বাকৃবিতে ছাত্র ইউনিয়ন ও ফ্রন্টের কার্যালয়ে হামলায় নিন্দা ৪৬ শিক্ষক-নাগরিকের

  • বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: আগস্ট ২২, ২০২৪, ০২:৩০ পিএম
বাকৃবিতে ছাত্র ইউনিয়ন ও ফ্রন্টের কার্যালয়ে হামলায় নিন্দা ৪৬ শিক্ষক-নাগরিকের

ময়মনসিংহ  : বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) ছাত্র ইউনিয়ন ও সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট কার্যালয়ে ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনায় উদ্বেগ এবং বিচারের দাবি জানিয়েছেন ৪৬ জন শিক্ষক ও বিশিষ্ট নাগরিকগণ।

বুধবার (২১ আগস্ট) সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক রাফিকুজ্জামান ফরিদের পাঠানো এক বিবৃতিতে এই উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়।

বিবৃতিতে জানানো হয়, 'বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে গতকাল ২০ আগস্ট ছাত্র ইউনিয়ন ও সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট  অফিসে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের  যে ঘটনা ঘটেছে, তা খুবই উদ্বেগজনক ও নিন্দনীয়।

মতপার্থক্যের কারণে, কোন সংগঠন বা প্রতিষ্ঠানের অফিসে কিংবা কারও বাসায় হামলা ও ভাংচুর করা, কাউকে শারীরিকভাবে আঘাত করা– অসহিষ্ণু ও অগণতান্ত্রিক মনোভাবের বহিঃপ্রকাশ। কে ক্যাম্পাসে থাকবে, কে থাকবে না- ‘নতুন বাংলাদেশে’ এটা কোন ব্যক্তি, সংগঠন বা গোষ্ঠী ঠিক করে দিতে পারে না। যে ঘটনা বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘটেছে তা আমাদের উদ্বিগ্ন করেছে!  শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদী শাসনে এসব ঘটনা আমরা ঘটতে দেখেছি। সে সময় ছাত্রলীগ ক্যাম্পাসের সকল ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতো। গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশে এটি মোটেই গ্রহণযোগ্য নয়। এইসকল ক্ষেত্রে যদি ভুল বুঝিয়ে, উত্তেজিত করে বেশকিছু সাধারণ ছাত্রকে জড়ো করা হয়, তবুও নয়। 'মব জাস্টিস', 'ক্যান্সেল কালচার' গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির বৈশিষ্ট্য নয়।

মত প্রকাশের অধিকার প্রতিষ্ঠা করার জন্য এই আন্দোলনে শত শত ছাত্র- জনতা জীবন দিয়েছে। আওয়ামী লীগ শাসনামলে আমরা দেখেছি যে, ভিন্ন মতকে কীভাবে দমন করা হত, কেবল আওয়ামীলীগের রাজনীতিই প্রতিষ্ঠা করা হত। এর বিরুদ্ধে ছাত্র সমাজ লড়াই করেছে, বিজয় অর্জন করেছে। এই ‘নতুন বাংলাদেশে’ মত প্রকাশের স্বাধীনতার উপর হস্তক্ষেপ কিংবা ভিন্ন মতকে দমন করা- এই আন্দোলনের চেতনারই বিরুদ্ধে যায়। '

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, 'আমরা শিক্ষার্থীদেরকে বলব, বিভিন্ন ধরনের কায়েমী স্বার্থবাদী গোষ্ঠী ও পরাজিত ফ্যাসিবাদের প্রতিনিধিরা সাধারণ শিক্ষার্থীর বেশ ধরে নিজ নিজ এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য কাজ করছে। এদের ব্যাপারে সতর্ক থেকে নিজেদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও এলাকায় গণতান্ত্রিক পরিবেশ ও পারস্পরিক সম্প্রীতি বজায় রাখুন। পাশাপাশি হামলা, ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।'

ওই বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছেন-

১। আনু মুহাম্মদ, প্রাক্তন অধ্যাপক, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়

২। গীতি আরা নাসরীন, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

৩।  ডা. মো. হারুন - অর - রশিদ, প্রাক্তন অধ্যাপক, সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ এন্ড হসপিটাল

৪। তাসনীম সিরাজ মাহবুব, ইংরেজি বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

৫।  সাঈদ ফেরদৌস, নৃবিজ্ঞান বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়

৬।  সামিনা লুৎফা, সমাজবিজ্ঞান বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

৭।  নাঈম মোহায়মেন, সহযোগী অধ্যাপক, কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়

৮।  ফাতেমা শুভ্রা, নৃবিজ্ঞান বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়

৯।  দীপ্তি দত্ত, প্রাচ্যকলা বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

১০।  রুশাদ ফরিদী, অর্থনীতি বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

১১।  অলিউর সান, ইংরেজি ও মানবিক বিভাগ, ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশ

১২। সিউতী সবুর, ইএসএস বিভাগ, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়

১৩। সৌভিক রেজা, বাংলা বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

১৪। কাজলী সেহরীন ইসলাম, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

১৫। মাহমুদা আকন্দ, দর্শন বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়

১৬। সিরাজাম মুনিরা, বাংলা বিভাগ, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর

১৭। আব্দুল্লাহ হারুন চৌধুরী, এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স ডিসিপ্লিন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়

১৮। মির্জা তাসলিমা সুলতানা, নৃবিজ্ঞান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়

১৯। ফাহিমা আল ফারাবী, নৃবিজ্ঞান বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়

২০। পারভীন জলী, ইতিহাস বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়

২১। সৌমিত জয়দ্বীপ, স্কুল অব জেনারেল এডুকেশন, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়

২২। সৈয়দ নিজার, দর্শন বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়

২৩। আ-আল মামুন, অধ্যাপক, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

২৪। মাসুদ ইমরান মান্নু, প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়

২৫। মনিরা শরমিন, সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম যোগাযোগ বিভাগ, গ্রিন ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ

২৬। নাসরিন খন্দকার, গবেষক, ইউনিভার্সিটি কলেজ কর্ক, আয়ারল্যান্ড

২৭। কাজী মারুফুল ইসলাম, উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

২৮। আসিফ মোহাম্মদ শাহান, উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

২৯। অধ্যাপক গোলাম রব্বানী, ইতিহাস  বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়

৩০।  অধ্যাপক কাজী শেখ ফরিদ, গ্রামীণ সমাজবিজ্ঞান বিভাগ,  বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়

৩১। অমিতাভ রেজা চৌধুরী, চলচ্চিত্র নির্মাতা

৩২।  উম্মে ফারহানা, শিক্ষক, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়

৩৩। তানিয়াহ মাহমুদা তিন্নী, শিক্ষক, ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি

৩৪। ফেরদৌস আরা রুমী, মানবাধিকারকর্মী

৩৫। সীমা দত্ত, নারী নেত্রী

৩৬। সাংবাদিক সায়দিয়া গুলরুখ

৩৭। বিধান রিবেরু, লেখক ও সাংবাদিক

৩৮। রেজওয়ানা করিম স্নিগ্ধা, নৃবিজ্ঞান বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়

৩৯। জলি তালুকদার, নারী নেত্রী

৪০। ব্যারিস্টার সারা হোসেন

৪১। আবেদা গুলরুখ, আইনজীবী সুপ্রিম  কোর্ট

৪২। ব্যারিস্টার ডক্টর কাজী জাহেদ ইকবাল

৪৩। প্রিয়া আহসান, আইনজীবী, সুপ্রিম কোর্ট

৪৪। অভিনু কিবরিয়া ইসলাম, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

৪৫। মানস চৌধুরী, নৃবিজ্ঞান বিভাগ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়

৪৬। ফারহা তানজিম তিতিল , অর্থনীতি, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া

এমটিআই

Link copied!