ঢাকা : তারা প্রত্যেকেই রঙিন দুনিয়ার স্বপ্নের মানুষ। নিজেদের গান, অভিনয় আর নানারকম পারদর্শিতায় ভক্তের মনে এমন একটা জায়গা দখল করে রাখেন তারা যা সাধারণের ধরাছোঁয়ার অনেক বাইরে। কিন্তু বাস্তবেও ঠিক এমনটাই নিখুঁত কি হন তারা!
আসলে সবার জীবন ঠিক এমনটা নয়। অনেকে খ্যাতির শিখরে থেকেও কাটাতে চান এলোমেলো জীবন। নানা অপরাধে জড়িয়ে নাম লিখিয়েছেন অপরাধের খাতায়। এমন সব সেলেবদের কথা মনে করতেই চোখের সামনে ভেসে উঠবে পর্দা কাঁপানো অসংখ্য তারকার প্রতিচ্ছবি।
অনেক সেলিব্রেটি তারকার বাবা বা মা কিংবা দুজনই ছিলেন জেল খাটা আসামি। আবার অনেকেই আছেন যারা আদর্শ পরিবারে বেড়ে উঠেও খ্যাতির আদিখ্যেতায় অপরাধ জগতে পা বাড়ান। জড়িয়ে পড়েন দুর্নীতি, অপহরণ, ধর্ষণ, মাদকাসক্ত আর অবৈধ অস্ত্র মামলায়।
হলিউডের ফ্যান্টাসি জগতে এমন ঘটনা অহরহই ঘটছে। এমনি এক হলিউড তারকা আমান্ডা বেনিস। বেপরোয়া গাড়ি চালানো এবং মাদক গ্রহণের অভিযোগে দিয়েছেন অর্থদণ্ড এবং ভোগ করেছেন কারাবাস।
সেই তালিকা থেকে বাদ যাননি কানাডিয়ান পপস্টার জাস্টিন বিবারও। ভক্তদের গায়ে থুথু ফেলা, প্রতিবেশীর বাড়িতে ডিম ছোড়া, মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালানো, যুদ্ধাপরাধীদের সম্মান জানানো ছাড়াও অনেক বিতর্কিত অবস্থা তৈরি করেন।
আশির দশকের দুনিয়া কাঁপানো সংগীতশিল্পী এলভিস প্রিসলি। মাত্র ৪২ বছর বয়সে ১৯৭৭ সালে মৃত্যুবরণ করেন ‘দ্য কিং অব রক অ্যান্ড রোল’ খ্যাত মার্কিন গায়ক, সংগীত পরিচালক ও অভিনেতা এলভিস প্রিসলি। তাঁর অকালমৃত্যুর প্রকৃত কারণ নিয়ে ধোঁয়াশা থাকলেও ধারণা করা হয়, মাত্রাতিরিক্ত মাদক সেবনের ফলে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছিলেন তুমুল জনপ্রিয় এই তারকা সংগীতশিল্পী।
মার্কিন কমেডিয়ান অভিনেতা টিম অ্যালেনের কথাই ধরুন। মাত্র ২৫ বছর বয়সে জেলে কাটাতে হয়। অপরাধ তিনি কোকেন পাচারের সময় ধরা পড়েন। তার দুই বছরের জেল হয়। জ্যাকি চ্যানের ছেলে জেসি চ্যান। মাদক রাখার দায়ে কুংফু তারকা জ্যাকি চ্যানের ছেলেকে ছয় মাসের কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছে চীনের একটি আদালত।
‘হাঙ্গার গেমস’-এর ফায়ার গার্ল কাটনিসের প্রশিক্ষকের চরিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে অনেক প্রশংসা কুড়িয়েছেন উডি হ্যারিসন। তার বাবা চার্লসের জীবনটা সিনেমার কাহিনীর মতো। তিনি ছিলেন পেশাদার খুনি। ১৫ বছরের জেল হয় তার।
বলিউডপাড়ায়ও অপরাধী সেলিব্রেটিদের সংখ্যা কম নয়। জনপ্রিয় ব্যান্ড ‘ল্যাকমে’র ফ্যাশন শো-তে নিজের স্ত্রী টুইঙ্কল খান্নাকে দিয়ে প্যান্টের জিপ খোলানোর জন্য বেশ সমালোচিত হয়েছিলেন অক্ষয় কুমার। পাবলিক শো-তে এমন আচরণের জন্য জেলে যেতে হয়েছিল টুইঙ্কলকে।
পরিচারিকাকে ধর্ষণের অভিযোগে ২০০৯ সালে গ্রেফতার করা হয় ‘গ্যাংস্টার’ অভিনেতা শাইনিকে। দীর্ঘ সময় কারাগারে কাটাতে হয় তাকে। মাদক পাচারের অভিযোগ ওঠে ফারদিন খানের বিরুদ্ধে। ২০০১ সালে লক্ষ টাকার কোকেনসহ ফারদিনকে গ্রেফতার করে নারকোটিক কন্ট্রোল ব্যুরোর (এনসিবি) গোয়েন্দারা।
২০০৬ সালে বেলাগাম গতিতে ড্রাইভিং ও দুই পথচারীকে ধাক্কা দেওয়ার অভিযোগ ওঠে জন আব্রাহামের বিরুদ্ধে। ৬ বছর মামলা চলার পর শেষে ১৫ দিনের জন্য জেলে যেতে হয়েছিল মেয়েদের ঘুম হারাম করা জনকে।
বলিউডের ভাইজান খ্যাত সালমানের বিরুদ্ধে তিন দফায় বিরল প্রজাতির পাঁচটি কৃষ্ণসার হরিণ হত্যার অভিযোগ ওঠে। যার শুরুটা হয়েছিল ১৯৯৮ সালে একটি শুটিং ইউনিট থেকে। সেই মামলায় সালমানকে পাঁচ বছরের জেল ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে যোধপুর আদালত।
তবে শেষমেশ তিনি অব্যাহতি পান ২০১৭ সালে। ২০০২ সালের আরেকটি ঘটনায় মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালিয়ে এক পথচারীকে হত্যার অভিযোগে ১৮ দিনের কারাবাস করেন। এক সময় বেকসুর খালাস পেলেও শেষ রক্ষা হয়নি। এখনো সেটি বিচারাধীন।
এবার সে তালিকায় নাম লেখালেন বাংলাদেশের জনপ্রিয় অভিনেত্রী পরীমনির নাম। ৪ আগস্ট এই নায়িকাও গ্রেপ্তার হন। বনানীর বাসা থেকে গ্রেপ্তারের সময় তার কাছ থেকেও মাদক জব্দ করা হয়। পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ-সিআইডি পরীমণিকে দুই দফায় ছয় দিন রিমান্ডের পর গতকাল শুক্রবার কারাগারে পাঠিয়েছে।
সোনালীনিউজ/এমটিআই
আপনার মতামত লিখুন :