ঢাকা : ব্যান্ড সংগীতের কিংবদন্তি শিল্পী ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আজম খানের জন্মদিন আজ। ১৯৫০ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি ঢাকার আজিমপুর সরকারি কলোনির ১০ নম্বর কোয়ার্টারে জন্ম নেন পপ সম্রাট খ্যাত এই শিল্পী। তার বাবা আফতাবউদ্দিন আহমেদ ও মা জোবেদা খাতুন।
৬০ দশকের শুরুর দিকে সংগীত জীবনের শুরু করেন আজম খান। ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানের সময় তিনি ‘ক্রান্তি শিল্পীগোষ্ঠী’র সক্রিয় সদস্য ছিলেন এবং পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর শোষণের বিরুদ্ধে গণসংগীত প্রচার করেন। মাত্র ২১ বছর বয়সে সেকশন কমান্ডার হিসেবে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন আজম খান।
দেশ স্বাধীন হওয়ার পর গান নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েন তিনি। গড়ে তুলেন ব্যান্ডদল ‘উচ্চারণ’। ১৯৭২ সালে বিটিভিতে আজম খানের ‘এত সুন্দর দুনিয়ায় কিছুই রবে না রে’ ও ‘চার কালেমা সাক্ষী দেবে’ গান দুটি সরাসরি প্রচারিত হলে তুমুল জনপ্রিয়তা অর্জন করে। ওই বছরই নটরডেম কলেজের প্রাঙ্গণে আয়োজিত একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রথমবারের মতো দর্শকের সামনে গান করেন তিনি।
১৯৭৪ সালে তার গাওয়া ‘বাংলাদেশ’ গানটি সারা দেশে হৈচৈ ফেলে দেয়। তার হাত ধরেই বাংলা গান খুঁজে পায় নতুন মাত্রা।
১৯৮২ সালে আজম খানের প্রথম গানের ক্যাসেট ‘এক যুগ’ প্রকাশ হয়। এরপর একে একে বেশ কিছু অ্যালবাম বাজারে আসে। সংগীত ক্যারিয়ারে এই শিল্পী প্রায় ১৭টি এককসহ একাধিক দ্বৈত ও মিশ্র অ্যালবামের গান গেয়েছেন।
আজম খানের গাওয়া উল্লেখযোগ্য জনপ্রিয় গানের তালিকায় আছে- আলাল ও দুলাল, অনামিকা, হারিয়ে গেছে, বাংলাদেশ, ওরে সালেকা ওরে মালেকা, আসি আসি বলে, আমি যারে চাইরে, পাপড়ী, অভিমানি, এই গান শেষ গান ইত্যাদি।
২০১৯ সালে তাকে দেয়া হয় মরণোত্তর রাষ্ট্রীয় দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার ‘একুশে পদক’। বেঁচে থাকতে একুশে পদক না পেলেও সংগীতে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ মৃত্যুর পরে তাকে এই স্বীকৃতি দেয়া হয়।
ক্যান্সারের সঙ্গে যুদ্ধ করে সবাইকে কাদিয়ে, ২০১১ সালের ৫ই জুন শেষ নিঃস্বাস ত্যাগ করেন আজম খান। গানের মধ্য দিয়ে এই পপ সম্রাট অমর হয়ে আছেন, থাকবেন চিরকাল।
সোনালীনিউজ/এমটিআই
আপনার মতামত লিখুন :