ফরিদপুরে সাবেক এএসপি সুমিনুরের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলা

  • ফরিদপুর প্রতিনিধি | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: অক্টোবর ৭, ২০২৪, ০২:২৩ পিএম
ফরিদপুরে সাবেক এএসপি সুমিনুরের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলা

ফরিদপুর: ফরিদপুরের সাবেক সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (নগরকান্দা সার্কেল) সুমিনুর রহমানের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলা দায়ের করা হয়েছে। রোববার (৬ অক্টোবর) ফরিদপুরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও ৭ নম্বর আমলি আদালতে সালথা উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক কামরুল ইসলাম। বাদি হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।  মামলায় সুমিনুরের সাবেক বডিগার্ড পুলিশ সদস্য আরিফ হোসেনকেও আসামি করা হয়েছে।

মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে বাদীপক্ষের আইনজীবী জাহিদুল হাসান লাবলু বলেন, বিচারক মো. মারুফ হুসাইন বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে মামলাটি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ফরিদপুর ইউনিটকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।

মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে, বাদী উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক কামরুল ইসলাম, ২০২২ সালের মার্চ মাসে এএসপি সুমিনুর রহমান বাদীকে ফোন করে বলেন, ব্যবসা-বাণিজ্য করে অনেক টাকা উপার্জন করেছেন। বিএনপি দল করে শান্তিতে থাকতে হলে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দিতে হবে, নইলে এক রাতও বাড়িতে ঘুমাতে দেওয়া হবে না। চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় তাঁকে হেনস্তা ও আর্থিকভাবে ক্ষতি করার সুযোগ খুঁজতে থাকেন পুলিশ কর্মকর্তা।

এরই মধ্যে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে সালথার রামকান্তপুর ইউনিয়নের শৈলডুবি গ্রামে বাদীর প্রতিবেশী ইজিবাইকচালক আলী মাতুব্বরকে কে বা কারা হত্যা করে নগরকান্দার ডাঙ্গী ইউনিয়নের শ্রীরামদিয়া মহাসড়কের পাশে একটি পুকুরে ফেলে রাখে। এ ঘটনায় ১ মার্চ নগরকান্দা থানায় নিহত আলী মাতুব্বরের স্ত্রী বাদী হয়ে অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের নামে একটি মামলা করেন। মামলাটি পরিচালনা করছিলেন সুমিনুর রহমান। 

মামলায় আরও উল্লেখ করা হয়েছে, ২০২২ সালের ২৬ মার্চ সুমিনুর রহমান বাদীকে তাঁর অফিসে যেতে বলেন। তিনি সেখানে যাওয়ামাত্রই থানার কর্মকর্তাদের ডেকে এনে তাঁর হাতে হাতকড়া পরিয়ে দেওয়া হয়। পরে একটি কক্ষে নিয়ে তাঁকে বেধড়ক মারধর এবং ক্রসফায়ারের হুমকি দেওয়া হয়। এক পর্যায়ে পুলিশ কর্মকর্তা তাঁর কাছে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। পরে কামরুলের স্ত্রী গরু বিক্রি ও ধারদেনা করে ৮ লাখ টাকা সুমিনুর রহমান এবং তাঁর দেহরক্ষীর কাছে দিয়ে আসেন। বাকি ২ লাখ টাকা না দেওয়ায় সুমিনুর রহমান বাদীকে ফরিদপুর ডিবি অফিসে নিয়ে ইলেকট্রিক শকসহ অমানবিক নির্যাতন করেন। রিমান্ডে নিয়ে আরও ২ লাখ টাকা দাবি করেন। তখন বাদীর পরিবার আরও ১ লাখ টাকা দেয়।

 

এই বিষয়ে মামলার বাদী কামরুল ইসলাম বলেন, আলী মাতুব্বর হত্যায় আমাকে ধরে নিয়ে ৯ লাখ টাকা দেওয়ার পরও অমানবিক নির্যাতন করেন সুমিনুর রহমান। আমি এই নির্যাতনে দীর্ঘদিন কারাগারের মেডিকেলে চিকিৎসাধীন ছিলাম। জেল থেকে বেরিয়ে মামলা করার সাহস পাইনি। এখন মামলা করেছি। আশা করছি ন্যায়বিচার পাব। 

এই মামলার বিষয়ে পুলিশ কর্মকর্তা সুমিনুর রহমান দাবি করেন, সালথার ইজিবাইকচালক আলী মাতুব্বর হত্যার ঘটনা তদন্তে কামরুল আসামি হিসেবে শনাক্ত হন। মামলাটি এখনও পিবিআই তদন্ত করছে। হত্যা মামলায় কামরুল আসামি হওয়ায় আমার ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে মিথ্যা মামলা করেছেন কামরুল ইসলাম। চাঁদা নেওয়া প্রসঙ্গে তাঁর দাবি, টাকা লেনদেনের বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।

এসএস

Link copied!