লক্ষ্মীপুর: বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত লক্ষ্মীপুরের আফনান পাটওয়ারী এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ ৪.১৭ পেয়ে সফলতার সহিত কৃতকার্য হয়েছেন। তার এই অর্জন পরিবারের জন্য খুশির খবর হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু খুশির এ সময়ে হাসিখুশি থাকতে পারছেন না মা নাছিমা আক্তার ও স্বজনরা।
মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) বিকেলে আফনানের মা নাছিমা আক্তার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। এ আনন্দের দিনে আফনানের শূন্যতায় সীমাহিন কষ্ট কুড়ে খাচ্ছে তার তার মা ও বোনকে। মা'র বুক ভরা কষ্ট কান্না আরও বেড়ে গেল যেন আজকের এই দিনে।
আফনানের মা নাছিমা আক্তার কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আফনানের ভালো ফলাফল আমার কাছে খুশির খবর। কিন্তু যাকে নিয়ে আমি খুশি উদযাপন করবো, সেতো আমার কাছে নেই। গুলি করে আমার ছেলেকে মেরে ফেলেছে। আমার কোল শূন্য করে দিয়েছে। তাকে নিয়ে অনেক স্বপ্ন ছিল। এইচএসসি পাশের পর বিদেশে পড়তে যাওয়ার কথা ছিল। আমি এখন বিদেশে পড়তে পাঠামু কারে? আমার আফনাননতো আমার কাছে নাই।
আফনান লক্ষ্মীপুর ভিক্টোরি কলেজের বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় (রোল: ১৭৮০৩৮ ও রেজিষ্ট্রেশন: ১৯১১৩৫৩৩৬৭) দিয়েছেন। তিনি লক্ষ্মীপুর পৌর শহরের বাঞ্চানগর গ্রামের বাস টার্মিনাল এলাকার মৃত সালেহ আহমেদের ছেলে।
বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে লক্ষ্মীপুর জেলার সমন্বয়ক এনামুল হক বলেন, আফনান লক্ষ্মীপুরের প্রথম শহীদ। তিনি এইচএসসি সহ দুনিয়ার সকল পরীক্ষায় সফলতার সহিত কৃতকার্য হয়েছেন। আমরা দোয়া করি আল্লাহ যেন দুনিয়ার মতো পরকালেও তাকে সফলতা লাভের তৌফিক দান করেন। একই সঙ্গে মহান আল্লাহ যেন তাকে শাহাদাতের সর্বোচ্চ মর্যাদা দান করেন।
আরেক সমন্বয়ক আরমান হোসেন বলেন, কোটা বৈষম্য দূর করতে যারা আন্দোলন করেছেন তারা সবাই মেধাবী ছিলেন। মেধার স্বীকৃতি দেওয়া ও নেওয়ার জন্য মেধাবী শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করেছে। তাদের রক্ত ঢেলে দিয়েছে। শহীদ আফনান জিপিএ ৪.১৭ পেয়ে মেধার স্বাক্ষর রেখেছে। এটিও প্রমাণিত হয়েছে, প্রকৃত মেধাবীরাই এ আন্দোলন করেছে।
প্রসঙ্গত, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ৪ আগস্ট লক্ষ্মীপুরের মাদাম ব্রিজ এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। পরে ১৪ আগস্ট আফনানের মা নাছিমা আক্তার বাদী হয়ে সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান একেএম সালাহ উদ্দিন টিপুকে প্রধান করে ৭৫ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত ৫০০-৬০০ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন।
আইএ
আপনার মতামত লিখুন :