শ্রমিক অসন্তোষ

গাজীপুরে মুখ থুবড়ে পড়েছে ২৫ পোশাক কারখানার উৎপাদন

  • এম এস রুকন, গাজীপুর | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: নভেম্বর ৪, ২০২৪, ১২:৩৯ পিএম
গাজীপুরে মুখ থুবড়ে পড়েছে ২৫ পোশাক কারখানার উৎপাদন

গাজীপুর: দেশের অন্যতম বৃহৎ শিল্পাঞ্চল গাজীপুরে বেশ কিছু ধরে পোশাক শিল্প কারখানাগুলোতে স্থিতিশীল পরিবেশে পণ্য উৎপাদন করছেন কারখানা কর্তৃপক্ষ। তবে গত তিন ধরে এ শিল্পাঞ্চলের বেশ কিছু এলাকায় আবারও বিভিন্ন দাবিতে কর্মবিরতি ও বিক্ষোভের মধ্য দিয়ে শ্রমিক অসন্তোষের সৃষ্টি হয়েছে। 

এ পরিস্থিতিতে সংশ্লিষ্ট কারখানার নিরাপত্তার স্বার্থে এবং অনাকাঙ্ক্ষিত বিশৃঙ্খলা এড়িয়ে চলতে একাধিক গার্মেন্টস কারখানার কর্তৃপক্ষ তাদের প্রতিষ্ঠানে ছুটি ঘোষণা করেছেন।এতে করে মুখ থুবড়ে পড়েছে গাজীপুর শিল্পাঞ্চলের কমপক্ষে ২৫ টি পোশাক কারখানার উৎপাদন।

 

সোমবার (৪ নভেম্বর) সকালে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, গাজীপুর শিল্পাঞ্চলের বড়-বড় অনেক গার্মেন্টস কারখানায় সরকার ঘোষিত পোশাক শ্রমিকদের জন্য বর্ধিত নাইট বিল, টিফিন বিল ও হাজিরা বোনাসসহ বিভিন্ন ভাতা বৃদ্ধির টাকা প্রদান কার্যকর করেছেন সংশ্লিষ্ট কারখানা কর্তৃপক্ষ। 

তবে এ শিল্পাঞ্চলে অসংখ্য কারখানা রয়েছে, যারা নানা অজুহাতে পোশাক শ্রমিকদের এসব ভাতাগুলো বৃদ্ধি না করেই কারখানা চালাচ্ছেন। একই সঙ্গে শ্রমিকরা এসব দাবি পূরণের কথা বললে তাদেরকে বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে আপাতত এসব দাবি পূরণে অপারগতা প্রকাশ করেছেন। পরে ওই সব কারখানার শ্রমিকরাই এসব দাবি আদায়ে কারখানায় কর্মবিরতি ও সড়ক-মহাসড়কে বিক্ষোভ করে চলছে। 

গাজীপুর শিল্পাঞ্চলের বিভিন্ন শিল্প পুলিশের ইউনিট ও স্থানীয় শ্রমিক সংগঠনের সূত্রে জানা যায়, হাজিরা বোনাস, নাইট বিল, টিফিন বিলসহ বিভিন্ন ছোটখাটো ভাতা বৃদ্ধির দাবিকে কেন্দ্র করেই শ্রমিক অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে। পরবর্তীতে এসব দাবি আদায়ে শ্রমিকেরা আন্দোলনের দিকে হেঁটেছেন। 

বিভিন্ন পোশাক কারখানার শ্রমিকদের এ আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়ী, জরুন, জিরানী ও কাশিমপুর এলাকার ২৫টি পোশাক কারখানায় ছুটি দিতে বাধ্য হয় কর্তৃপক্ষ।

 

ছুটি প্রদান করা এসব করাখানাগুলোর মধ্যে কোনাবাড়ী এলাকায় তুসুকা গ্রুপ বাধ্য হয়ে রোববার (৩ নভেম্বর) সকাল ৮টা থেকে কারখানাগুলোর কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে। 

বন্ধ কারখানাগুলো হলো, তুসুকা জিন্স লিমিটেড, তুসুকা ট্রাউজার্স লিমিটেড, তুসুকা প্রসেসিং লিমিটেড, তুসুকা প্যাকেজিং লিমিটেড, তুসুকা ডেনিম লিমিটেড এবং তুসুকা ওয়াশিং লিমিটেড।

এ বিষয়ে কারখানার মহা-ব্যবস্থাপক মাসুম হোসেন বলেন, শনিবার সকালে হঠাৎ শ্রমিকরা কাজ বন্ধ করে কর্মবিরতি পালন করেন। পরে আমরা শ্রমিকদের অনেক দাবি মেনে নেই কিন্তু শ্রমিকরা তাতে একমত পোষণ করেনি। তারা কর্মবিরতিতে অনড় অবস্থানে রয়েছে। একই সঙ্গে আমরা বিভিন্ন মাধ্যমে জানতে পেরেছি এমত অবস্থায় আমাদের কিছু কারখানায় হামলা চালানোর পরিকল্পনা করা হচ্ছে। এজন্য কারখানাগুলো শ্রম আইন অনুযায়ী অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

এ দিকে কোনাবাড়ী বিসিক ও জরুন এলাকায় বিভিন্ন দাবি ও নিরাপত্তাজনিত কারণে ফ্যাশন সামিথ, ফ্যাশন পয়েন্ট, রেজাউল অ্যাপারেলস, রিপন নিটওয়্যার, এমএম নিটওয়্যার, এসট্রো নিটওয়্যারসহ নয়টি কারখানা একদিনের ছুটি প্রদান করেছে। এছাড়াও জিরানী এলাকায় আন্দোলন ও ভাংচুরের আশঙ্কায় ডরিন, ডরিন অ্যাপারেলস, নবী টেক্সটাইলসহ আশপাশের অন্তত ১২-১৩টি কারখানা একদিনের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেন।

এ বিষয়ে গাজীপুর মেট্রোপলিটনের কোনাবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, কোনাবাড়ী এবং এর আশপাশের এলাকায় শ্রমিক আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে কারখানার নিরাপত্তার স্বার্থে কারখানার মালিক পক্ষ কয়েকটি কারখানা বন্ধ ঘোষণা করেন। তবে এর মধ্যে কোনাবাড়ী এলাকায় তুসুকা গ্রুপের ৬ কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। 

এসএস

Link copied!