কুষ্টিয়া: ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হাফিজুল ইসলামের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন করেছেন শিক্ষার্থীরা। এরই পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার (৭ সেপ্টেম্বর) দুপুর দেড়টায় ক্যাম্পাসের প্রধান ফটকে তালা লাগিয়ে ফটক আটকে দেয় শিক্ষার্থীরা।
এসময় ‘দফা এক দাবি এক, হাফিজের পদত্যাগ’, ‘সমকামী হাফিজের অপসারণ চাই’, ‘হাফিজ হটাও বিভাগ বাঁচাও’ সহ নানা স্লোগান দিতে থাকে শিক্ষার্থীরা। এসময় প্রধান ফটক আটক করে প্রায় ২ ঘন্টা আন্দোলন করে শিক্ষার্থীরা। প্রধান ফটক অবরোধকালে প্রক্টর ড. শাহীনুজ্জামান, সহকারী প্রক্টর ড. আব্দুল বারী ও ড. খাইরুল ইসলাম উপাচার্যের নিকট তাদের দাবি উত্থাপনের নির্দেশ দেন। পরে বেলা ৩টায় উপাচার্যের সাথে শিক্ষার্থীদের আলোচনা হয়।
এসময় শিক্ষার্থীরা শিক্ষক হাফিজুল ইসলামের বিপক্ষে তাদের অভিযোগ উত্থাপন করেন। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, সহকারী অধ্যাপক হাফিজুল ইসলাম গোয়েন্দা লাগিয়ে শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিগত জীবনে হস্তক্ষেপ করেন, ক্লাসে মার্ক টেম্পারিং, ফ্যানের সাথে ঝুলিয়ে পেটানোর হুমকি, প্রতিনিয়ত বিশ্রী গালাগালি ও শব্দচয়ন করেন, ক্যাম্পাস থেকে বের করে দেওয়ার হুমকি প্রদান, আন্দোলনে জড়িত শিক্ষার্থীকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হুমকিসহ নানা অভিযোগ করা হয়। এছাড়া তাকে ছাত্রলীগের এজেন্ডা বাস্তবায়নকারী ও ছাত্রলীগের দোসর বলে আখ্যায়িত করেন শিক্ষার্থীরা৷ শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, ছাত্রলীগের মিছিলে যাওয়ার জন্য বিভিন্ন সময় তিনি চাপ প্রয়োগ করেন, একাডেমিক ক্যারিয়ার ধ্বংসের হুমকি, ফেইক আইডি দিয়ে হেনস্তা, ব্লেকমেইল, শিক্ষার্থীদের নেশায় জড়িত বলে হেনস্তা, হল থেকে নামার হুমকি, লালপানি ধরিয়ে জাত চিনিয়ে দেওয়ার হুমকিসহ বিভিন্ন সময় উস্কানিমূলক কথা বলেন ইবি শিক্ষক হাফিজুল ইসলাম।
এ বিষয়ে ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী লামিয়া হোসেন জানান, ‘আমি প্রতিনিয়ত আতঙ্কে থাকতাম। আমি কি পোশাক পড়বো, কোথায় যাবো, কি খাবো, সেই স্বাধীনতাটুকু তিনি কেড়ে নিয়েছিলেন। দুইদিন বিভাগে না যাওয়ায় আমাকে ফ্যানে ঝুলিয়ে পিটাতে চেয়েছেন। বিভাগের মেয়েদের ওপেনে গালিগালাজ করেন। মেয়েদের অশ্লীল শব্দ বলেও সম্বোধন করেন।’
এ বিষয়ে উক্ত বিভাগের শিক্ষার্থী হৃদয় জানান, ‘একজন শিক্ষক কখনো অন্যের ব্যক্তিগত বিষয়ে মেন্টালি অ্যাটাক করতে পারেনা না। কিন্তু তিনি সকল শিক্ষার্থীর সাথে, কোথায় থাকবো, কোথায় আড্ডা দেবো, কোন হলে থাকবো, এসব নিয়ে বাড়াবাড়ি করতেন।’
এ বিষয়ে জানার জন্য সহকারী অধ্যাপক হাফিজুল ইসলামের সাথে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ বলেন, লিখিত অভিযোগ দিলে আইন অনুসারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রয়োজনে শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি নিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। কথা বলার, অভিযোগ করার জায়গা তৈরি হয়েছে। তোমরা অভিযোগ করবে, আমি শুনবো কিন্তু মাথায় রাখতে হবে তোমাদের দাবি আদায়ের ক্ষেত্রে অন্যের অসুবিধা যাতে না হয়। এজন্য গাড়ি আটকিয়ে আন্দোলন না করার অনুরোধ করেন উপাচার্য।
এসএস
আপনার মতামত লিখুন :