ঢাকা: আন্তর্জাতিক বাজারের পাশাপাশি বাংলাদেশের বাজারেও ভারতীয় রুপির দাম কমেছে। বুধবার (৫ ডিসেম্বর) দেশের খোলাবাজারে ডলারের বিক্রি স্বাভাবিক থাকলেও ভারতীয় রুপির কোনো ক্রেতাই খুঁজে পাচ্ছে না এক্সচেঞ্জ হাউসগুলো। এক সপ্তাহের ব্যবধানে টাকার বিপরীতে ৪-৫ পয়সা কমেছে রুপির মান।
মতিঝিল, পল্টন, বাইতুল মোকাররম এলাকায় ডলার বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, খোলাবাজারে প্রতি ডলার হয়েছে ১২৪ টাকা ৫০ পয়সা, যা এক সপ্তাহ আগের তুলনায় প্রায় এক টাকা বেশি।
অন্যদিকে ভারতীয় রুপি বিক্রির জন্য এক্সচেঞ্জ হাউসগুলো দাম চাচ্ছে ১.৪০ টাকা থেকে ১.৪৪ পর্যন্ত। যা আগের সপ্তাহে ছিল ১.৪৮ থেকে ১.৫০ টাকায় প্রতি রুপি বিক্রি হতো।
খোলাবাজারের ডলার বিক্রেতা রিপন বলেন, ভারতীয় রুপির বিক্রি মোটেই নেই। দুই দেশের রাজনৈতিক উত্তেজনার কারণে বিক্রি কমে গেছে। দেশি টাকায় রুপিপ্রতি দাম কমেছে ৪-৫ পয়সা।
তিনি বলেন, আগে প্রতিদিন ৫০ থেকে ৮০ হাজার টাকার ভারতীয় রুপি বিক্রি হতো। আজকে এক রুপিও বিক্রি হয়নি। এ ছাড়া রুপির দামও কমে যাচ্ছে।
আরেক ডলার বিক্রেতা নাদির হোসেন জানান, ভারতে মেডিক্যাল ভিসা বন্ধের পর রুপির বিক্রি অনেকটা কমে গেছে। তিনি বলেন, আগে প্রতি সপ্তাহে প্রায় ছয় লাখ টাকা রুপি বিক্রি হতো। গত এক সপ্তাহে ৫০ হাজার টাকারও বিক্রি হয়নি।
সাধারণত বাংলাদেশিরা ভারতীয় রুপি নিয়ে যান মেডিক্যাল ও ভ্রমণ বাবদ খরচের জন্য। কিন্তু গত এক মাসে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজমান থাকায় রুপির বিক্রি অনেকটা কমে গেছে।
এদিকে মার্কিন ডলারের বিপরীতে ভারতীয় মুদ্রা রুপির মান সর্বকালের তলানিতে পৌঁছেছে। ডলারের বিপরীতে রুপির দর এই প্রথম ৮৪.৭৫-এ নেমে আসে। মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে দেশটির সংবাদমাধ্যম ইকোনমিক টাইমস এ তথ্য জানায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, যদিও দিন শেষে সামান্য বেড়ে হয় ৮৪.৬৮ রুপি। তবে অপরদিকে ডলারের সূচক বেড়ে হয় ১০৬.৫০। এর আগে গত সোমবার প্রতি ডলারের দাম দাঁড়িয়েছিল সর্বনিম্ন ৮৪.৭০ ভারতীয় রুপিতে।
রুপির মান নেমে যাওয়া নিয়ে বিশেষজ্ঞদের ধারণা, রুপির দরপতন আরো বেশি হতো। তবে ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংক আরবিআইয়ের হস্তক্ষেপের কারণে তা কিছুটা থামানো গেছে।
বিশেষজ্ঞরা আরো ধারণা করেন, ভারতের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ধীর হওয়া এবং বিদেশি পুঁজি বিনিয়োগের (এফপিআই) প্রবাহে সংকোচনের ফলে রুপির দাম কমেছে।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ব্রিকস (ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন ও দক্ষিণ আফ্রিকা) অন্তর্ভুক্ত দেশগুলো যদি একটি সাধারণ মুদ্রা তৈরি করার চেষ্টা করে, তবে আমদানি করা পণ্যের ওপর ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হবে।
ভারতের রুপির দামের ওপর এর প্রভাব পড়েছে বলে বিশেষজ্ঞদের একাংশ মনে করছে।
এম
আপনার মতামত লিখুন :