ভারতের সঙ্গে কমেছে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য

  • নিজস্ব প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২০, ২০২৪, ০৯:১৯ পিএম
ভারতের সঙ্গে কমেছে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য

ঢাকা: যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারত-বাংলাদেশের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে কমে গেছে। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর স্থলপথে দুই দেশের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যের অন্যতম প্রধান বন্দরে এ প্রভাব দেখা যাচ্ছে। পণ্য আমদানি-রপ্তানি কমে যাওয়ায় রাজস্ব আদায়ও কমে গেছে।

বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর গত দেড় মাসে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় বেনাপোল দিয়ে পণ্য আমদানি কমেছে প্রায় দুই লাখ মেট্রিক টন। আর রপ্তানি কমেছে ১০ হাজার টন। গাড়ির চেসিস আমদানি কমেছে ১৩০টি।

আমদানিকারকেরা বলছেন, দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতি ও ব্যাংকে ডলার-সংকটের কারণে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। আমদানির ক্ষেত্রে ঋণপত্র খুলতে কিছু পণ্যের ক্ষেত্রে শতভাগ অর্থ আগাম পরিশোধ করতে হচ্ছে। ফলে আমদানিকারকেরা পণ্য আমদানি কমিয়ে দিয়েছেন।

* গত দেড় মাসে পণ্য আমদানি আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় দুই লাখ টন কমেছে।
* পণ্য রপ্তানির পরিমাণ কমেছে প্রায় ১০ হাজার টন।
* গাড়ির চেসিস আমদানিও কমে গেছে।
* ২৪ ঘণ্টা আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম সচলের কথা থাকলেও সন্ধ্যা ছয়টার পর আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য বন্ধ হয়ে যায়।

বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা গেছে, ৫ আগস্ট থেকে ১৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রায় দেড় মাসে এই বন্দর দিয়ে ২ লাখ ৫ হাজার ৫৬৪ মেট্রিক টন পণ্য আমদানি হয়েছে। রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৫৬ হাজার ৫২৭ মেট্রিক টন। এ ছাড়া গাড়ির চেসিস আমদানি হয়েছে ৭৮১টি। গত বছরের একই সময়ে এই বন্দর দিয়ে পণ্য আমদানি হয়েছিল প্রায় ৩ লাখ ৯৫ হাজার মেট্রিক টন। 

রপ্তানি হয়েছিল ৬৫ হাজার ৬৪৯ মেট্রিক টন পণ্য। এ ছাড়া গাড়ির চেসিস আমদানি হয়েছিল ৯১১টি। সেই হিসাবে গত বছরের ৫ আগস্ট থেকে ১৯ সেপ্টেম্বরের তুলনায় এ বছরের একই সময়ে পণ্য আমদানি কমেছে প্রায় দুই লাখ টন। রপ্তানি কমেছে ৯ হাজার ১২২ টন। আর গাড়ির চেসিস আমদানি কম হয়েছে ১৩০টি।

মাহিন্দ্রা অ্যান্ড মাহিন্দ্রা লিমিটেড ভারত থেকে গাড়ির চেসিস আমদানি করে। গত দেড় মাসে গাড়ির চেসিস আমদানি কমে যাওয়ার কারণ জানতে চাইলে মাহিন্দ্রা অ্যান্ড মাহিন্দ্রার বাংলাদেশের আঞ্চলিক কার্যালয়ের বিক্রয় ব্যবস্থাপক (সেলস ম্যানেজার) সাকিব উল ইসলাম বলেন, পণ্য আমদানির জন্য ঋণপত্র (এলসি) খুলতে ব্যাংক থেকে চাহিদা অনুযায়ী ডলার পাওয়া যাচ্ছে না। এ কারণে পর্যাপ্ত এলসি খোলা যাচ্ছে না। আগে এলসি খোলার সময় আমদানি মূল্য পরিশোধে ছয় মাসের ব্যাংক সহায়তা পাওয়া যেত; কিন্তু এখন ব্যাংকে তারল্য-সংকট থাকায় সে সহায়তা পাওয়া যাচ্ছে না। এখন আমদানির শতভাগ অর্থ এলসি খোলার সময়ই পরিশোধ করতে হচ্ছে। ফলে আমদানির এলসি খোলা কমে গেছে।

বেনাপোল বন্দর ব্যবহারকারী আমদানি ও রপ্তানিকারকেরা জানান, সপ্তাহে সাত দিন ২৪ ঘণ্টা আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম সচল থাকার সরকারি ঘোষণা থাকলেও বেনাপোল স্থলবন্দরে সেটি কার্যকর নেই। বর্তমানে সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সপ্তাহে পাঁচ দিন বন্দর ও কাস্টমসের কার্যক্রম চালু থাকে। সন্ধ্যা ছয়টার পর বেনাপোল ও পেট্রাপোলের মধ্যে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য বন্ধ হয়ে যায়। আমদানি-রপ্তানির বিপরীতে সরকারের রাজস্ব আয় কমে যাওয়ার জন্য এটিকে বড় কারণ মনে করছেন স্থলবন্দর ব্যবহারকারীরা।

এআর

Link copied!