জেলজীবনের বই লেখা নিয়ে কটূক্তির স্বীকার পরীমনি

  • বিনোদন প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: মার্চ ১৩, ২০২৪, ০৪:৩৪ পিএম
জেলজীবনের বই লেখা নিয়ে কটূক্তির স্বীকার পরীমনি

ফাইল ফটো

ঢাকা: রীতিমতো হইচই ফেলে চলচ্চিত্রে পথ চলা শুরু করেছিলেন আলোচিত-সমালোচিত নায়িকা পরীমনি। ব্যক্তিগত প্রেম, বিয়ে আর বড়পর্দায় অভিষেকের আগেই ২৩টি সিনেমায় চুক্তিবদ্ধ হয়ে আলোচনার জন্ম দেন সিনেমাপাড়ায়। সমালোচনাও কম হয়নি এ নায়িকাকে নিয়ে। শুধু তাই নয় বোর্ড ক্লাবের নাসির কাণ্ডে তাকে জেল পর্যন্ত খাটতে হয়। সেই জেলজীবনের বই লিখার কথা জানান দেন পরীমনি। তাতেই বাধে বিপত্তি। এবার বই লিখা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় নানান কটুক্তির স্বীকার হলেন পরীমনি। কমেন্টে কমেন্টে বয়ে যাচ্ছে হাহা রিয়েক্টের বন্যা।

অনেকে এই নায়িকাকে অশ্লীল বই লেখার কথা জানান দিয়েছেন। একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলের কমেন্ট বক্সে নিশা মাহমুদ নামে এক গণমাধ্যমকর্মী লিখেন, ‘আমি পড়লাম তেলজীবন।’ নাসির মিয়া নামের একজন পরীমনিকে সাবরিনার ছোট বোনের সঙ্গে তুলনা করেছেন। এবিএম মোরশেদ হাসান নামে লিখেন, ‘আমরা তার জেলে যাওয়ার আগের দুবাই সফরের গল্প এবং ওয়াকারের গল্প নিয়ে সংকলন চাই।’এম ইব্রাহিম গাজী লিখেছেন, ‘কবি পরীন্দ্রনাথ’ এবং নুরুল হক নামক একজন তার বইয়ের নামকরণ দিয়েও দিয়েছেন, সেখানে তিনি লিখেন, ‘বইয়ের নাম হবে ‘‘আমাকে বোতল গলা পর্যন্ত ঢুকিয়েছে।’’

নেট দুনিয়ায় সমালোচনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমাকে নিয়ে যত নেগেটিভ কথা হয়েছে, ঠিক ততটুকু পজিটিভ কথাও হয়েছে। আমি যখন জেল থেকে বের হলাম, মানুষ আমাকে অনেক সাপোর্ট করেছে। তাদের সঙ্গে আমার রক্তের কোনো সম্পর্ক না থাকলেও তারা আমার কাজের জন্যই পাশে দাঁড়িয়েছিল।’ তবে এসবের তোয়াক্কা না করে পরীমনি চটেছিলেন প্রাক্তন স্বামী শরিফুল রাজের উপর। সম্প্রতি একটি অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানে পরীমনি গণমাধ্যমকর্মীদের জানান, সে কখনো শরিফুল রাজকে ছাড়বেন না। কারণ তিনি তার সন্তানের খবর নেননি। 

জানা গেছে, পরীমনি চলচ্চিত্রের সমান্তরাল পথ চলতে গিয়ে একটা সময় বিতর্কের পাহাড়ে উঠতে দেখা যায়। ফলে তার জীবনে নেমে আসে ঘোর অমানিশ। ২০২১ সালের ৪ আগস্ট বিকেলে তার বনানীর বাসায় অভিযান চালায় র‍্যাবের গোয়েন্দা দলের সদস্যরা। প্রায় ৪ ঘণ্টার অভিযান শেষে রাত ৮টার দিকে তাকে আটক করে র‌্যাব সদর দপ্তরে নিয়ে যাওয়া হয়। এ সময় তার বাসা থেকে বিপুল পরিমাণ মাদক জব্দের কথা জানায় র‌্যাব। ঘটনায় পরের দিন নায়িকার বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য আইনে র‌্যাব বাদী হয়ে মামলা করে। বর্তমানে জামিনে থাকলেও মামলা চলমান।

গ্রেপ্তার হওয়ার পর ২৭ দিন কারাগারে ছিলেন পরীমণি। সেখানে থাকার ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা সবাইকে জানাতে চান তিনি। তবে সিনেমায় নয়। কারাবাসের অভিজ্ঞতা নিয়ে বই লেখার পরিকল্পনা করেছেন এ নায়িকা।

পরীমণি জেলে যাওয়া নিয়ে জানান, জেলে যাওয়ার কারণ এখনও স্পষ্ট নয় তার কাছে। তবুও জেলজীবনের অভিজ্ঞতা কেমন ছিল, এ নিয়ে বই লিখবেন। যেখানে কারাবাসের দিনগুলোর গল্প তুলে ধরবেন।

এই চিত্রনায়িকা বলেন, ‘আমি কাউকে খুন করিনি, জঙ্গি হামলা করিনি, আমার বাসায় কোনো বোমা ছিল না। আমি আসলে কী করেছি এটাই জানি না! ভালো বিষয় হলো, এখান থেকে অনেক কিছু শিক্ষা নিয়েছি। এই কথাটুকু থাকবে আমার বইয়ে।’

পরীমনির ভাষ্য, ‘একটু স্ট্রেট ফরোয়ার্ড বলে হয়তো আমার সঙ্গে এমনটা হচ্ছে। তবে এখন আমি জানি মানুষ কী পছন্দ করে, আর কী করে না। মানুষ চায় নিজের গলাবাজির নিচে সবার গলাবাজি থাকুক। সবাই চায় আমি আস্তে কথা বলি, অন্যেরা যা চায় সেটা করি। সমাজের চাপানো কিছু নিয়ম আছে, সেগুলো মেনে চললেই তুমি লক্ষ্মী মেয়ে।’

জেল থেকে বেরিয়ে অভিনেতা শরীফুল রাজকে বিয়ে করেন পরীমণি। কিন্তু পারস্পরিক বোঝাপড়ার অভাবে ২০২৩ সালে বিচ্ছেদ হয়ে যায়। এর আগে ২০২২ সালের ১০ আগস্ট এই দম্পতির ঘর আলো করে আসে পুত্রসন্তান শাহীম মুহাম্মদ রাজ্য।

সব বিতর্ক পেছনে ফেলে পরীমণি এখন নিয়মিত অভিনয় করে যেতে চান। ভালো কিছু সিনেমার মাধ্যমে দর্শকের মনে জায়গা কিনতে চান। পরীমণি নিজের কাজটাই করে গেছেন। তার অভিনীত সিনেমাগুলো সেভাবে আলোড়ন তোলেনি ঠিকই। তবে সামাজিক মাধ্যমে তিনি ক্রমান্বেয়ে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন। তাই তো ২০২০ সালে ফোর্বস ম্যাগাজিনের করা এশিয়ার ১০০ ডিজিটাল তারকার তালিকায় ঠাঁই করে নিয়েছিলেন তিনি।

এএন/আইএ

Link copied!