বছর শুরুতে সব বই পাবে না শিক্ষার্থীরা, হবে না উৎসব

  • নিজস্ব প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: জানুয়ারি ১, ২০২৫, ১১:৩৭ এএম
বছর শুরুতে সব বই পাবে না শিক্ষার্থীরা, হবে না উৎসব

ঢাকা : অন্তর্বর্তী সরকার ঘটা করে বই উৎসব করবে না। বই বিতরণ কার্যক্রমও উদ্বোধন করা হবে না। শুধু পাঠ্যবইয়ের অনলাইন ভার্সন উদ্বোধন করবে সরকার।

বুধবার (১ জানুয়ারি) সকাল ১০টায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। এতে প্রধান অতিথি থাকবেন শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ।

এদিকে ছাপার কাজ শেষ না হওয়া বছরের শুরুতে শিক্ষার্থীরা সব বই পাবে না বলে জানিয়েছে এনসিটিবি।

সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, প্রাথমিকে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত সব বই ছাপানোর কাজ শেষ। চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির বই ছাপানো বাকি রয়েছে। তাদের জানুয়ারির মাঝামাঝি পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হতে পারে।

অন্যদিকে মাধ্যমিক পর্যায়ে প্রথমদিকে বাংলা, ইংরেজি ও গণিত বই দেওয়া হবে। বাকি বই দুই ধাপে দেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে। এনসিটিবির নির্ধারিত সময় জানুয়ারির ২০ তারিখ পর্যন্ত।

আনুষ্ঠানিকতা না থাকায় নিজ নিজ স্কুলে প্রধান শিক্ষক, অধ্যক্ষ, ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য এবং স্থানীয় প্রশাসনের উপস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দেওয়া হবে। আলাদা করে কোনো অনুষ্ঠান করা হবে না।

নতুন বছরে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক মিলিয়ে বই ছাপানো দরকার প্রায় ৪০ কোটি। গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত সর্বোচ্চ ছাপানো হবে প্রায় সাত কোটি। ৩৩ কোটি বই এখনো ছাপা হয়নি, যা হিসাবে ৬৩ শতাংশ। নির্ধারিত সময়ে বই ছাপাতে না পারার পেছনে রাজনৈতিক পটপরিবর্তন এবং পাঠ্যবইয়ে জুলাই আন্দোলনের গল্প ও গ্রাফিতি যুক্ত করাসহ একাধিক সংশোধন-পরিমার্জনকে দায়ী করছেন সংশ্লিষ্টরা। খরচ কমাতে উৎসব করে বই দেওয়ার কোনো কর্মসূচি রাখেনি সরকার। তবে ১ জানুয়ারি বইয়ের অনলাইন ভার্সন শিক্ষার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করা হবে।

এনসিটিবি ও প্রকাশনী সংশ্লিষ্টরা জানান, ২০২৫ শিক্ষাবর্ষে ৪০ কোটি ১৫ লাখ ৬৭ হাজার ২০২ কপি বই ছাপানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে। তার মধ্যে প্রাথমিকের জন্য ছাপানো হবে ৯ কোটি ১৯ লাখ ৫৪ হাজার ৩৫৫ কপি বই। আর মাধ্যমিক পর্যায়ে ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের জন্য ছাপানো হবে ৩০ কোটি ৯৬ লাখ ১২ হাজার ৮৪৭ কপি বই। ব্রেইল বই ছাপানো হবে প্রায় ৮ হাজার। সব মিলিয়ে শিক্ষার্থী সংখ্যা ৪ কোটি ৩৪ লাখ ৩ হাজার ২৮৩ জন।

প্রতিবছর জুন-জুলাই মাস থেকে নতুন বই ছাপানোর কাজ শুরু করা হয়। চলতি বছর আওয়ামী লীগ সরকার সে অনুযায়ী কাজ শুরু করে। তবে বিপত্তি ঘটে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতনের পর। এনসিটিবিতে বড় ধরনের রদবদল ঘটে। চেয়ারম্যানসহ একাধিক সদস্য পদত্যাগ করেন। অন্তর্বর্তী সরকার সেখানে নতুনদের পদায়ন করে। এরই মধ্যে নতুন কারিকুলাম বাতিলের দাবি ওঠে।

একই সঙ্গে জুলাই আন্দোলনের গল্প ও গ্রাফিতি পাঠ্যবইয়ে যুক্ত করার জন্য বিভিন্ন কর্মসূচিও পালন করা হয়। সেসব গল্প রচনা ও পরিমার্জন করার জন্য নতুন করে কাজ করতে হয়। যার কারণে অতিরিক্ত সময় লাগে। সেই সঙ্গে যুক্ত হয়েছে প্রকাশনী সংস্থাগুলোর কাগজ না পাওয়া এবং ব্যাংকঋণ পেতে বিলম্ব হওয়ার বিষয়টি।

এনসিটিবি চেয়ারম্যান অধ্যাপক এ কে এম রিয়াজুল হাসান বলেন, ‘অপ্রয়োজনীয় খরচ এড়াতে ঘটা করে বই উৎসব করতে চায় না অন্তর্বর্তী সরকার। অনলাইনে এ কার্যক্রম শুরু হবে। এরপর সব স্কুলে সুষ্ঠুভাবে শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দেওয়া হবে।’

এমটিআই

Link copied!