ঢাকা: কোনও বড় দুষ্ট শক্তিকে শেয়ারবাজার নিয়ে আর খেলতে দেয়া হবে না বলে মন্তব্য করেছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত-উল ইসলাম।
বৃহস্পতিবার (২৪ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় “রোল অব ক্যাপিটাল মার্কেট ইন কিপিং ইকোনোমি ভাইব্রেন্ট ডিউরিং কোভিড-১৯ প্যান্ডামিক” শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, বাজার ডিমান্ড-সাপ্লাই (চাহিদা-যোগান) এর উপর নির্ভর করে ওঠানামা করবে। ওঠানামা হবে সাসটেইনেবল (টেকসই)। এর মধ্যে কোনও দুষ্টু শক্তি এসে যাতে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের নিঃস্ব করে যেতে না পারে সেটা খেয়াল রাখছি।
ক্যাপিটাল মার্কেটে সাসটেইনেবলিটি খুব বেশি দূরে নেই উল্লেখ্য করে তিনি আরও বলেন, ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি) আমাদের সহযোগী প্রতিষ্ঠান। তারা যাতে সঠিক ভাবে বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষা করে কাজ করতে পারে সেদিকে আমরা দৃষ্টি রাখছি। আশা করছি আগামী তিন থেকে ছয় মাসের মধ্যে আপনারা এটা অনুভব করতে পারবেন। বড় শক্তিগুলো যদি এখানে এসে খেলতে চায় সেটা তারা আর পারবে না। তারপর আপনারাও বুঝতে পারবেন এই ক্যাপিটাল মার্কেটে সাসটেইনেবলিটি খুব বেশি দূরে নেই।
নতুন একাধিক আইপিও অনুমোদনের বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা আরো আইপিও’র অনুমোদন দিব। কারণ আইপিওর মাধ্যমে বড় বড় ব্যবসায়ীরা তাদের ব্যবসার জন্য দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের ব্যবস্থা করতে পারবেন। এর মধ্যে প্রাইমারি মার্কেটের আইপিও বিজয়ীরা লাভবান হবেন। আইপিওগুলোর কারণে শেয়ারবাজারে কোনও নেতিবাচক প্রভাব পড়তে দেখিনি। বরং আইপিওর মাধ্যমে ব্যবসায়ীদের পুঁজির যোগান হচ্ছে। অনেক মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হচ্ছে। এর মাধ্যমে উদ্যোক্তারা লাভবান হচ্ছে। মার্কেট বেনিফিটেড হচ্ছে। মার্কেটের গভীরতা বাড়ছে। জনগণ যারা আইপিও করছেন তারাও লাভবান হচ্ছেন। সবমিলিয়ে আমরা একটি উইন উইন অবস্থা দেখতে পাচ্ছি।
তিনি বলেন, অনেক দুষ্ট শক্তি শেয়ারবাজার নিয়ে নানা সময় খেলা করেছে। এখন থেকে আর তারা খেলতে পারবে না। আগামী তিন থেকে ছয় মাসের মধ্যে এটা আপনারা ফিল (অনুভব) করবেন। বিএসইসি ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগের নিরাপত্তা দেবে।
প্রধানমন্ত্রী দুর্দশীতার প্রশংসা করে প্রফেসর শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম-আরো বলেন, বৈশ্বিক ভয়াবহ করোনাভাইরাসের মধ্যেও মানুষ যখন সঞ্চয়ের উপর ভরসা করে চলতে শুরু করেছিল ঠিক সেই সময় বাংলাদেশে সিকিউরিটিজ এক্সচেঞ্জের দায়িত্বগ্রহণ করেছিলাম। করোনাকালীন সময়ে প্রধানমন্ত্রী কৃষিকে প্রধান্য দিয়ে সাপ্লাই চেইন ঠিক রেখেছেন। তিনি দেশে কারফিউ দেননি। খাদ্য উৎপাদন ঠিক রেখে অর্থনীতিকে গতিশীল রাখেন। তার দূরদর্শী সিদ্ধান্তের ফলে দুই মাস বন্ধ থাকার পরও দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে কম পতন হয়েছে আমাদের শেয়ারবাজার।
সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বিএসইসির কমিশনার ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ ও কমিশনার প্রফেসর ড. মো. মিজানুর রহমান।
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন কমিশনের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. রেজাউল করিম।
প্যানেল স্পিকার হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিডি ফাইন্যান্সের চেয়ারম্যান ও আনোয়ার গ্রুপের এমডি মানোয়ার হোসাইন, বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) প্রেসিডেন্ট মো. ছায়েদুর রহমান এবং ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্ট ফোরামের (সিএমজেএফ) সভাপতি হাসান ইমাম রুবেল। অনুষ্ঠানে উদ্বোধনী বক্তব্য রাখেন ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্ট ফোরামের সাধারণ সম্পাদক মনির হোসেন।
সেমিনারের শেষাংশে সদ্য সরকারি অনুমোদনপ্রাপ্ত দৈনিক ‘বাণিজ্য প্রতিদিন’র অনলাইন ভার্সনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন বিএসইসি চেয়ারম্যান প্রফেসর শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম ও আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ।
সোনালীনিউজ/এএস/মএইচ
আপনার মতামত লিখুন :