ঢাকা: বিদেশি ঋণ বেড়ে হয়েছে ১০৪ বিলিয়ন ডলার। অথচ মেয়াদ পার হলেও অপরিশোধিত ছিল ৩ দশমিক ৭০ বিলিয়ন ডলার।
গত ৫ মাসে বিপুল অঙ্কের এ বকেয়া পরিশোধের পরও রিজার্ভ বেড়ে আবার ২১ দশমিক ৩৮ বিলিয়ন হয়েছে। মূলত কাগুজে কোম্পানির নামে ঋণ নিয়ে পাচার বন্ধে কঠোরতার কারণেই পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
তথ্য অনুযায়ী, গত ডিসেম্বরের মধ্যে আগের সব বকেয়া পরিশোধের লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও শেষ পর্যন্ত ৪০ কোটি ডলার পরিশোধ করতে পারেনি ব্যাংকগুলো। ডলার সংকটে এ বকেয়া পরিশোধ হয়নি তেমনটি নয়। অনেক ক্ষেত্রে এসব আমদানিকারকের আসল সুবিধাভোগী পাওয়া যাচ্ছে না।
কিংবা এমন উৎস থেকে আমদানি হয়েছে যা সন্দেহজনক। এই বকেয়া ঋণের উল্লেখযোগ্য একটি অংশ এস আলম গ্রুপসহ এমন প্রতিষ্ঠানের যাদের মালিকরা পলাতক কিংবা জেলে আছেন। এসব কারণে বিদেশি সুবিধাভোগীর দায় শোধ করতে পারছে না ব্যাংক।
গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর থেকে ডলারের দর ১২০-১২২ টাকায় স্থিতিশীল ছিল। বকেয়া পরিশোধের চাপের কারণে মাঝে কয়েক দিন দর বেড়ে ১২৬ টাকা ছাড়ায়। এরই মধ্যে তা কমে আবার ১২৩ টাকায় নেমেছে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেড়ে বছর শেষে ২১ দশমিক ৩৮ বিলিয়ন ডলারে উঠেছে। এর আগে আকুর দায় শোধের পর গত ১১ নভেম্বর রিজার্ভ নামে ১৮ দশমিক ৪৬ বিলিয়ন ডলারে।
আওয়ামী লীগ সরকার পতনের সময় রিজার্ভ ছিল ২০ দশমিক ৪৮ বিলিয়ন ডলার। দেশের ইতিহাসে রিজার্ভ সর্বোচ্চ ৪৮ বিলিয়ন ডলারের ঘর অতিক্রম করেছিল ২০২১ সালের আগস্ট। করোনা-পরবর্তী অর্থনীতিতে বাড়তি চাপ এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে ২০২১-২২ অর্থবছরে রিজার্ভ থেকে বিক্রি করা হয় ৭ দশমিক ৭২ বিলিয়ন ডলার। পরের অর্থবছর আরও ১৩ দশমিক ৫৮ বিলিয়ন ডলার এবং ২০২৩-২৪ অর্থবছরে আরও ৯ দশমিক ৪২ বিলিয়ন ডলার বিক্রি করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তবে সরকার পতনের পর রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করা হচ্ছে না। বরং রিজার্ভ বাড়াতে বাজার থেকে প্রচুর ডলার কেনা হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক হুসনে আরা শিখা বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে আগের সব বকেয়া পরিশোধের জন্য ব্যাংকগুলোর ওপর চাপ ছিল। বেশির ভাগ বকেয়া পরিশোধ হয়েছে। গত ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের সময় যেখানে ৩৭০ কোটি ডলার মোট বকেয়া ছিল।
সেখান থেকে ৩৩০ কোটি ডলার পরিশোধ করা হয়েছে। বাকি ৪০ কোটি ডলার পরিশোধ করা যাচ্ছে না কোনো না কোনো সমস্যার কারণে। বিপুল অঙ্কের বকেয়া পরিশোধের পরও রিজার্ভ বাড়ার বিষয়টি অত্যন্ত স্বস্তির খবর। শিগগির বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ, এডিবিসহ বিভিন্ন উৎস থেকে আরও বেশ কিছু ডলার যোগ হবে। তখন রিজার্ভ আরও বাড়বে।
এআর
আপনার মতামত লিখুন :