বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ারের বিডিং শুরু বিকেলে

  • নিজস্ব প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২২, ২০২১, ১১:২৯ এএম
বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ারের বিডিং শুরু বিকেলে

ফাইল ফটো

ঢাকা: বুক বিল্ডিং পদ্ধতির প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্তির অপেক্ষায় থাকা বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার লিমিটেডের প্রান্তসীমা মূল্য (কাটঅফ প্রাইস) নির্ধারণে নিলাম আজ ২২ ফেব্রুয়ারি বিকেল ৫টায় শুরু হবে। যা ২৫ ফেব্রুয়ারি বিকেল ৫টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে বলে কোম্পানি সূত্রে জানা গেছে।

বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) ৭৫৫তম কমিশন সভায় বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ারকে বিডিংয়ের অনুমোদন দেয়া হয়। আইপিওর মাধ্যমে শেয়ারবাজ থেকে ২২৫ কোটি টাকা মূলধন উত্তোলন করে তারা সাবসিডিয়ারি কোম্পানি কর্ণফুলী পাওয়ার ও বারাকা শিকলবাহা পাওয়ারে বিনিয়োগের পাশাপাশি আংশিক দীর্ঘমেয়াদি ঋণ পরিশোধ ও আইপিও প্রক্রিয়ার ব্যয় নির্বাহে খরচ করবে।

এর আগে ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৮ ফেব্রুযারি পর্যন্ত বিডিংয়ের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছিল। 

এদিকে পাবলিক ইস্যু রুল ২০১৫ এর সি এর (১) এর (২) আইন অনুযায়ী বিডিংয়ে অংশ নিতে যোগ্য বিনিয়োগকারীদের বাজার মূল্যে নূন্যতম বিনিয়োগের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে ১১ ফেব্রুয়ারি। তবে ৭ ও ১১ ফেব্রুয়ারি যেসব প্রতিষ্ঠানের নূন্যতম বিনিয়োগ রয়েছে এমন সব প্রতিষ্ঠান বারাকা পতেঙ্গার বিডিংয়ে অংশ নিতে পারবে বলে জানিয়ে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি। 

গত ৫ জানুয়ারি শেয়ারবাজারের বিএসইসির ৭৫৫তম সভায় কোম্পানিটিকে বিডিংয়ের অনুমোদন দেওয়া হয়।

৩০ জুন ২০২০, সমাপ্ত হিসাব বছরের আর্থিক বিবরণী অনুসারে, পুনর্মূল্যায়ন ছাড়া কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভি) সম্মিলিতভাবে ২৩ টাকা আর এককভাবে ২০ টাকা ৯৮ পয়সা। একই সময়ে কোম্পানিটির সম্মিলিত শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) দাঁড়িয়েছে ৪ টাকা ৩৭ পয়সা, এককভাবে যা ১ টাকা ৮৪ পয়সা।

শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি বারাকা পাওয়ার লিমিটেডের একটি সাবসিডিয়ারি প্রতিষ্ঠান বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার। ২০০৭ সালে সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জে ৫১ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের মধ্য দিয়ে যাত্রা হয় বারাকা পাওয়ারের।  

এরপর ২০১৪ সালে প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) পক্ষ থেকে চট্টগ্রামে ৫০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন একটি ফার্নেস অয়েল জ্বালানিভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের অনুমতি পায় বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার। এ দুটি বিদ্যুৎকেন্দ্রের ব্যবসায়িক সাফল্যের ধারাবাহিকতায় বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার দুটি সাবসিডিয়ারি কোম্পানি গঠন করে। এর একটি কর্ণফুলী পাওয়ার লিমিটেড এবং অন্যটি হলো বারাকা শিকলবাহা পাওয়ার লিমিটেড। সাবসিডিয়ারি দুটির ৫১ শতাংশ শেয়ারের মালিক বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার।

বিশ্বব্যাংক প্রথম প্রাইভেট খাতের পাওয়ার প্ল্যান্ট হিসেবে বারাকা পাওয়ারে বিনিয়োগ করেছে। কোম্পানিটিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের আইপিপিএফ প্রজেক্ট সেলের মাধ্যমে ২ কোটি ১৯ লাখ ৭৫ হাজার ডলার বিনিয়োগ করেছে বিশ্বব্যাংক।

কর্ণফুলী পাওয়ার ১১০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন ফার্নেস অয়েলভিত্তিক একটি বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান, যা ২০১৯ সালে বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু করে। বারাকা শিকলবাহা পাওয়ার বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু করে ২০১৯ সালের মে মাসে। এটির উৎপাদনক্ষমতা ১০৫ মেগাওয়াট ও এর জ্বালানি এইচএফও।

বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মঞ্জুর কাদির শাফি বলেন, বাংলাদেশে বিদ্যুৎ খাতে আমরাই প্রথম প্রতিষ্ঠান, যারা ডি-সালফারাইজেশন প্রযুক্তির প্লান্ট স্থাপন করেছি। এ প্রযুক্তি সালফার নিঃসরণ গ্রহণযোগ্য মাত্রায় রাখতে সক্ষম। 

তিনি আরো বলেন, সঞ্চালন লাইনের অপর্যাপ্ততার কারণে আমাদের দুটি সাবসিডিয়ারি বিদ্যুৎকেন্দ্র সম্পূর্ণরূপে উৎপাদনে যেতে পারছে না। তবে আগামী মে মাস থেকে আমরা সম্পূর্ণ উৎপাদনে যেতে সক্ষম হব। এতে আমাদের কোম্পানির আয়ও বাড়বে।

কোম্পানিটির চেয়ারম্যান গোলাম রব্বানী চৌধুরী বলেন, সাধারণ বিনিয়োগকারীরা সম্পৃক্ত হলে তা স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও সুশাসন বাড়াতে সহায়ক ভূমিকা রাখবে। এজন্য আমরা পুঁজিবাজারে আসছি। অন্যদিকে বিদেশী ব্যাংকের সঙ্গে করেসপন্ডিং ব্যাংকিং করতে গেলে সুশাসন ও শেয়ার ধারণের অবস্থা দেখা হয়। সব মিলিয়ে শেয়ারবাজারে আসতে পারলে একটি প্রতিষ্ঠানের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বাড়ে। 

তিনি আরো বলেন, আমাদের লক্ষ্য হলো দেশজুড়ে আরো বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের মাধ্যমে বেসরকারি খাতের বৃহত্তম উৎপাদনকারী কোম্পানি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হওয়া। এজন্য আমাদের সাবসিডিয়ারিগুলোকে আরো লাভজনক করার প্রক্রিয়া শুরু করেছি।

গোলাম রব্বানী চৌধুরী বলেন, আইপিও তহবিলের বড় অংশই কর্ণফুলী পাওয়ার ও শিকলবাহা পাওয়ারে ইকুইটি বিনিয়োগের কাজে ব্যয় করা হবে। বাকিটা ব্যবহার হবে আমাদের কোম্পানিটিকে কিছুটা ঋণমুক্ত করতে। অন্যথায় আমাদের আয়ের বড় একটি অংশ ব্যাংকঋণের সুদ বাবদ খরচ হয়ে যাবে, যা বেশি মুনাফা অর্জনে বাধার কারণ হয়ে দাঁড়াবে।

সোনালীনিউজ/এমএইচ

Link copied!