আদালত এসব সম্পদ ক্রোকের আদেশ দেন।

আবেদনে বলা হয়, চৌধুরী নাফিজ সরাফাত ও অন্যদের বিরুদ্ধে ঘুষ, দুর্নীতি, জালিয়াতি ও গ্রাহকের সঙ্গে প্রতারণার মাধ্যমে প্রায় ৮৮৭ কোটি টাকা আত্মসাতসহ বিভিন্ন অভিযোগের অনুসন্ধান চলছে।

নাফিজ, তার স্ত্রী আঞ্জুমান আরা ও তার ছেলে রাহিবের নামে দেশের বিভিন্ন স্থানে স্থাবর সম্পত্তির তথ্য পাওয়া গেছে এবং তারা পলাতক রয়েছেন।

আবেদনে বলা হয়েছে, দুদক অনুসন্ধান শুরু করার পর নাফিজ সরাফাত ও তার পরিবারের সদস্যদের সব স্থাবর সম্পত্তি অন্যদের কাছে হস্তান্তর, স্থানান্তর, বন্ধক বা বেহাতের প্রচেষ্টা চালানো হয়। সে কারণে এসব সম্পত্তি জব্দ করা প্রয়োজন।

ছাত্র-জনতার প্রবল আন্দোলনে ২০২৪ সালের ৫ অগাস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের টানা দেড় দশকের শাসনের অবসান ঘটে। সে মাসেই নাফিজ ও তার স্ত্রীর ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করা হয়।

সে বছর ১৬ অগাস্ট ব্যাংক দখল ও পুঁজিবাজার থেকে অর্থ লোপাটের মাধ্যমে ৮০০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগের অনুসন্ধান শুরু করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

আওয়ামী লীগের তিন মেয়াদে আর্থিক খাতে অনিয়ম দুর্নীতি করেও পার পেয়ে যাওয়া নাফিজ সরাফতের পুঁজিবাজারের বিও হিসাবও অবরুদ্ধ করা হয়েছে।

এআর

Link copied!