জবি : মন্ত্রণালয় থেকে লিখিত অঙ্গীকার পাওয়ায় টানা ৩৫ ঘণ্টা পর অনশন প্রত্যাহার করে নিলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীরা।
সোমবার (১৩ জানুয়ারি) সন্ধ্যা ৭টার দিকে সংবাদ সম্মেলনে অনশন প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন জবি উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী একেএম রাকিব।
এর আগে বিকাল ৪টায় জবি থেকে সচিবালয় অভিমুখে পদযাত্রা শুরু করেন তারা। বেলা পৌনে ৫টার দিকে সচিবালয়ের সামনে এসে পৌঁছান। এ সময় অনশনরত অসুস্থ শিক্ষার্থীরা স্যালাইন নিয়ে রিকশায় চেপে পদযাত্রা অংশগ্রহণ করেন। তাদের সঙ্গে ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থী।
সংবাদ সম্মেলনে এ কে এম রাকিব বলেন, আগামী বুধবার যে মিটিং হবে সেখানে দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর চুক্তি স্বাক্ষর হবে— এ মর্মে লিখিত অঙ্গীকার পেয়েছি।
এছাড়া বাণী ভবন ও হাবিবুর রহমান হলে অস্থায়ী স্টিলবেজড ভবনের নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীদের ভাতা দেওয়ার ব্যাপারে যাচাই ও আলোচনা করে সিদ্ধান্ত হবে বলেও প্রতিশ্রুতি পেয়েছি। ফলে আমরা অনশন প্রত্যাহার করে নিচ্ছি।
তিনি বলেন, যেহেতু তারা তিনটি দাবির দুটি মেনে ও একটি যাচাই করে দেখবেন, সেহেতু আমরা অনশন প্রত্যাহার করে নিচ্ছি। তবে বুধবারের মিটিংয়ের আগ পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম শাটডাউন থাকবে।
এর আগে সচিবালয়ের সামনে শিক্ষার্থীরা বিপ্লবে বলীয়ান, নির্ভীক জবিয়ান, একশন টু একশন, ডাইরেক্ট একশন, আপোষ না সংগ্রাম, সংগ্রাম সংগ্রাম, লজ্জা লজ্জা, ইউজিসি ইউজিসি, অনশন অনশন চলছে চলবে, কবে দিবা ক্যাম্পাস, প্রশাসন কি করে, আমার ভাই অনশনেসহ নানা স্লোগান দেন।
এদিন দুপুর ২টায় সেনাবাহিনীকে দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ হস্তান্তর নিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে একটি চিঠি ইস্যু করা হয়। এই চিঠিতে সেনাবাহিনীকে কাজ হস্তান্তর বিষয়ে বুধবার সচিবালয়ে সভা অনুষ্ঠিত হবে বলা হয়। এ চিঠি আসার পর অনশনরত শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে পাল্টা তিনটি দাবি জানানো হয়।
এর আগে এদিন সকাল থেকে পুরো ক্যাম্পাস শাটডাউন ও টানা দ্বিতীয় দিনের মত অনশন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক, শহীদ সাজিদ একাডেমিক ভবনে (সাবেক বিবিএ ভবন), রফিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেন তারা। শাটডাউন কর্মসূচির সাথে একাত্মতা পোষণ করে বিশ্বিবদ্যালয়ের সকল বিভাগ ও দপ্তরে একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়। কোন বিভাগে ক্লাস ও পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়নি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. সাবিনা শারমীন বলেন, আমাদের সন্তানেরা জীবন বাজি রেখে বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য, আবাসনের জন্য অনশনে ছিল। আশা করছি দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ ত্বরান্বিত হবে।
বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. রেজাউল করিম বলেন, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের ফলেই আমাদের এই কার্যক্রম আরো সহজ ও ত্বরান্বিত হয়েছে। আমাদের কাজ অনেকটা এগিয়ে গেছে। মিটিংয়ে প্রকল্পের অবস্থাও বিশ্লেষণ করা হবে। তারপর একটা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে। সভায় আমরা আমাদের দাবির অন্য বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করবো।
এর আগে রোববার সকাল সাড়ে ৮টা থেকে অনশন করে শিক্ষার্থীরা। অনশনে অসুস্থ হয়ে প্রায় ১৪ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।
এমটিআই
আপনার মতামত লিখুন :