ছিনতাইয়ের কবলে অভিনেতা বান্টি

  • বিনোদন ডেস্ক: | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: মার্চ ২, ২০২৫, ০৯:২৮ পিএম
ছিনতাইয়ের কবলে অভিনেতা বান্টি

ঢাকা: পূর্বাচল এক্সপ্রেসের ম্যাডামের বাড়ি শুটিং হাউস থেকে ফেরার পথে ছিনতাইকারীদের কবলে পড়েছেন অভিনেতা হারুন রশিদ। তিনি ‘বান্টি’ নামেই বেশি পরিচিত। শনিবার (১ মার্চ) রাত ১১টার দিকে ৩০০ ফিট এলাকায় কাঞ্চন ব্রিজ পার হলে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় ভয়ভীতি দেখিয়ে তার সঙ্গে থাকা সবকিছু নিয়ে নেন ছিনতাইকারীরা।

ঘটনাটি নিয়ে এই অভিনেতা সাংবাদিকদের জানান, এমন ঘটনার মুখোমুখি হতে হবে কল্পনাও করিনি। রাত ১০টা ৫০ মিনিটের দিকে সিএনজিচালিত অটোরিকশা নিয়ে কাঞ্চন ব্রিজ থেকে কমলাপুরের দিকে যাচ্ছিলেন। ৫ মিনিট চলার পর সেটি একটি অন্ধকার জায়গায় হঠাৎ বন্ধ হয়ে যায়।

হারুন বলেন, ‘গাড়িটা বন্ধ হওয়ার পর আমার খটকা লাগে। ড্রাইভার এটা–ওটা পরীক্ষা করতে শুরু করেন। এমন সময় পাশের ছোট রাস্তা থেকে দ্রুত দুইটা বাইকে চারজন তরুণ চলে আসেন। তাঁদের পেছনে বসা দুজনের হাতে চাপাতি। আরেকটা লম্বা অস্ত্র। একজন অস্ত্র দিয়ে কোপ দেওয়ার ভঙ্গি করলে, যা আছে সব দিয়ে দেই। বুঝতে পারি বড় কোনো দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তখন আমি বলি, ভাই আমার ক্ষতি করার দরকার নাই। সঙ্গে যা আছে দিয়ে দিচ্ছি, সব নিয়ে যান।’

অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে তখনো একজন হারুন রশিদকে ধরে রেখেছেন। বাকিরা দ্রুত সঙ্গে কী কী আছে, সেগুলো দেখে নিচ্ছিলেন। তাঁরা মানিব্যাগ, মুঠোফোন সব নিয়ে নেন। ‘মানিব্যাগ থেকে আমার টাকা নিল। কার্ড আছে কি না জানতে চাইলে বলি, নাই। পরে মানিব্যাগ দিয়ে দেয়। হঠাৎ একটি ছেলে আরেকজনকে বলে, “উনি তো নাটক করে, তার ফোন নিলে ঝামেলায় পড়মু আমরা। মোবাইল নেওয়ার দরকার নাই, বাদ দে চল,” বলে তাড়াতাড়ি চলে যায়। তার আগেই সিএনজির ড্রাইভারকে সরিয়ে দেয়।’ বলেন হারুন।

এ ঘটনায় মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন এই অভিনেতা। তিনি বলেন, ‘এমন ঘটনা মানুষের কাছে শুনতাম। অভিনেতা হিসেবে উপলব্ধি করতে পারতাম। এবার বাস্তবতার মুখোমুখি হলাম। কী করব, বুঝতে পারছিলাম না। আমি অসহায়ের মতো বসে ছিলাম। সেখানে অনেক রাস্তা। দুই নম্বর লেনে এসে আমি কিছু গাড়ি থামিয়ে সাহায্য চাওয়ার চেষ্টা করি। আসলে কেউ তো থামাতে চান না। আমার ইশারায় এক ভদ্রলোক গাড়ি থামান। বলেন, “আপনাকে চেনা চেনা লাগছে।” আমি বলি, ছিনতাইকারীদের খপ্পরে পড়েছিলাম। আমাকে একটু সামনে নামাইয়া দেবেন। তিনি কুড়িল বিশ্বরোড পর্যন্ত আমাকে নামিয়ে দেন।’

রাত তখন বলা যায়, ১২টার কাছাকাছি। কাছে কোনো টাকা নেই। একটি দোকান পান, মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে সেখান থেকে টাকা উঠিয়ে আরেকটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা নিয়ে বাসায় আসেন। হারুন বলেন, ‘আমি বাসায় ফেরার পরেও ভয়ংকর সময় পার করেছিলাম। মানসিকভাবে আমি দুর্বল হয়ে গেছি।’

হারুন রশিদ আরও বলেন, ‘আমাদের শুটিংয়ে যাওয়া–আসার গাড়ি থাকে। আমি যে শুটিংয়ে গিয়েছিলাম, সেখানেও ব্যবস্থা ছিল। কিন্তু আমার শুটিং একটু তাড়াতাড়ি শেষ হওয়ার কারণে আমি একাই চলে আসি। বেশির ভাগ সময় শুটিংয়ের গাড়িতেই আসি। সেটাই নিয়ম। গতকাল একা আসাটা আমার ভুল ছিল। আমার ভাগ্যে হয়তো লেখা ছিল, এমন দুর্ঘটনায় পড়ব। এর জন্য শুটিং ইউনিট দায়ী নয়। সহকর্মীরা এমন ভুল করবেন না।’

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উদ্দেশে তিনি সবশেষে বলেন, ‘এই রাস্তায় বাইকের সঙ্গে প্রায়ই এমন ঘটনা ঘটে শুনেছি। এবার সিএনজিতে আমার সঙ্গে ঘটনাটি ঘটল। আপনাদের কাছে অনুরোধ, এমন ঘটনা যেন না ঘটে।’ জানা যায়, একসঙ্গে ঈদের দুটি নাটকের শুটিংয়ে অংশ নিয়েছিলেন এই অভিনেতা। নাটকের পরিচালক এম আকাশ।

সূত্র-প্রথম আলো

আইএ

Link copied!