যতই দেই তাদের খুশি করা যায় না, গৃহকর্মী প্রসঙ্গে পরীমণির পাশে ন্যান্সি

  • বিনোদন ডেস্ক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: এপ্রিল ৭, ২০২৫, ১০:০২ এএম
যতই দেই তাদের খুশি করা যায় না, গৃহকর্মী প্রসঙ্গে পরীমণির পাশে ন্যান্সি

ঢাকা : আলোচিত চিত্রনায়িকা পরীমণির নামে গৃহকর্মীকে মারধরের অভিযোগে থানায় জিডি হয়েছে। জানা গেছে, এক বছরের কন্যাসন্তানকে খাবার খাওয়ানোকে কেন্দ্র করে গৃহকর্মীকে মারধর করেন পরীমণি। এ ঘটনায় পিংকি আক্তার নামের ওই গৃহকর্মী ঢাকার ভাটারা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন। ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসতেই সমালোচনার মুখে পড়েন এ নায়িকা।

ফেসবুক লাইভে এসে আবেগঘন কথাও বলেন ভক্তদের উদ্দেশে। আর এ ঘটনায় শোবিজের কেউ পাশে না দাঁড়ালেও এবার পরীমণির পাশে দাঁড়ালেন জনপ্রিয় গায়িকা ন্যান্সি। ফেসবুকে গৃহকর্মীদের প্রসঙ্গে এক দীর্ঘ স্ট্যাটাস দিয়েছেন ন্যান্সি। নিজেও বেশ কয়েকজন গৃহকর্মীর প্রতারণার শিকার হয়েছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।

সেই সঙ্গে পরীমণিকে নিয়ে সংবেদনশীল হওয়ার জন্যও সাংবাদিকদের আহ্বানও জানান এ গায়িকা।

ন্যান্সি লিখেছেন, ‘গৃহকর্মী নির্যাতিত হয় যেমন সত্যি ঠিক তেমনি কিছু গৃহকর্মীর দ্বারা গৃহকর্ত্রীও কম সমস্যার মুখোমুখি হন না! আমার পুরো বাসায় সিসি ক্যামেরা আছে শুধু মাত্র গৃহকর্মীর মিথ্যা হয়রানি থেকে বাঁচার জন্য!’

নিজের অভিজ্ঞতা উল্লেখ করে কণ্ঠশিল্পী লিখেছেন, ‘বছর দশেক আগে আমার বাসার গৃহকর্মী বাসার দারোয়ান এর সাথে পালিয়ে যায়। গৃহকর্মীর পরিবার তাদের মেয়ে গুম হয়েছে অভিযোগ তুলে মোটা টাকা দাবি করে। আমি সরাসরি পুলিশের শরণাপন্ন হই এবং তাদের আন্তরিক সহযোগিতায় ঘন্টা দুয়েকের মাথায় পলাতক গৃহকর্মী তার প্রেমিকসহ উদ্ধার হয়।

পরে জানতে পারি, আমাকে ভয় দেখিয়ে টাকা আদায়ের চেষ্টা পূর্ব পরিকল্পিত! এ ঘটনার পরই আমার বাসায় কথা রেকর্ড হয় এমন সিসি ক্যামেরা সেটাপ করি।’

আরেকটি অভিজ্ঞতা শেয়ার করে ন্যান্সি লেখেন, ‘দু বছর আগে আমার ছোট্ট মেয়েটাকে দেখাশোনার জন্য এজেন্সি থেকে যে মেয়েটাকে এনেছিলাম সে তার বোনের সাথে মিলে আমার বিয়ের গয়না এবং জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার এর স্বর্ণপদক চুরি করে। থানায় অভিযোগ দায়ের করার পর উল্টো গৃহকর্মী আমার নামে নির্যাতনের অভিযোগ তোলার চেষ্টা করে। আমি সিসি ক্যামেরার বদৌলতে হয়রানির হাত থেকে বেঁচে যাই।’

ন্যান্সি আরও লেখেন, ‘বাসার রান্নার লোক যে কত জ্বালিয়েছে তার হিসেব নেই।

বেতনের বাইরে যতোই দেইনা কেন তাদের খুশি করা যায়না। মন চাইলে কাজে আসে, অন্যথায় আসেনা। গত বছর ফেব্রুয়ারী মাসে পুরো বাসার সিংহভাগ ফার্নিচার বদলাই। আগের সব আসবাব আমার বাসার রান্নার মহিলা ট্রাক ভর্তি করে নিয়ে যায়, আমিও ভাবলাম এবার হয়তো সে আর কাজে ফাঁকি দিবেনা। এতো বড় উপকারের ফলাফল হিসেবে কি পেলাম জানেন? তার চাহিদা এখন আর হাজারের ঘরে রইলো না, লাখের ঘরে চলে গেলো! বিগত জুলাই মাসে বিরক্ত হয়ে তাকে বিদায় করলাম।

আমার বাসার সব রান্না দশ মাস যাবৎ আমিই করি। আমার ঘরে এখন বাজার খরচ কমে গেছে, বাসি খাবার খাইনা বললেই চলে। স্বামী সন্তান ভাইও খুশি, তাদের রান্না করে খাইয়ে আমিও অনেক তৃপ্তি পাই। ঘরের কাজে সহযোগিতার জন্য একজন এখনো আছে। আসলে কিছু করার নেই। বিশেষ করে কর্মজীবী মায়েদের সন্তানের জন্য অপরিচিত একজনের ওপর ভরসা করতে হয়। প্রতিবার আশা করি এবারের গৃহকর্মী পরিবারের সদস্যর মত হবে। সে আশা কখনো পূরণ হয়, বেশিরভাগ সময় হয়না।’

সবশেষ, সংবাদকর্মীদের দায়িত্ব সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি লিখেছেন, ‘সংবাদমাধ্যম একটু সংবেদনশীল হোন। সব কিছুতে বাণিজ্য দেখবেন না। নির্যাতিতার পরিচয় গৃহকর্মীও হতে পারে আবার গৃহকর্ত্রীও হতে পারে। সত্যিকারের ভুক্তভোগীর পাশে দাঁড়ান। পরীমনির মত এমন আরও তারকাদের ঘাড়ে ভর করে আর কত শিরোনাম বেচবেন বলুন! আপনাদেরও নিশ্চই কিছু দায় আছে, তাইনা?’

এমটিআই

Link copied!