শক্ত ভিতে দাঁড়িয়ে আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক, নজর গ্রামীণ অর্থায়নে 

  • নিউজ ডেস্ক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৮, ২০২৪, ০৪:৩১ পিএম
শক্ত ভিতে দাঁড়িয়ে আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক, নজর গ্রামীণ অর্থায়নে 

ঢাকা: খেলাপি ঋণ আদায়ে জোর দেওয়ার পাশাপাশি ভোক্তা ঋণ, এসএমই খাত, কৃষি ও গ্রামীণ অর্থায়নে ঋণ প্রদানে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ফরমান আর চৌধুরী। 

তিনি বলেছেন, ‘আমরা আমানতের প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে চাই।পাশাপাশি খেলাপি ঋণ আদায়ে জোর দেওয়া হচ্ছে। ভোক্তা ঋণ ও এসএমই খাতে ঋণে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। সব নিয়মকানুন মেনে ব্যাংকিং করার চেষ্টা চলছে। এখন সব হিসাব খোলা কেন্দ্রীয়ভাবে হচ্ছে। ফলে কোনো ধরনের ত্রুটি হওয়ার সুযোগ কমে এসেছে।’

ব্যাংকটির ৩০ বছরে পদার্পণ উপলক্ষে একটি জাতীয় দৈনিককে দেওয়া সাক্ষাতকারে এসব কথা বলেন ফরমান আর চৌধুরী। 

১৯৯৫ সালে যাত্রা শুরুর পর নানা উদ্যোগের ফলে এটি ভালো ব্যাংক হিসেবে পরিচিতি পায় আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক। এখন কী অবস্থা? 

জবাবে ফরমান আর চৌধুরী বলেন, আমাদের ব্যাংকের শাখা, এজেন্ট নেটওয়ার্ক বড় একটি শক্তি। সারা দেশে আমাদের ২২৫টি শাখা ও ৭৪৫টি এজেন্ট আউটলেট রয়েছে। ফলে আমরা ৩৬ লাখ গ্রাহক পেয়েছি। আমাদের ব্যাংকে আমানত রয়েছে ৫১ হাজার কোটি টাকা, বিনিয়োগ ৪৬ হাজার কোটি টাকা। গ্রাহকসেবা নিয়ে আমাদের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের অভিযোগ নেই। ব্যাংক সঠিক পথে আছে, সামনে আরও এগিয়ে যাবে।

তিনি জানান, ‘২০১৯ সালে আমানত ছিল প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকা, এখন তা বেড়ে হয়েছে ৫১ হাজার কোটি টাকা। একইভাবে বিনিয়োগ ২৮ হাজার কোটি টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ৪৬ হাজার কোটি টাকা। পাশাপাশি শাখা ও এজেন্ট নেটওয়ার্ক ও মুনাফা বেড়েছে। এর মধ্যে কোর ব্যাংকিং সফটওয়্যার চালু হয়েছে। ফলে ব্যাংকের সব ধরনের বিনিয়োগ কেন্দ্রীয়ভাবে অনুমোদিত হচ্ছে ও সুরক্ষিত থাকছে। যা ব্যাংকটিকে শক্ত ভিত্তি দিয়েছে।’ 

ব্যাংকের এমডি বলেন, ‘আগে আমরা করপোরেট ব্যাংকিংয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়ে আসছিলাম। দুই-তিন বছর ধরে ভোক্তা ঋণ, কৃষি, এসএমই ও গ্রামীণ অর্থায়নে নজর বাড়ানো হয়েছে। এর মধ্যে গ্রামীণ অর্থায়নে ৬০ হাজার নারী গ্রাহক আছেন, যেখানে ৪২৬ কোটি টাকা বিনিয়োগ আছে। ফলে ধীরে ধীরে শতাংশের হিসাবে করপোরেট বিনিয়োগের হার কমে আসছে। এ ছাড়া আমাদের আই ব্যাংকিং হিসাবে প্রতিদিন ৭০ হাজারের বেশি লেনদেন হচ্ছে। আমাদের মোবাইলে আর্থিক সেবা (এমএফএস) ইসলামিক ওয়ালেটে ১ লাখ গ্রাহক রয়েছেন। যাঁরা নিয়মিত অর্থ স্থানান্তর, পরিষেবা বিল, মোবাইল রিচার্জসহ বিভিন্ন সেবা নিচ্ছেন। আমাদের ক্রেডিট কার্ড লা-রিবা দেশের জন্য এক অনন্য সুদবিহীন সেবা। এই কার্ড বিশ্বব্যাপী ব্যবহার করা যায়। কার্ড গ্রাহকেরা বিশ্বের বিভিন্ন বিমানবন্দরে বিনা মূল্যে লাউঞ্জ–সুবিধা ব্যবহার করতে পারেন।’

দেশে দীর্ঘদিন ধরে ডলারের সংকট চলছে, কিছু ব্যাংক টাকারও সংকটে পড়েছে। আপনারা এই পরিস্থিতি কীভাবে সামাল দিচ্ছেন, এমন প্রশ্নে ফরমান আর চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের করপোরেট গ্রাহকদের বড় অংশ পোশাক খাতের। তাদের রপ্তানি আয় ভালো। এ ছাড়া আমরা রপ্তানিতে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি। প্রবাসী আয় ভালো পাচ্ছি। আমদানিতে যে ডলার প্রয়োজন হয়, তা রপ্তানি ও প্রবাসী আয় দিয়ে পূরণ হচ্ছে। আমাদের ব্যাংকের টাকার সংকট কখনো হয়নি। সেবার মান, ব্যাংকের ভাবমূর্তির কারণে সব সময় আমাদের আমানতে ভালো প্রবৃদ্ধি হয়েছে। তবে পর্ষদে পরিবর্তন আনার পর কিছুটা চাপ তৈরি হয়েছিল। এসব আমানত আবার ফিরে আসতে শুরু করেছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের ব্যাংকের আকার বেশ বড়। শিল্পের পাশাপাশি পোশাক খাতের কিছু ঋণ খারাপ হয়ে পড়েছে। এ ছাড়া আগের বেশ কিছু ঋণ খারাপ ছিল, এসব নিয়মিত করা হয়েছিল। এখন এর অনেকগুলো খারাপ হয়ে পড়ছে। এর ফলে খেলাপি ঋণ বেড়ে যাচ্ছে। তবে আমরা আমানতের প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে চাই। পাশাপাশি খেলাপি ঋণ আদায়ে জোর দেওয়া হচ্ছে।’

সূত্র-প্রথম আলো

আইএ

Link copied!