বরগুনায় বৃষ্টি ও শীতে বিপাকে সাধারণ মানুষ, কৃষকের মনে শঙ্কা

  • বরগুনা প্রতিনিধি :  | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: ডিসেম্বর ২১, ২০২৪, ০৪:৩৬ পিএম
বরগুনায় বৃষ্টি ও শীতে বিপাকে সাধারণ মানুষ, কৃষকের মনে শঙ্কা

বরগুনা: গভীর বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট সুস্পষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে বরগুনা জেলায় ভোর রাত থেকেই গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। বৃষ্টি ও কনকনে শীতে জেলার সাধারণ মানুষ পড়েছে বিপাকে, যেন জবুথবু হয়ে আছে। বিশেষ করে নিম্ম আয়ের শ্রমিকের মিলছে না কোন কাজ। এমন বৈরী আবহাওয়ায় শঙ্কিত হয়ে পড়েছে কৃষক। আবহাওয়ার দ্রুত উন্নতি না হলে নষ্ট হতে পারে লক্ষ লক্ষ টন ক্ষেতের পাকা ধান।

প্রস্তুতকৃত কাঁচা ইট যাতে বৃষ্টির কারণে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় এবং তলিয়ে না যায় এজন্য ইট ভাটার মালিকেরাও রয়েছেন দুশ্চিন্তায়। 

দক্ষিণ পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত সুস্পষ্ট লঘুচাপটি ঘনীভূত হয়ে নিম্নচাপে পরিণত হওয়ায় বরগুনার উপকূল জুড়ে সারাদিন বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। সকালে ঘন কুয়াশা, বৃষ্টি ও কনকনে শীতে সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষের কর্মে আসলেও অনেকরেই ফিরতে হয়েছে খালি হাতে। শহরের পৌর মার্কেটের পূর্ব পাশে নিম্ম আয়ের দিন মজুরের বাজারে কয়েকজন শ্রমিকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বৃষ্টির কারণে আজ তেমন কেউ তাদের কাজে নেয়নি। বেলা অনেক হয়ে গেছে আজ আর কাজ মিলবে না বলে মনে হচ্ছে। কাজ না পেয়ে খালি হাতে বাড়ি ফিরে যেতে হবে। 

কামাল নামের এক দিনমজুর বলেন, দুই-তিনদিন এমন আবহাওয়া থাকলে তাদের না খেয়ে থাকতে হবে।

এবছর বরগুনা জেলায় আমন মৌসুমে এক লক্ষ একশত বিরানব্বই হাজার জমিতে ধান চাষাবাদ হয়েছে। জেলার সর্বত্র শোভা পাচ্ছে বিস্তৃত পাকা ধান ক্ষেত। আবহাওয়া জনিত কারণে বরগুনায় আমন মৌসুমের ফলন দেরীতে হওয়ায় এবছর ধান তুলতেও হচ্ছে দেরী এমনটাই বললেন কড়ইতলার কৃষক ফরিদ উদ্দিন, কামাল হোসেন ও হাবিবুর রহমান। 

তারা বলেন, ধানের ফলন ভালো হয়েছে কিন্তু এখন সেই ধান কেটে ঘরে নিবো তার জন্য শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। মেশিন দিয়ে কাটাবো মিলছে না ধান কাটা মেশিন। বৃষ্টি বেশি হলে অনেক ক্ষতি হয়ে যাবে  পাকা ধানের।

এবার জেলায় বাম্পার ফলন হয়েছে বলে বরগুনা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে। এব্যাপারে ড. জোবায়েদুল আলম বলেন, বৈরী আবহাওয়া ক্ষেতের পাকা ধানের ক্ষতির সম্ভাবনা হতে পারে। ভারি বৃষ্টিপাত সৃষ্টি হলে কৃষকরা ক্ষতির সম্মুখীন হবে। তবে এই মুহূর্তে বরগুনায় সেই রকমের দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া বিরাজ করছে না। যদি পঞ্চাশ মিলি লিটারের বেশি বৃষ্টিপাত হয় তাহলে শষ্যের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এজন্য আমাদের বিভাগ থেকে আবহাওয়ার সতর্কবার্তা পেয়ে কৃষকদের ধানকাটার পরামর্শ আগে থেকেই দেয়া হয়েছে। এসময়ে যারা তরমুজ ও আলু চাষাবাদ করছে সে সকল চাষীদের মধ্যে আবহাওয়া বার্তা জানিয়ে দেয়া হয়েছে। তারা যেন তরমুজ বা আলু ক্ষেতে সেচ প্রদান না করে তারও পরামর্শ প্রদান করা হয়েছে। 

বরগুনা ইট প্রস্ততকারক কয়েকজন মালিকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বৃষ্টি বৃদ্ধি পেলে তাদের ভাটায় যাতে পানি না জমে সে ব্যবস্থা গ্রহণ করে রেখেছে তারা। এছাড়া তাদের তৈরি কৃত কাঁচা ইটের স্তুপ ঢেকে রাখার প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে। 

বরগুনা জেলা ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি আলহাজ্ব গোলাম মোস্তফা চৌধুরীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের কারণ সমুদ্রে মাছ ধরা ট্রলার মালিকদের উপকূলের কাছাকাছি থেকে মাছ ধরতে পরামর্শ প্রদান করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত কোন রকমের ক্ষয়ক্ষতির সংবাদ পাওয়া যায়নি। সকলকে আবহাওয়া বার্তা মেনে চলারও পরামর্শ প্রদান করা হয়েছে। 

আইএ

Link copied!