ঢাকা: শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত রানার অটোমোবাইলস লিমিটেড থেকে সব শেয়ার বিক্রি করে বের হয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ব্রামার্স অ্যান্ড পার্টনারর্স অ্যাসেট ম্যানেজম্যান্ট (বাংলাদেশ) লিমিটেড। তবে শেয়ার বিক্রির ক্ষেত্রে কোম্পানিটির 'লক ইন' সময় নির্ধারিত ছিলো ৩ বছর। এবার সেই সময় এক বছর কমিয়ে ২ বছর করে দিয়েছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। ফলে রানার অটোমোবাইলসের শেয়ার বিক্রিতে নরডিক এই কোম্পানিটির এখন আর কোন বাধা থাকবে না।
গত ১ ডিসেম্বর বিএসইসি এ সংক্রান্ত একটি চিঠি ইস্যু করেছে। যা ব্রামার্স অ্যান্ড পার্টনারর্সের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা খালিদ কাদেরর কাছে পাঠানো হয়েছে। চলতি বছরের ২৭ জুন বিএসইসিতে ব্রামার্স অ্যান্ড পার্টনারর্সের এক আবেদনের পরিপেক্ষিতে এই চিঠিটি ইস্যু করা হয়েছে।
প্রকৌশল খাতের কোম্পানি রানার অটোমোবাইলস লিমিটেড ২০১৯ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হয়েছে। বর্তমানে কোম্পানিটি এ ক্যাটাগড়িতে লেনদেন হচ্ছে। পাবলিক ইস্যু আইন অনুযায়ী প্লেসমেন্ট শেয়ারের ৩ বছর 'লক ইন' থাকে। এই আইন অনুযায়ী আগামী বছরের মে মাসে লক ইন ফ্রি হওয়ার কথা ছিলো। এই আইন থেকে অব্যহতি চেয়ে গত ২৭ জুন এক বছর কমিয়ে আনার জন্য নিয়ন্ত্রক সংস্থার কাছে ব্রামার্স অ্যান্ড পার্টনার্স আবেদন করলে তাতে সম্মতি দিলো বিএসইসি।
কোম্পানির সর্ব শেষ আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী বর্তমানে ব্রামার্স অ্যান্ড পার্টনার্স পিই ফান্ডে রানার অটোমোবাইলসের ২৪ দশমিক ৯৩ শতাংশ শেয়ার রয়েছে। শেয়ারের সংখ্যা অনুযায়ী এর পরিমাণ হলো ২ কোটি ৮৩ লাখ ৪ হাজার ৩৪৭টি।
এর আগে শেয়ার বিক্রির জন্য বিএসইসির কাছে আবেদনের বিষয়ে ব্রামার্স অ্যান্ড পার্টনারর্সের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা খালিদ কাদের জানিয়েছিলো, বাংলাদেশে তাদের অনেক বিনিয়োগ রয়েছে। রানার অটোমোবাইলসেও তারা ৯ বছর আগে বিনিয়োগ করেছে। আর রানার অটোমোবাইলস ২০১৯ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হয়েছে। এখন তারা তাদের কাছে থাকা রানার অটোমোবাইলসের শেয়ার বিক্রির জন্য বিএসইসির অনুমোদন চেয়েছি।
বিএসইসির অনুমোদন পেলেই বাজারের চাহিদা অনুযায়ী ব্রামার্স অ্যান্ড পার্টনার্সের কাছে থাকা সব শেয়ার আস্তে আস্তে বাজারে ছেড়ে দেওয়া হবে বলেও জানিয়েছিলেন তিনি। এখন বিএসইসির অনুমোদন পাওয়ায় এক বছর আগেই শেয়ার বিক্রির কার্যক্রম শুরু করতে পারবে প্রতিষ্ঠানটি।
এদিকে সর্বশেষ কার্যদিবস রোববার (৫ ডিসেম্বর) ডিএসইতে ৫৩ টাকা ৭০ পয়সায় লেনদেন শেষ হয়েছে রানার অটোমোবাইলসের। সেই হিসেবে ২৪ দশমিক ৯৩ শতাংশ শেয়ারের বাজার মূল্য হলো প্রায় ১৫১ কোটি ৯৯ লাখ ৪৩ হাজার ৪৩৩ টাকা। এই বিপুল পরিমান শেয়ার শিগগিরই বিক্রির জন্য বাজারে আসতে যাচ্ছে। কিন্তু এই মুহুত্বে রানার অটোমোবাইলসের এত পরিমাণ শেয়ার বাজার আসলে তার চাপ বহন করা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করছে বাজার সংশ্লিষ্টরা।
নরডিক দেশগুলোর ব্যবসায়ীদের সমন্বিত বিনিয়োগ কোম্পানি ব্রামার্স অ্যান্ড পার্টনার্স। ২০০৮ সালে ইউরোপভিত্তিক অল্টারনেটিভ ইনভেস্টমেন্ট ম্যানেজার ব্রামার্স অ্যান্ড পার্টনার্স বাংলাদেশে প্রাইভেট ইকুইটিকেন্দ্রিক ১০ কোটি ডলারের দ্য ফ্রন্টিয়ার ফান্ড গঠন করে কোম্পানিটি।
তাদের সঙ্গে ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স করপোরেশন (আইএফসি), ডিইজি, নরফান্ট ও অন্যান্য বিদেশি বিনিয়োগকারীও ছিল। বিশ্বব্যাপী ব্রামার্স অ্যান্ড পার্টনার্সের আওতায় হাজার কোটি ডলারের বেশি বিনিয়োগ রয়েছে। স্টকহোম, লন্ডন, সিঙ্গাপুর, নিউইয়র্ক, ম্যানিলা ও ঢাকায় তাদের কার্যালয় আছে।
উল্লেখ্য, উল্লেখ্য, রানার অটোমোবাইলসের অনুমোদিত মূলধন ২০০ কোটি টাকা এবং পরিশোধিত মূলধন ১১৩ কোটি ৫৪ লাখ টাকা। বর্তমানে কোম্পানিটির মোট শেয়ারের ২৫ দশমিক ১১ শতাংশ রয়েছে উদ্যোক্তা পরিচালকদের কাছে, বিদেশী বিনিয়োগকারীদের (ব্রামার্স অ্যান্ড পার্টনারর্সের) কাছে ২৪ দশমিক ৯৩ শতাংশ, বাকী শেয়ারের মধ্যে ২৬ দশমিক ৩৮ শতাংশ প্রতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী এবং ২৩ দশমিক ৫৮ শতাংশ রয়েছে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে।।
২০১৯-২০ অর্থবছরে কোম্পানিটি শেয়ারহোল্ডারদের ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে। আর ২০২০-২১ অর্থবছরের জন্যও ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে।
সোনালীনিউজ/এমএইচ
আপনার মতামত লিখুন :